চট্টগ্রাম জেনারেল হাসপাতালে মঙ্গলবার ৩৩ জন এবং বুধবার ২৯ জন চিকিৎসা নেন। এছাড়া নগরীর সদরঘাট এলাকায় চট্টগ্রাম সিটি করপোরেশন (সিসিসি) পরিচালিত মেমন-২ হাসপাতালের জলাতঙ্ক নিয়ন্ত্রণ কেন্দ্রেও বুধবার ১০ জনের মতো নতুন রোগী এসেছেন।
জেনারেল হাসপাতালের জরুরি বিভাগের চিকিৎসক ডা. ধৃতিমান পাল বিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকমকে বলেন, সাধারণত বছরের এ সময় দৈনিক ১০ থেকে ১৫ জন কুকুরের কামড়ে আহত হয়ে চিকিৎসা নিতে আসেন।
তবে মঙ্গলবার থেকে রোগীর সংখ্যা অস্বাভাবিক হারে বেড়ে গেছে। মঙ্গলবার ৩৩ জন এবং বুধবার বিকাল ৩টা পর্যন্ত ২৯ জন রোগী হাসপাতালে এসেছেন।
“আজ যারা এসেছেন তাদের মধ্যে ১৯ জন ক্যাটগরি-৩ (মারাত্মক জখম) এর।”
নগরীর সদরঘাট, চান্দগাঁও, বায়েজিদ, নন্দনকানন, উত্তর নালা পাড়া, রহমান নগর, তিন পোল, কর্নেল হাট, পূর্ব মাদারবাড়ি, বিআরটিসি ও খাতুনগঞ্জ এলাকা থেকে কুকুরের কামড়ে আহত ব্যক্তিরা চিকিৎসা নিতে আসেন বুধবার।
এছাড়া পটিয়া, বোয়ালখালী ও সাতকানিয়া উপজেলা থেকেও রোগী এসেছেন।
দুপুরে জেনারেল হাসপাতালের জরুরি বিভাগে কথা হয় কুকুরের কামড়ে আহত মোখলেস মিয়ার (৪৬) সঙ্গে।
তিনি বিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকমকে বলেন, “গত রাত ১০টার দিকে খাতুনগঞ্জ পোড়া ভিটা এলাকা দিয়ে হেঁটে যাওয়ার সময় একটি কুকুর হঠাৎ আমার বা হাটুতে কামড়ে দেয়।”
এদিকে কুকুরের কামড়ে আক্রান্ত রোগীরা চিকিৎসা নিতে এলেও জেনারেল হাসপাতালে এন্টি রেবিস (জলাতঙ্ক) প্রতিষেধক ‘রেবিপুর’র মজুদ ফুরিয়ে গেছে।
ডা. ধৃতিমান পাল বলেন, প্রতি মাসে গড়ে তিনশ থেকে সাড়ে তিনশ জন কুকুরের কামড়ে আক্রান্ত রোগীকে তাদের চিকিৎসা দিয়ে থাকেন। মাস শেষ হওয়ায় এবং হঠাৎ করে রোগী বেড়ে যাওয়ায় ভ্যাকসিন শেষ হয়ে গেছে।
“এন্টি রেবিস না থাকলেও ক্যাটাগরি-৩ এ আহতদের ভ্যাকসিন ‘ইআরআইজি’ পর্যাপ্ত পরিমাণে আছে।”
এদিকে নগরীর সদরঘাট এলাকায় চট্টগ্রাম সিটি করপোরেশন (সিসিসি) পরিচালিত মেমন-২ হাসপাতালের জলাতঙ্ক নিয়ন্ত্রণ কেন্দ্রে বুধবার ১৬ জন রোগী চিকিৎসা নিয়েছেন।
কেন্দ্রের চিকিৎসক ডা. আশীষ মুখার্জি বলেন, নতুন-পুরনো মিলিয়ে ১৬ জন টিকা নিয়েছেন। এর মধ্যে ৮ থেকে ১০ জন নতুন রোগী।
সিসিসির প্রধান স্বাস্থ্য কর্মকর্তা ডা. সেলিম আকতার চৌধুরী বলেন, সরকারের নির্দেশে কুকুর নিধন বন্ধ আছে। স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের আওতায় গত বছর কুকুরের ভ্যাকসিনেশন প্রোগ্রাম পরিচালিত হয়েছিল।
চট্টগ্রামের সিভিল সার্জন ডা. সরফরাজ খান বিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকমকে বলেন, এন্টি রেবিস টিকা আনতে ঢাকায় লোক পাঠানো হয়েছে। বৃহস্পতিবারই প্রয়োজনীয় টিকা চলে আসবে বলে আশা করা হচ্ছে।
“কুকুরের ভ্যাকসিনেশন স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের অধীনে পরিচালিত হয়। আমরা ও সিটি করপোরেশন এ কার্যক্রমে সহযোগিতা করে থাকি। এ বছর এ বিষয়ে এখনও কোনো নির্দেশনা পাইনি।”