পুঁজিবাজার থেকে অর্থ সংগ্রহের প্রস্তাবে লাভ ‘ফুলিয়ে-ফাঁপিয়ে দেখানো’সহ খুলনা প্রিন্টিং অ্যান্ড প্যাকেজিং লিমিটেডের (কেপিপিএল) বিরুদ্ধে যে সব অভিযোগ গণমাধ্যমে এসেছে, তার ব্যাখ্যা আদালতে দিতে হবে কোম্পাটিকে।
Published : 21 May 2014, 03:58 PM
আগামী ২৭ মের মধ্যে এই ব্যাখ্যা দিতে বুধবার বিচারপতি মির্জা হোসেইন হায়দার ও বিচারপতি খুরশীদ আলম সরকারের হাই কোর্ট কেপিপিএলকে এই আদেশ দিয়েছে।
কেপিপিএলের বিরুদ্ধে রিট আবেদনে গত ৭ মে আদালতের প্রাথমিক আদেশেও এই ধরনের নির্দেশনা ছিল, যা বাস্তবায়নে এক সপ্তাহ সময় দেয়া হয় প্রতিষ্ঠানটির ব্যবস্থাপনা পরিচালককে।
ওই নির্দেশনা বাস্তবায়ন না করে তার পক্ষে আইনজীবী এম কে রহমান সময় চান। এরপর নতুন করে এই আদেশ দেয়া হয় বলে রিট আবেদনকারীর অন্যতম আইনজীবী কাজী মো. আরিফুর রহমান বিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকমকে জানিয়েছেন।
ওই আবেদনের প্রাথমিক শুনানি করে গত ৭ মে হাই কোর্টের এই বেঞ্চ এই কোম্পানির আইপিও সংক্রান্ত সব কার্যক্রম স্থগিতের নির্দেশ দিয়েছিল। পরদিন এই অংশটি স্থগিত করে দেয় আপিল বিভাগ।
হাই কোর্ট ক্ষুদ্র বিনিয়োগকারীদের থেকে খুলনা প্রিন্টিং অ্যান্ড প্যাকেজিং লিমিটেডের আইপিও আবেদন সংগ্রহে পরবর্তী কার্যক্রম বন্ধে প্রয়োজনীয় পদক্ষেপ গ্রহণে কেন নির্দেশনা দেয়া হবে না, রুলে তা জানাতে বলে।
অর্থ সচিব, এসইসির চেয়ারম্যান, খুলনা প্রিন্টিং অ্যান্ড প্যাকেজিং লিমিটেডের ব্যবস্থাপনা পরিচালক, সোনালী ব্যাংকের সহযোগী প্রতিষ্ঠান সোনালী ইনভেস্টমেন্ট লিমিটেডের ইস্যু ব্যবস্থাপককে রুলের জবাব দিতে বলা হয়েছে।
কেপিপিএল তাদের আইপিওর ঘোষণাপত্রে কোম্পানির ব্যাপক মুনাফা হওয়ার কথা তুলে ধরার পর তা নিয়ে অনুসন্ধান চালায় বিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকম।
তাদের দাবির সঙ্গে কোম্পানির আকার ও বাজারের বাস্তবতার কোনো মিল খুঁজে পাওয়া না যাওয়ার পর তা নিয়ে গত ২৪ এপ্রিল সংবাদও প্রকাশ করা হয়।
এরপর অন্য সংবাদ মাধ্যমেও এই বিষয়টি আলোচনায় আসে। তার ওপর ভিত্তি করে হাই কোর্টে রিট আবেদনটি করা হয়।
সন্দেহ তৈরি হয়, এ রকম কোনো তথ্য প্রকাশ না করার বিধান থাকলেও প্রাথমিক গণপ্রস্তাব বা আইপিও বিবরণীতে মিথ্যা তথ্য দিয়ে কেপিপিএলের ৪০ কোটি টাকা তুলে নেয়া ঠেকাতে জনস্বার্থে এই রিট আবেদনটি করেন সুপ্রিম কোর্টের আইনজীবী মো. রায়হানুল মোস্তফা।
আদালতে আবেদনকারী পক্ষে শুনানি করেন মো. জিয়াউর রহমান ও কাজী মো. আরিফুর রহমান।
প্রাথমিক আদেশের দিন আরিফুর রহমান বিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকমকে বলেন, আইপিওর ৪০ কোটি টাকা তুলতে প্রকাশিত কোম্পানিটির বিবরণীপত্র বা প্রসপেক্টাসে মিথ্যা তথ্য দেয়া হয়েছে। এখানে কেন্দ্রীয় কার্যালয় ও চার পরিচালকের স্থায়ী নিবাসের একটি ঠিকানা দেয়া হয়েছে, যেটি মূলত একটি আবাসিক হোটেল।
চলতি বছরের ৪ মার্চ বাজার থেকে ৪০ কোটি টাকার পুঁজি সংগ্রহের জন্য ৪ কোটি শেয়ার ছাড়তে বাংলাদেশে সিকিউরিটিজ অ্যান্ড এক্সচেঞ্জ কমিশনের (বিএসইসি) কাছ থেকে অনুমতি পায় কেপিপিএল।
তাদের আইপিওর ঘোষণাপত্রে দেখা যায়, ২০০৯-১০ অর্থবছরে কেপিপিএলের আয় ছিল ৩৪ কোটি টাকা। কিন্তু পরের বছরেই মুনাফা আকাশচুম্বী হয়ে প্রায় আড়াইশ ভাগ বেড়ে ১১৯ কোটি টাকা হয়।
কেপিপিএল দাবি করে, তাদের প্যাকেজিং পণ্যের বিক্রি বেড়ে ২০০ কোটি টাকা হয়েছে। তবে তাদের এই দাবির সঙ্গে ভিন্নমত পোষণ করেন একই খাতের ব্যবসায়ীরা।