প্রতিষ্ঠাবার্ষিকীতে ঢাবিতে রঙিন সাজে প্রাণের উচ্ছলতা

৯৪তম প্রতিষ্ঠাবার্ষিকী উপলক্ষে রঙিন সাজে সেজেছে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় ক্যাম্পাস।

তপন কান্তি রায়বিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকম
Published : 1 July 2015, 11:07 AM
Updated : 1 July 2015, 11:20 AM

‘উচ্চশিক্ষা ও টেকসই উন্নয়ন’ প্রতিপাদ্য নিয়ে এবারের প্রতিষ্ঠাবার্ষিকী পালন করছে বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষ। এ উপলক্ষে বুধবার ক্যাম্পাসে চলছে বর্ণাঢ্য নানা কর্মসূচি।

ক্যাম্পাসকে সাজানো হয়েছে মনোরম সাজে। বিশ্ববিদ্যালয়ের বিভিন্ন ভবন ও হলে আলোকসজ্জার পাশাপাশি বিভিন্ন বিভাগ ও ইনস্টিটিউটের বারান্দায় দেখা মিলছে বেলুন, ফেস্টুন আর নানা ধরনের আল্পনা।

নবীন-প্রবীণ শিক্ষার্থীদের পদচারণায় সকালেই মুখরিত হয়ে ওঠে ক্যাম্পাস।

প্রতিষ্ঠাবার্ষিকী উপলক্ষে আলোচনা সভা, শোভাযাত্রা, ‘গবেষণা ও আবিষ্কার’ বিষয়ক প্রদর্শনী, বিতর্ক, চিত্রাঙ্কন প্রতিযোগিতার পাশাপাশি আয়োজন করা হয়েছে সাংস্কৃতিক পরিবেশনার।

সকাল সোয়া ১০টায় প্রশাসনিক ভবন সংলগ্ন মল চত্বরে জাতীয় পতাকা, ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় ও হলসমূহের পতাকা উত্তোলন এবং উদ্বোধনী সংগীতের মধ্য দিয়ে বিশ্ববিদ্যালয়ে দিবসের কর্মসূচি শুরু হয়। প্রধানমন্ত্রীর আন্তর্জাতিক বিষয়ক উপদেষ্টা গওহর রিজভী দিনব্যাপী কর্মসূচির উদ্বোধন করেন।

প্রতিষ্ঠাবার্ষিকীর শোভাযাত্রার আগে বিভিন্ন হল থেকে মিছিল নিয়ে মল চত্বরে সমবেত হন শিক্ষক-শিক্ষার্থীরা

প্রতিষ্ঠাবার্ষিকীর শোভাযাত্রার আগে বিভিন্ন হল থেকে মিছিল নিয়ে মল চত্বরে সমবেত হন শিক্ষক-শিক্ষার্থীরা

এর আগে বিশ্ববিদ্যালয়েরর শিক্ষক-শিক্ষার্থী ও কর্মকর্তা-কর্মচারীরা বিভিন্ন হল থেকে শোভাযাত্রাসহ প্রশাসনিক ভবন সংলগ্ন মল চত্বরে সমবেত হন।

উদ্বোধনী অনুষ্ঠানের পর প্রধানমন্ত্রীর উপদেষ্টা গওহর রিজভী ও বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য আ আ ম স আরেফিন সিদ্দিকের নেতৃত্বে ক্যাম্পাসে বর্ণাঢ্য শোভাযাত্রা বের হয়।

বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষক, সিনেট-সিন্ডিকেট সদস্য, কর্মকর্তা, কর্মচারী, অভ্যাগত অতিথি, ছাত্র-ছাত্রী শোভাযাত্রায় অংশ নেন। শোভাযাত্রাটি বিশ্ববিদ্যালয়ে ছাত্র-শিক্ষক কেন্দ্রে (টিএসসি) গিয়ে শেষ হয়।

প্রতিষ্ঠাবার্ষিকীর উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে গওহর রিজভী বলেন, “ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় দেশের সেরা বিশ্ববিদ্যালয়-এতে কোনো সন্দেহ নেই। কিন্তু একবিংশ শতাব্দীতে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়কে দেশের পাশাপাশি গ্লোবাল সোসাইটিতেও নিজেদের অবস্থান করে নিতে হবে।”

তিনি বলেন, “এই গ্লোবাল সোসাইটিতে জায়গা করে নিতে হলে অবশ্যই বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীদের গ্লোবাল সিটিজেন প্রতিযোগিতার জন্য নিজেদের প্রস্তুত করতে হবে। এমনভাবে তাদের প্রশিক্ষণ দিতে হবে যাতে বিশ্বের বিভিন্ন বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীদের সাথে যেন তারা প্রতিযোগিতা করতে পারে, সে মনোবল থাকতে হবে।”

ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রতিষ্ঠাবার্ষিকীতে শোভাযাত্রায় শিক্ষক-শিক্ষার্থীরা

অক্সফোর্ড ও হার্ভার্ড বিশ্ববিদ্যালয়সহ যুক্তরাজ্য ও যুক্তরাষ্ট্রের বেশ কয়েকটি বিশ্ববিদ্যালয়ে শিক্ষকতা করে আসা গওহর রিজভী বলেন, “ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের গৌরবময় ইতিহাস রয়েছে। শিক্ষা, সংস্কৃতি, কবিতা, গান-বাজনা, রাজনীতি সবক্ষেত্রেই অসাধারণ অবদান ছিল এই বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীদের। মুক্তিযুদ্ধেও তাদের অসাধারণ অবদান ছিল।”

উপাচার্য অধ্যাপক আ আ ম স আরেফিন সিদ্দিক বলেন, “শিক্ষাই আলো, সেই আলোতে শুধু দেশ নয়, বিশ্বে সব অন্ধকার আলোকিত হবে। আমরা এই শিক্ষার মাধ্যমেই এগিয়ে যেতে চাই। আমরা চাই উন্নয়ন টেকসই হোক। আর উন্নয়ন টেকসই হওয়ার জন্য প্রয়োজন মানসম্মত শিক্ষা।”

দিবসটি পালন উপলক্ষে বিশ্ববিদ্যালয়ের সব অনুষদ, বিভাগ, ইনস্টিটিউট ও বিভিন্ন আবাসিক হলে দিনব্যাপী নানা আয়োজন করা হয়েছে।

এর মধ্যে বেলা ১১টায় টিএসসি মিলনায়তনে হয় আলোচনা সভা। সকাল ১০টা থেকে বিকাল ৪টা পর্যন্ত বিশ্ববিদ্যালয়ের কেন্দ্রীয় গ্রন্থাগারে ‘দুর্লভ পাণ্ডুলিপি প্রদর্শনী’ চলে।

সকাল ১০টা থেকে বিকাল সাড়ে ৩টা পর্যন্ত কার্জন হল ভবনের দক্ষিণ-পূর্ব বারান্দায় বায়োমেডিকেল ফিজিক্স অ্যান্ড টেকনোলজি বিভাগের উদ্ভাবিত চিকিৎসা প্রযুক্তির যন্ত্রপাতি ও গবেষণা কর্মের প্রদর্শনী চলে।

বেলা ১১টা থেকে চারুকলা অনুষদে শিশুদের চিত্রাঙ্কন প্রতিযোগিতা শুরু হয় এবং বিকাল ৩টা থেকে ৪টা পর্যন্ত চারুকলা অনুষদ গ্যালারিতে শিক্ষার্থীদের সৃজনশীল শিল্পকর্মের প্রদর্শনীর ব্যবস্থা করা হয়েছে।

বিকাল ৪টায় বিশ্ববিদ্যালয় নাটমণ্ডল মিলনায়তনে ‘স্বদেশী নকশা’ নাটক মঞ্চস্থ করে থিয়েটার অ্যান্ড পারফরমেন্স স্ট্যাডিজ বিভাগ।