এখন ফেইসবুক পেইজের দায় নিচ্ছেন না আরেফিন সিদ্দিক

দুই বছর আগে কেক কেটে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের অফিসিয়াল ফেইসবুক পেইজ উদ্বোধন করলেও একটি পোস্ট নিয়ে সমালোচনার মুখে এখন তার দায় নিচ্ছেন না উপাচার্য অধ্যাপক আ আ ম স আরেফিন সিদ্দিক।

নিজস্ব প্রতিবেদকবিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকম
Published : 4 March 2017, 06:29 PM
Updated : 4 March 2017, 09:12 PM

শনিবার বিশ্ববিদ্যালয়ের ৫০তম সমাবর্তন উপলক্ষে ওই ফেইসবুক পাতায় যে শুভেচ্ছা বার্তা দেওয়া হয়, তা নিয়ে ব্যাপক সমালোচনা ‍ওঠে সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে। সমালোচনার মধ্যে তাতে কয়েকবার পরিবর্তন আনা হয়। সরানো হয় মুহাম্মদ ইউনূসের নাম, যে নামটি জাতির জনক বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের নামের আগে দেওয়া হয়েছিল।

এ বিষয়ে বক্তব্য জানতে রাতে আরেফিন সিদ্দিককে ফোন করা হলে তিনি বিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকমকে বলেন, “ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের অফিসিয়াল কোনো ফেইসবুক পেইজ নেই।” উপ-উপাচার্য (প্রশাসন) অধ্যাপক আখতারুজ্জামানও একই কথা বলেন।

পরের বছর পাতাটি ভেরিফাইড হলে কেক কেটে তা উদযাপন করেন আরেফিন সিদ্দিক

তবে ২০১৪ সালের ১৩ নভেম্বর এক অনুষ্ঠানে কেক কেটে বিশ্ববিদ্যালয়ের অফিসিয়াল ফেইসবুক পাতাটি উদ্বোধন করেছিলেন উপাচার্য আরেফিন সিদ্দিক। পরের বছর ২০১৫ সালের ১২ সেপ্টেম্বর পাতাটিকে ফেইসবুক কর্তৃপক্ষ স্বীকৃতি দিলে (ভেরিফাইড) কেক কেটে তা উদযাপনের মধ্যমনিও ছিলেন তিনি।

আরেফিন সিদ্দিক বিশ্ববিদ্যালয়ের যে বিভাগের শিক্ষক, সেই গণযোগাযোগ ও সাংবাদিকতা বিভাগের বর্তমান চেয়ারপারসন অধ্যাপক মফিজুর রহমান জানান, বিশ্ববিদ্যালয়ের ভেরিফাইড ফেইসবুক পাতাটি ডিইউটাইমজ ডটকম (dutimz.com) নামে একটি অনলাইন নিউজ পোর্টাল কর্তৃপক্ষ পরিচালনা করে। এই পোর্টালের মডারেটরও তিনি।

ব্যস্ততার কারণে শুক্রবারের ওই পোস্টটি তিনি দেখতে পারেননি দাবি করে অধ্যাপক মফিজুর বিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকমকে বলেন, “ডিইউটাইমজের প্রেসিডেন্ট-সেক্রেটারি এবং একটি অ্যাডমিন গ্রুপ আছে। মূলত তারাই পেইজটি চালায়।

সমাবর্তনের শুভেচ্ছা বার্তাটি প্রথমে ছিল এমন

“অ্যাডমিন কারা এটা প্রেসিডেন্ট-সেক্রেটারি ঠিক করে। এ নিয়ে ওদের সঙ্গে আমরা বসব। কীভাবে কী হল, জানব।”

এ বিষয়ে কথা বলতে ডিইউটাইমজের সভাপতি সোহাগের মোবাইলে অনেকবার কল করে ও এসএমএস পাঠিয়েও সাড়া পাওয়া যায়নি।

বাংলাদেশে উচ্চ শিক্ষার সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ বিদ্যাপীঠ ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের ফেইসবুকে সমাবর্তনের শুভেচ্ছার গড়বড়ে উপাচার্য আরেফিন সিদ্দিকের সমালোচনা করেন অনেকে।

প্রথমে ফেইসবুকে দেওয়া শুভেচ্ছা বার্তায় বিশ্ববিদ্যালয়ের ইতিহাস তুলে ধরে বলা হয়, “আমরা গর্বিত হয়েছি স্যার জগদীশ চন্দ্র বসু, রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর, অমর্ত্য সেনের মত বুদ্ধিজীবীদের সম্মানসূচক ডক্টরেটে ভূষিত করতে পেরে। গর্বিত হয়েছি ড. মুহাম্মদ ইউনূস, সত্যেন বসু, বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের মতো ছাত্রদের ধারণ করতে পেরে।”

এই বার্তা দেখে অনেকেই সমালোচনামুখর হন সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে। বিশ্ববিদ্যালয়ের ফেইসবুক পাতায়ই অনেকে লেখেন।

সমাবর্তনের শুভেচ্ছা বার্তা সংশোধনের পর এখন রয়েছে এমন

বঙ্গবন্ধুর নামের আগে জাতির জনক না লেখা, তার নাম পরে লেখা নিয়ে সমালোচনা শুরু হয়। এ প্রসঙ্গে অনেকে গত বছর বিশ্ববিদ্যালয়ের স্মরণিকায় জিয়াউর রহমানকে ‘প্রথম রাষ্ট্রপতি’ লেখার বিষয়টিও তুলে আনেন।

একজন লেখেন- “পেজটা জামাতিরা চালায় মনে হচ্ছে!!!এখুনি খুঁজে বের করা উচিত।”

ব্যাপক সমালোচনার পর ওই শুভেচ্ছা বার্তাটি কয়েক দফা পরিবর্তন করা হয়।

এ নিয়ে একজন লিখেছেন- “তিনবার এডিট এবং ডঃ ইউনুস হাওয়া?????”

শুভেচ্ছা বার্তার ওই অংশটি শেষে রাখা হয় এভাবে- “আমরা গর্বিত হয়েছি স্যার জগদীশ চন্দ্র বসু, রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর, অমর্ত্য সেনের মত বুদ্ধিজীবীদের সম্মানসূচক ডক্টরেটে ভূষিত করতে পেরে। গর্বিত হয়েছি জাতির জনক বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান, শামসুর রাহমানের মত ছাত্র; সত্যেন বসুদের মত শিক্ষকদের ধারণ করতে পেরে।”