স্ত্রী নির্যাতনের মামলায় গ্রেপ্তারের পর বেসরকারি টেলিভিশন স্টেশন গাজী টিভির বার্তা সম্পাদক রকিবুল ইসলাম মুকুলকে রিমান্ডে পেয়েছে পুলিশ।
Published : 27 Jun 2015, 02:35 PM
তার স্ত্রী নাজনীন আকতার তন্বীও একজন সাংবাদিক। তিনি দৈনিক জনকণ্ঠের জ্যেষ্ঠ প্রতিবেদক।
শুক্রবার মধ্যরাতে সেগুন বাগিচায় টিভি কার্যালয় থেকে বেরিয়ে বাসায় যাওয়ার পথে গাড়ি থামিয়ে মুকুলকে গ্রেপ্তার করা হয় বলে মিরপুর থানার এসআই মাসুদ পারভেজ জানিয়েছেন।
তিনি বিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকমকে বলেন, স্ত্রীর মামলায় মুকুলকে সাত দিনের রিমান্ড চেয়ে শনিবার আদালতে পাঠানো হয়।
শুনানির পর ঢাকার মহানগর হাকিম মুকুলকে পুলিশ হেফাজতে এক দিন জিজ্ঞাসাবাদের আদেশ দেন। মুকুলের পক্ষে জামিনের আবেদন হলেও তা নাকচ করেন হাকিম অমিত কুমার দে।
মুকুল ও তন্বীর এক সন্তান রয়েছে। দুই বছর আগে তাদের আরেক সন্তান চন্দ্রমুখী মারা যাওয়ার পর শোকে ছাদ থেকে লাফিয়ে পড়েছিলেন তন্বী।
শুক্রবার মিরপুর থানায় করা মামলায় তন্বী অভিযোগ করেছেন, এক ব্যাংকারের স্ত্রীর সঙ্গে সম্পর্কে জড়ানোর পর তার উপর নানা নির্যাতন চালিয়ে আসছিলেন মুকুল।
প্রথম সন্তান চন্দ্রমুখী অসুস্থ হওয়ার পর চিকিৎসার উদ্যোগও মুকুল নেয়নি বলে তার অভিযোগ।
“সব কষ্ট নীরবে সয়ে আমি মেয়ের সঙ্গে চিরতরে চলে যেতে চেয়েছিলাম। আমি আমার চন্দ্রমুখীকে হারিয়ে দিশাহারা হয়ে পাঁচতলা থেকে ঝাঁপ দিলেও আল্লাহতায়লা আমার জীবন ফিরিয়ে দেন।”
তখন চিকিৎসার জন্য কয়েক মাস হাসপাতালে থাকার সময় মুকুল ওই নারীর সঙ্গে সম্পর্ক গড়ে তোলেন বলে তন্বীর দাবি।
তিনি বলেন, “ডাক্তারের পরামর্শে আমি আবার অন্তঃসত্ত্বা হলে আমার উপর নির্যাতনের মাত্রা বাড়িয়ে দেয় এবং নানাভাবে হয়রানি করতে থাকে।”
নির্যাতনের কারণে অন্তঃসত্ত্বা অবস্থায় হাসপাতালে যেতে হয়েছিল বলেও তন্বীর অভিযোগ।
তিনি আরও বলেন, সাংবাদিক হিসেবে পূর্বাচল থেকে পাওয়া প্লটও না জানিয়ে বিক্রি করে অর্থ আত্মসাৎ করেছে মুকুল।
“ওই জমির মূল্য পরিশোধে এক টাকাও মুকুল দেয়নি, আমার বিভিন্ন সময়ে পাওয়া পুরস্কারের টাকা এবং আমার বড় বোনের স্বামীর কাছ থেকে নেওয়া ১৪ লাখ টাকা দিয়ে কেনা।”
তন্বী অভিযোগ করেন, যকৃৎ অকার্যকর হওয়ার পর ছয় বছরের চন্দ্রমুখীর চিকিৎসার জন্য তখন জমিটি বিক্রি করতে চাইলেও মুকুল রাজি হয়নি। ওই নারীর সঙ্গে সম্পর্কের পর এখন তা বিক্রি করেছে।
নানা নির্যাতনের পরও সন্তানের দিকে তাকিয়ে স্বামীর বিরুদ্ধে এতদিন কোনো পদক্ষেপ নেননি বলে জানান তন্বী।
“এখন পারিবারিক-সামাজিকভাবে চেষ্টা করেও কোনো লাভ না পাওয়ায় সন্তানের নিরাপত্তার দিকে তাকিয়ে আমি এখন সুষ্ঠু বিচার চাই,” বলেন তিনি।