চট্টগ্রামে রেলের টেন্ডার নিয়ে যুবলীগ ও ছাত্রলীগের মধ্যে সংঘর্ষে শিশুসহ দুইজন নিহতের ঘটনায় দুই বছরেও তদন্ত শেষ করতে পারেনি পুলিশ।
Published : 24 Jun 2015, 10:34 AM
এর মধ্যে কোতোয়ালি থানা থেকে মামলার তদন্তভার গেছে নগর গোয়েন্দা পুলিশের হাতে, তারপরও কোনো অগ্রগতি হয়নি।
এর কারণ হিসাবে একাধিক পুলিশ কর্মকর্তা বিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকমকে ‘রাজনৈতিক চাপের’ কথা বলেছেন। তবে তারা কেউ নাম প্রকাশ করতে চাননি।
পুলিশের পক্ষ থেকে অভিযোগপত্র তৈরির কাজ চলছে দাবি করা হলেও কবে নাগাদ তা জমা দেয়া হবে তা নিশ্চিত করতে পারেননি সংশ্লিষ্টরা।
২০১৩ সালের ২৪ জুন চট্টগ্রামের সিআরবি’তে ৪৮ লাখ টাকার টেন্ডার জমা দেয়া নিয়ে ছাত্রলীগ ও যুবলীগের মধ্যে সংঘর্ষ বাঁধে। গোলাগুলিতে নিহত হন যুবলীগকর্মী সাজু পালিত ও আট বছর বয়সী স্থানীয় শিশু আরমান হোসেন টুটুল।
ওই ঘটনায় কোতোয়ালি থানার এসআই মহিবুর রহমান বাদী হয়ে যুবলীগনেতা হেলাল আকবর চৌধুরী বাবর, ছাত্রলীগনেতা সাইফুল আলম লিমনহ দুই পক্ষের ৮৭ জনকে আসামি করে মামলা করেন।
সংঘর্ষের পর পুলিশ ঘটনাস্থল এবং আশপাশের এলাকায় অভিযান চালিয়ে লিমনসহ ৫২ জনকে গ্রেপ্তার করে। এর তিন দিন পর ঢাকা থেকে বাবর, রিটু দাশ বাবুলসহ মোট পাঁচজন এবং পরে আরও দুইজনসহ মোট ৫৭ জনকে গ্রেপ্তার করা হয়।
ঘটনায় জড়িত অনেককে গ্রেপ্তার করা হলেও কয়েক মাসের মধ্যে সবাই জামিনে ছাড়া পেয়ে যান। আর বাবরের সহযোগী অজিত বিশ্বাসকে দুই বছরেও গ্রেপ্তার করা হয়নি; সেদিন তাকে পিস্তল থেকে গুলি চালাতে দেখা গিয়েছিল বলে গণমাধ্যমের খবর।
সংঘর্ষের ঘটনায় নিহত যুবলীগ কর্মী সাজু পালিতের মা মিনতি পালিত বাদী হয়ে আরেকটি হত্যা মামলা দায়ের করেন। এতে অজিতকে করা হয় প্রধান আসামি।
সাজু ও অজিত দুজনেই বাবরের অনুসারী হলেও মিনতির মামলায় তার ছেলেকে ‘পরিকল্পিতভাবে’ হত্যা করার অভিযোগ আনা হয়েছে।
ঘটনার পর প্রত্যক্ষদর্শীরা জানান, টেন্ডার জমা দেয়াকে ঘিরে অজিত বিশ্বাস ও লিমনের মধ্যে প্রকাশ্যে কথা কাটাকাটির জের ধরে সংঘর্ষের সূত্রপাত।
আর সংঘর্ষে জড়িতরা সবাই যে ছাত্রলীগের লিমন ও যুবলীগের বাবরের অনুসারী, তা পুলিশও ঘটনার পর স্বীকার করে।
আদালতের নির্দেশে দুটি হত্যা মামলার তদন্ত একসঙ্গেই হচ্ছে। প্রথমে কোতোয়ালি থানার এসআই মো. কামরুজ্জামান এর দায়িত্বে থাকলেও বর্তমানে মামলাটি তদন্ত করছেন গোয়েন্দা পুলিশের পরিদর্শক জাহেদুল ইসলাম।
জাহেদুল বিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকমকে বলেন, “মামলার তদন্ত কাজ যেখানে ছিল এখনও সে অবস্থাতেই আছে। কয়েকদিন আগে মামলার নথিপত্র হাতে পেয়েছি।”
আসামিরা সবাই জামিনে আছেন জানিয়ে তিনি বলেন, “কাগজপত্র পর্যালোচনা করে দ্রুততম সময়ের মধ্যে তদন্ত কাজ শুরু হবে।”
তবে একাধিক পুলিশ কর্মকর্তা বিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকমকে বলেছেন, ঘটনার সঙ্গে জড়িতরা সবাই চট্টগ্রামের দুই প্রভাবশালী রাজনীতিবিদ নগর আওয়ামী লীগের সভাপতি এবিএম মহিউদ্দিন চৌধুরী এবং চট্টগ্রামের মেয়র ও নগর আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক আ জ ম নাছির উদ্দিনের অনুসারী হওয়ায় তদন্ত কার্যত আটকে আছে।