আ. লীগ নেতাকর্মীদের বিরুদ্ধে বিএনপির মামলা

রাজধানীর কারওয়ানবাজারে খালেদা জিয়ার গাড়িবহরে হামলার ঘটনায় আওয়ামী লীগের শতাধিক নেতা-কর্মীকে আসামি করে একটি মামলা করেছে বিএনপি।

জ্যেষ্ঠ প্রতিবেদকবিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকম
Published : 21 April 2015, 06:02 AM
Updated : 21 April 2015, 08:30 AM

বিএনপির যুগ্ম মহাসচিব সুপ্রিম কোর্ট আইনজীবী সমিতির সম্পাদক মাহবুবউদ্দিন খোকন এবং ঢাকা আইনজীবী সমিতির সাবেক সভাপতি সানাউল্লাহ মিয়া মঙ্গলবার বেলা ১১টার দিকে লিখিত অভিযোগ নিয়ে তেজগাঁও থানায় যান।

বিএনপি চেয়ারপারসনের প্রধান নিরাপত্তা সমন্বয়কারী অবসরপ্রাপ্ত মেজর জেনারেল ফজলে এলাহী আকবর স্বাক্ষরিত ওই লিখিত অভিযোগ দুপুরে মামলা হিসেবে নথিভুক্ত করা হয় বলে পুলিশের তেজগাঁও বিভাগের উপকমিশনার বিপ্লব কুমার সরকার জানান।

মামলায় কারো নাম উল্লেখ করা হয়নি। তবে আওয়ামী লীগ সমর্থক শতাধিক ব্যক্তি ওই হামলা চালায় বলে অভিযোগ করেছে বিএনপি।

সোমবার বিকালের ওই ঘটনায় বিএনপি চেয়ারপারসনের নিরাপত্তারক্ষী ও বিএনপি নেতাকর্মীদের মিলিয়ে ১০০ জনকে আসামি করে একই থানায় আরেকটি মামলা করেছেন স্থানীয় এক আওয়ামী লীগ নেতা।

দুই মামলা তদন্ত করে দোষীদের আইনের আওতায় আনা হবে বলে জানান পুলিশ কর্মকর্তা বিপ্লব।

তিনি বলেন, “এ ঘটনার সঙ্গে যারাই জড়িত থাকুক না কেন তাদের সবার বিরুদ্ধে আইনি ব্যবস্থা নেওয়া হবে।”

দোষীদের চিহ্নিত করতে প্রত্যক্ষদর্শীদের সঙ্গে কথা বলার পাশাপাশি ভিডিও ফুটেজ দেখা হচ্ছে বলে জানান তিনি।

থানায় অভিযোগ জমা দেওয়ার পর মাহবুবউদ্দিন খোকন সাংবাদিকদের বলেন, “আওয়ামী লীগের শতাধিক নেতা-কর্মী গতকাল বিকালে কারওয়ান বাজারে বিএনপি চেয়ারপারসন খালেদা জিয়ার গাড়িবহরে হামলা চালায়। তারা বেগম জিয়ার গাড়িতে গুলি করেছে।

“গাড়িবহরের অন্যান্য গাড়ি ভাংচুর করেছে। এতে বিএনপি চেয়ারপারসনের একান্ত সচিব আবদুস সাত্তার, নিরাপত্তার দায়িত্বে নিয়োজিত সদস্য ফজলুল করীম, ওমর ফারুকসহ সাতজন গুরুতর আহত হয়ে হাসপাতালে আছেন। আমরা মনে করি, পরিকল্পিতভাবে এই ঘটনা ঘটানো হয়েছে।”

খালেদা জিয়ার নিরাপত্তারক্ষীরা গুলি চালিয়েছিল বলে ক্ষমতাসীনদের অভিযোগের বিষয়ে বিএনপি নেতা খোকন বলেন, “খালেদা জিয়ার নিরাপত্তার দায়িত্বে থাকা সদস্যরা কি কখনো বেগম জিয়ার গাড়িতে গুলি করতে পারে, আপনরাই বলুন। এটা একটি কল্পকাহিনী ছাড়া কিছুই নয়।”

ঢাকা উত্তর সিটি করপোরেশনে দল সমর্থিত মেয়র প্রার্থী তাবিথ আউয়ালের পক্ষে সোমবার বিকালে  কারওয়ান বাজারে প্রচারে গিয়ে হামলার মুখে পড়েন খালেদা জিয়া।

সন্ধ্যা ৬টার দিকে খালেদার বক্তব্য যখন শেষ দিকে তখন পাশ থেকে এক দল লোক ‘ছি ছি খালেদা- খালেদা ভুয়া’ স্লোগান দিতে থাকে। এরই মধ্যে আশপাশের ভবনের ওপর থেকে খালেদা জিয়ার গাড়ি লক্ষ্য করে ইট নিক্ষেপ শুরু হয়।

খালেদার ব্যক্তিগত নিরাপত্তা রক্ষীদের কয়েকজনের মুখ ও মাথায় ইট পড়ে। আহত হন সেখানে থাকা কয়েকজন সাংবাদিকও।

খালেদা জিয়া অক্ষত থাকলেও ইটের আঘাতে তার গাড়ির এক পাশের কাচ ফেটে যায়।

খালেদা জিয়ার নিরাপত্তার দায়িত্বে থাকা পুলিশ প্রত্যাহার ও এই হামলার ঘটনায় বিএনপি চেয়ারপারসনের ‘নিরাপত্তাহীনতার’ বিষয়টি স্পষ্ট হয়ে উঠেছে বলে মাহবুবউদ্দিন খোকন মন্তব্য করেছেন।

সরকারের উসকানিতে এই হামলা হয়েছে দাবি করে এর প্রতিবাদে বুধবার ঢাকা ও চট্টগ্রাম বাদে সারা দেশে হরতাল ডেকেছে বিএনপি।

অন্যদিকে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা এই ঘটনাকে বিএনপি চেয়ারপারসনের ‘নাটক’ বলে মন্তব্য করেছেন।

খালেদার নিরাপত্তারক্ষীরা বিনা উস্কানিতে গুলি চালিয়েছে অভিযোগ করে বিএনপি নেত্রীর উদ্দেশ্যে তিনি বলেন, “আপনার নিরাপত্তা কর্মীদের ঠেকান। মানুষের জান-মাল নিয়ে আর যেন খেলা না হয়।”