বর্ষবরণের দিনে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় এলাকায় নারীদের যৌন হয়রানির ঘটনা তদন্ত করে দোষীদের আইনের আওতায় আনতে পুলিশ প্রধানের নেওয়া পদক্ষেপ হাই কোর্টকে জানানো হয়েছে।
Published : 19 May 2015, 06:29 PM
মঙ্গলবার বিচারপতি কাজী রেজা-উল হক ও বিচারপতি আবু তাহের মো. সাইফুর রহমানের হাই কোর্ট বেঞ্চে একটি প্রতিবেদন দাখিল করা হয়।
আদালত আগামী ২৮ জুন পরবর্তী দিন ধার্য করেছে।
১৪ এপ্রিল সন্ধ্যায় বর্ষবরণের অনুষ্ঠানের মধ্যেই ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের টিএসসি ও সোহরাওয়ার্দী উদ্যানের গেইটে সংঘবদ্ধ একদল যুবকের হাতে নিপীড়নের শিকার হন নারীরা।
যৌন হয়রানির ওই ঘটনা নিয়ে সংবাদপত্রে প্রকাশিত একাধিক প্রতিবেদন বিবেচনায় নিয়ে ১৬ এপ্রিল হাই কোর্ট স্বতঃপ্রণোদিত রুলসহ অন্তবর্তীকালীন আদেশ দেয়।
আদালত ওই ঘটনা তদন্ত করে দোষীদের আইনের আওতায় আনতে কী ব্যবস্থা নেওয়া হয়েছে সে বিষয়ে এক মাসের মধ্যে পুলিশের মহাপরিদর্শক ও ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্যকে প্রতিবেদন দিতে নির্দেশ দেয়।
এরই ধারাবাহিকতায় মঙ্গলবার ডেপুটি অ্যার্টনি জেনারেল তাপস কুমার বিশ্বাস আইজিপির প্রতিবেদন আদালতে দাখিল করেন।
সঙ্গে ছিলেন সহকারী অ্যার্টনি জেনারেল প্রতিকার চাকমা।
পরে তাপস কুমার বিশ্বাস বিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকম বলেন, “আইজিপির পক্ষ থেকে আজ একটি প্রতিবেদন দেওয়া হয়েছে। পহেলা বৈখাশের ওই ঘটনাকে কেন্দ্র করে হাই কোর্ট যে রুল দিয়েছিল ওই রুলের পর তারা কি কি কাজ করেছে এসব কিছু দাখিল করা হয়েছে।”
ঘটনার সঙ্গে সঙ্গেই ডিএমপিকে নির্দেশ দেওয়া হয় একটি কমিটি গঠন করে জড়িতদের বিরুদ্ধে আইনানুগ ব্যবস্থা গ্রহণ করতে ও শাহবাগ থানায় একটি ফৌজদারি মামলা করার কথাও উল্লেখ রয়েছে প্রতিবেদনে।
আদালতকে জানানো হয়, ওই ঘটনায় পুলিশের কোনো গাফলতি আছে কি না সব কিছু তদন্তের নির্দেশ দেওয়া হয়েছে। হেড কোয়োর্টারও একটি কমিটি গঠন করেছে। আইজিপির সভাপতিত্বে উচ্চ পর্যায়ের একটি সভাও হয়েছে।
তাপস কুমার বিশ্বাস জানান, ওই ঘটনায় জড়িত আট জনকে শনাক্ত করা হয়েছে এবং তাদের গ্রেপ্তারের জন্য এক লাখ টাকা পুরস্কার ঘোষণা করা হয়েছে। এই বিষয়টি গণমাধ্যমে প্রকাশের উদ্যোগ নেওয়া হয়ছে। আদালতকে এটি অবহিত করা হয়েছে।
ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষের প্রতিবেদন বিষয়ে জানতে চাইলে তিনি বলেন, বিশ্ববিদ্যালয়ের পক্ষে আইনজীবী নিয়োগ দেওয়া হয়েছে বলে জানানো হয়েছে। তবে মঙ্গলবার অগ্রগতি প্রতিবেদন দেওয়া হয়নি।
রুলে এ ধরনের একটি অনুষ্ঠানে ‘নিরাপত্তা দিতে ব্যর্থতা ও দায়িত্বে অবহেলার’ দায়ে সংশ্লিষ্টদের বিরুদ্ধে কেন শাস্তিমূলক ব্যবস্থা নেওয়া হবে না তা জানতে চাওয়া হয়।
স্বরাষ্ট্র সচিব, পুলিশের মহাপরিদর্শক, ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য, ঢাকা মহানগর পুলিশের কমিশনার, পুলিশের রমনা জোনের ডিসি ও শাহবাগ থানার ওসিকে চার সপ্তাহের মধ্যে রুলের জবাব দিতে বলা হয়।
এতে ব্যাখ্যা (ইন্টারভেনার) দিতে মঙ্গলবার পক্ষভুক্ত হয় আইন ও শালিশ কেন্দ্র এবং বাংলাদেশ লিগ্যাল এইড অ্যান্ড সার্ভিসেস ট্রাস্ট।
তাদের পক্ষে ছিলেন আইনজীবী আইনুন্নাহার সিদ্দিকা।