নমিনি যিনিই হন, সঞ্চয়পত্রের মালিক মারা গেলে তিনি সেই অর্থের মালিক হবেন না; প্রয়াতের সেই অর্থের মালিক হবেন তার উত্তরাধিকাররা।
Published : 04 Apr 2016, 01:13 AM
মৃত এক ব্যক্তির সঞ্চয়পত্রের মালিকানা নিয়ে তার দ্বিতীয় স্ত্রীর সঙ্গে প্রথম স্ত্রীর সন্তানদের মালিকানার দ্বন্দ্ব নিষ্পত্তি করে রোববার এই রায় দিয়েছে হাই কোর্ট।
শহীদুল হক খান চৌধুরী নামে এক ব্যক্তির মৃত্যুর পর তার ৩০ লাখ টাকার সঞ্চয়পত্রের মালিকানা নিয়ে বিরোধ দেখা দিলে বিষয়টি আদালতে গড়ায়।
শহীদুল তার সঞ্চয়পত্রের নমিনি করেছিলেন দ্বিতীয় স্ত্রীকে। তার মৃত্যুর পর প্রথম স্ত্রীর ছেলে মনজুরুল হক চৌধুরী সঞ্চয়পত্রের টাকার অংশীদার হতে নিম্ন আদালতে সাকসেশন সার্টিফিকেট মামলা করেন।
নিম্ন আদালত নমিনি হিসেবে দ্বিতীয় স্ত্রীর প্রাপ্যতার অধিকারের স্বীকৃতি দিয়ে সাকসেশন মামলাটি খারিজ করে দিলে মনজুরুল ও তার দুই বোন আপিল করেন।
২০১৫ সালের জুনে আপিলও খারিজ হয়ে গেলে প্রয়াত শহীদুলের প্রথম স্ত্রীর ছেলে ও দুই মেয়ে হাই কোর্টে সিভিল রিভিশন আবেদন করেন। এ আবেদনের শুনানি নিয়ে গত বছরের ১৫ জুন হাই কোর্ট রুল দেয়।
এই রুলের ওপর চূড়ান্ত শুনানি শেষে রোববার আদালত রুল যথাযথ (অ্যাবসলিউট) ঘোষণা করে রায় দেয় বিচারপতি নাইমা হায়দার ও বিচারপতি খিজির আহমেদ চৌধুরীর বেঞ্চ।
আদালতে রিভিশন আবেদনকারীর পক্ষে শুনানি করেন জ্যেষ্ঠ আইনজীবী এম আই ফারুকী, সঙ্গে ছিলেন সাদেকুর রহমান ও নাজনীন নাহার। অন্যপক্ষে (মৃত ব্যক্তির দ্বিতীয় স্ত্রী) ছিলেন আইনজীবী বি এম ইলিয়াস কচি ও মাকসুদুল ইসলাম।
রায়ের পর আইনজীবী নাজনীন বিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকমকে বলেন, “সঞ্চয়পত্রের মালিকের নমিনি ট্রাস্টি হিসেবে থাকবে, মালিক মারা গেলে নমিনি ওই অর্থ উত্তোলনের অধিকারী হবেন ও উত্তরাধিকার আইন অনুসারে মৃত ব্যক্তির সাকসেসরদের (উত্তরাধিকারী) মধ্যে তা বণ্টন করবেন।”
নমিনি যদি উত্তরাধিকারী হন, তবে তিনি ওই অর্থের মালিকানা পাবেন বলে রায় দিয়েছে আদালত; অন্যত্থায় নয়।
প্রচলিত আইনে নমিনি ও উত্তরাধিকারী বিষয়ে স্পষ্ট বলা রয়েছে জানিয়ে অ্যাডভোকেট নাজনীন বলেন, “প্রচলিত ধারণা, নমিনিই সঞ্চয়পত্রের অর্থের মালিকানা পাবে। হাই কোর্টের রায়ের ফলে এখন বিষয়টি আরও স্পষ্ট হল।”