বিদেশি বিনিয়োগ আকৃষ্ট করা ও প্রতিযোগিতামূলক বাজার নিশ্চিত করার বিধান রেখে মোবাইল ফোন খাতের টাওয়ার ব্যবসার লাইসেন্স নীতিমালা চূড়ান্ত করার পক্ষে মত দিয়েছেন ডাক ও টেলিযোগাযোগ প্রতিমন্ত্রী তারানা হালিম।
Published : 30 Apr 2016, 07:28 PM
পাশাপাশি সাধারণ ভোক্তাদের কথা চিন্তা করে তাদের স্বার্থে টাওয়ার ভাগভাগির খরচ কম করে ধরার উপর কথা বলেছেন।
টেলিযোগাযোগ খাতের প্রতিবেদকদের সংগঠন টেলিকম রিপোর্টার্স নেটওয়ার্ক বাংলাদেশের আয়োজনে রাজধানীতে শনিবার ‘বাংলাদেশে টাওয়ার ব্যবসায় সম্ভবনা’ বিষয়ে সেমিনারে এসব মত তুলে ধরেন তিনি।
তারানা হালিম বলেন, “যে গাইড লাইনটি তৈরি করা হচ্ছে- আমি ব্যক্তিগতভাবে মনে করি, ফরেন ইনভেস্টমেন্ট ইনকারেজ করা উচিৎ, সেই সঙ্গে আরো কয়েকটি বিষয় নিশ্চিত করতে চাই- এটি যেন প্রতিযোগিতামূলক হয়, মনোপলি সৃষ্টি না করে, সবার জন্য যেন লেভেল প্লেয়িং ফিল্ড তৈরি হয়।
টাওয়ার ভাগাভাগি ব্যবসার ক্ষেত্রে বিভিন্ন দেশে প্রচলিত মডেলগুলো থেকে বাংলাদেশের আর্থ-সামাজিক অবস্থা বিবেচনা করে যেকোনো একটি মডেল গ্রহণ করা হবে বলে জানান প্রতিমন্ত্রী।
মোবাইল ফোনের নেটওয়ার্ক উন্নয়নে টাওয়ারগুলোর মধ্যে সুষ্ঠু সমন্বয়ের উপর জোর দেন দিয়ে তারানা বলেন, টাওয়ার ব্যবসার ক্ষেত্রে পুরনো ও নতুনদের মধ্যে ‘লেভেল প্লেয়িং ফিল্ড’ থাকবে কি না তা বিবেচনা করা হবে।
সেমিনারে টেলিযোগাযোগ নিয়ন্ত্রক সংস্থা বিটিআরসি প্রধান শাহজাহান মাহমুদ বলেন, “বিটিআরসি বিনিয়োগ উৎসাহিত করছে এবং বিনিয়োগ নিশ্চিত করতে চাই। কেউ যেন বাজারকে নিয়ন্ত্রণ করতে না পারে তা বিবেচনা করেই এই খাতে লাইসেন্স দেওয়া হবে।
“বাজারের দাবি অনুযায়ী লাইসেন্স দেওয়া হবে। যেখানে ২৪ হাজার টাওয়ার হওয়ার কথা ছিল, সেখানে দেশে ৩৬ হাজার টাওয়ার হয়েছে। সামনে ফোর-জি প্রযুক্তি চালু হলে আরো টাওয়ার হবে। তবে এই টাওয়ারগুলো মধ্যে কোন শেয়ারিং নেই।”
গ্রামীণফোনের চিফ করপোরেট অ্যাফেয়ার্স অফিসার মাহমুদ হোসেন বলেন, “এখানে মার্কেট ওপেন থাকা উচিত যাতে আগামীতে টাওয়ার স্থাপনে কোনো বাধা না থাকে। কারণ যেখানে টাওয়ার কোম্পানি বা অন্যরা নেটওয়ার্ক স্থাপনে যাবে না, সেখানে অপারেটরদের টাওয়ার স্থাপন করার বিষয়টিও বিবেচনায় রাখতে হবে।”
রবির নির্বাহী ভাইস প্রেসিডেন্ট শাহেদ আলম বলেন, “মার্কেট বিবেচনা করে টাওয়ার কোম্পানির বিষয়টি বিবেচনা করা উচিত। এখানে সংখ্যা নির্ধারণ করে দেওয়া ঠিক হবে না এবং লাইসেন্স দিলে যোগ্য ও অভিজ্ঞদের লাইসেন্স নিশ্চিত করতে হবে।”
ডাক ও টেলিযোগাযোগ বিভাগের অতিরিক্ত সচিব শওকত মোস্তফা বলেন, “অপারেটর ও অন্যান্য স্টেকহোল্ডারদের সাথে আলোচনা করেই টাওয়ার শেয়ারিং লাইসেন্স নীতিমালা চূড়ান্ত করা হবে।”
বিটিআরসির সিস্টেম অ্যান্ড সার্ভিসেস বিভাগের মহাপরিচালক ব্রিগেডিয়ার জেনারেল এমদাদ উল বারী, অ্যাসোসিয়েশন অব মোবাইল টেলিকম অপারেটরস অব বাংলাদেশের (অ্যামটব) মহাসচিব টিআইএম নুরুল কবির, বাংলালিংকের সিনিয়র ডিরেক্টর অব জিআর অ্যান্ড রেগুলেটরি অ্যাফেয়ার্স তৈমুর রহমান, ফাইবার অ্যাট হোমের ব্যবস্থাপনা পরিচালক মঈনুল হক সিদ্দিকী বক্তব্য রাখেন।
এর মধ্যে বিটিআরসি জানিয়েছে, টাওয়ার শেয়ার নীতিমালা চূড়ান্ত হওয়ার পর নিলাম হবে। নিলামের শর্তে থাকবে, অপারেটররা কেউ এই নিলামে অংশ নিতে পারবে না, নতুন কেউ আসবে।
“এটি আলাদা কোম্পানি হবে; অপারেটরদের টাওয়ার এদের কাছে লিজ বা বিক্রি করা হবে পারস্পরিক সমঝোতায়। অপারেটররা ইচ্ছা করলেই পারস্পরিক টাওয়ার শেয়ার করতে পারবে না, থার্ড পার্টি বা টাওয়ার কোম্পানি তা করবে।”
ইডটকো নামে একটি প্রতিষ্ঠান সরকার থেকে (এনওসি) অনুমতি নিয়ে বর্তমানে টাওয়ার ব্যবসা পরিচালনা করে আসছে।
এ প্রক্রিয়ায় দুটি প্রতিষ্ঠানকে লাইসেন্স দেওয়ার প্রস্তাব রয়েছে বিটিআরসির।