দেশের রপ্তানি আয়ের প্রধান খাত তৈরি পোশাক শিল্প মালিকদের সংগঠন বিজিএমইএ চলমান রাজনৈতিক অস্থিরতায় গভীর উদ্বেগ প্রকাশ করেছে।
Published : 08 Jan 2015, 09:37 PM
বৃহস্পতিবার সংগঠনের এক বিবৃতিতে বলা হয়, চলমান রাজনৈতিক অস্থিরতায় রপ্তানিমুখী তৈরী পোশাক শিল্পে গভীর উদ্বেগের সৃষ্টি হয়েছে। গত ৯ দিনের মধ্যে ২ দিন হরতাল এবং ৬ জানুয়ারি থেকে টানা অবরোধ থাকায় উদ্যোক্তাদের মধ্যে গভীর হতাশার সৃষ্টি হয়েছে।
বিবৃতিতে জাতীয় অর্থনীতি তথা পোশাক শিল্পের স্বার্থে রাজনৈতিক কর্মসূচির নামে হরতাল-অবরোধ পরিহার করে বিকল্প কর্মসূচি খুঁজে বের করতে রাজনৈতিক দলগুলোকে অনুরোধ জানানো হয়।
বিবৃতিতে বলা হয়, “তৈরি পোশাক শিল্প এবং পোশাক শিল্পের সকল আমদানি ও রপ্তানি পণ্যকে অবরোধমুক্ত রাখার জন্য বিজিএমইএ রাজনৈতিক দলগুলোকে অনুরোধ জানাচ্ছে। বিশেষ করে কোন রাজনৈতিক কর্মসূচি চলাকালে ঢাকা-চট্টগ্রাম এবং ঢাকা-বেনাপোল মহাসড়ক যাতে পোশাক শিল্পের সরবরাহ লাইন অব্যাহত রাখা হয়, সে ব্যাপারে বিজিএমইএ রাজনৈতিক দলগুলোকে অনুরোধ জানাচ্ছে।
“তৈরি পোশাক শিল্প এখন একটি অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ সময় অতিক্রম করছে। রানা প্লাজা ধসের পর কারখানাগুলো কর্মপরিবেশের উন্নয়নে সংস্কার কাজ করে যাচ্ছে। একটি ইতিবাচক বার্তা ক্রেতাদের কাছে পৌঁছেছে। ফলশ্রুতিতে, বাংলাদেশের রপ্তানিকারকদের উপর ক্রেতাদের আস্থা পুনরায় বাড়ছে এবং কারখানাগুলোও বিগত দিনগুলোর তুলনায় বেশি বেশি রপ্তানি অর্ডার পাওয়া শুরু করেছে।”
এই পরিস্থিতিতে রাজনৈতিক অস্থিরতা চলতে থাকলে আবারও ক্রেতাদের মধ্যে অনিশ্চয়তা সৃষ্টি হবে এবং তারা বাংলাদেশে আসতে নিরুৎসাহিত হবেন বলে বিবৃতিতে আশঙ্কা প্রকাশ করা হয়েছে।
“যদিও পোশাক শিল্প হরতালের আওতামুক্ত। তবে এ শিল্পে বাস্তবতা হচ্ছে যে, একটি অর্ডার সম্পন্ন করতে হলে সহযোগী বিভিন্ন শিল্প-প্রতিষ্ঠান যেমন-বস্ত্র কারখানা, এক্সেসরিজ, ওয়াশিং, ডাইং, প্রিন্টিং, প্যাকেজিং প্রভৃতির সাথে প্রতিনিয়ত যোগাযোগ রক্ষা করতে হয়। তাই যে কোনো সামান্য প্রতিবন্ধকতা সৃষ্টিকারী কার্যক্রমই এ শিল্পের স্বাভাবিক কার্যক্রমকে বিঘ্নিত করে, সাপ্লাই চেইন ব্যাহত হয়।”
এক দিনের হরতালে পোশাক শিল্পে প্রায় ২৫০ কোটি টাকার ক্ষতি হয় এবং উৎপাদন ৩০ থেকে ৩৫ শতাংশ কম হয় জানিয়ে বিবৃতিতে বলা হয়, “এক ঘণ্টা বিলম্বের জন্য যদি তৈরি পোশাক জাহাজীকরণ করা সম্ভব না হয় সেক্ষেত্রে রপ্তানি কার্যক্রমে অতিরিক্ত ঝুঁকি বাড়ে। অর্ডার বাতিলও হয়ে যেতে পারে।”
বিবৃতিতে বলা হয়, “বর্তমানে বাংলাদেশ একটি স্থিতিশীল অর্থনৈতিক ও কর্মসংস্থান প্রবৃদ্ধি বজায় রাখছে। এই ধারাবাহিকতা বজায় রাখার জন্য একটি স্থিতিশীল রাজনৈতিক পরিবেশ বজায় থাকা দরকার, যা প্রকারান্তরে জাতীয় আর্থ-সামাজিক উন্নয়নে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখবে।”
এ অবস্থায় সংঘাতমূলক রাজনীতি পরিহার করে আলোচনার মাধ্যমে রাজনৈতিক সমস্যার সমাধান করতে রাজনৈতিক দলগুলোর প্রতি অনুরোধ জানানো হয়।