গাজীপুরে মন্দির ও বাড়িতে হামলা-লুটপাট

গাজীপুর সিটি কর্পোরেশন এলাকায় কয়েকটি হিন্দু বাড়ি ও মন্দিরে হামলা ও লুটপাট হয়েছে। এ সময় অন্তত ছয়জন আহত হয়েছেন।

গাজীপুর প্রতিনিধিবিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকম
Published : 20 April 2015, 01:14 PM
Updated : 20 April 2015, 01:14 PM

জয়দেবপুর থানার ওসি খন্দকার রেজাউল হাসান রেজা জানান, রোববার রাতে বনগ্রাম এলাকায় ‘বনগ্রাম শ্রী শ্রী সুধন্য কৃপাময়ী কালী মন্দির’ ও আশপাশের বাড়িতে এ হামলা হয়।

আহতদের মধ্যে স্থানীয় আসাদুল হক (৫০), রফিকুল ইসলাম (২৮), রাসেল মিয়া (৩০), মুজিবুর রহমান (৫০) ও মিস্টারের (৩৫) নাম জানা গেছে। তারা প্রাথমিক চিকিৎসা নিয়েছেন।

এলাকাবাসীর বরাত দিয়ে ওসি রেজাউল হাসান জানান, স্থানীয় রফিকুল ইসলাম নামে এক ব্যক্তির নেতৃত্বে ১৩টি মাইক্রোবাসে করে ৫০/৬০ জন সশস্ত্র সন্ত্রাসী এ হামলায় অংশ নেয়।

রফিকুল অস্ত্র ও মারামারিসহ বিভিন্ন মামলার পলাতক আসামি বলে জানান ওসি।

বনগ্রামের বাসিন্দা সুনীল চন্দ্র বর্মন জানান, রফিকের নেতৃত্বে মাইক্রোবাসে আসা ৫০/৬০ জন কালী মন্দিরের কাছে গিয়ে কয়েক প্রথমে রাউন্ড ফাঁকা গুলি ছোড়ে। এরপর তারা মন্দিরের কালী প্রতিমা, মহাদেব ও ডাকিনী যোগিনীসহ চারটি প্রতিমা ভাংচুর করে।

পরে পাশের সুরেন্দ্র চন্দ্র বর্মনের বাড়ি গিয়ে ভয়ভীতি দেখিয়ে টিভি ফ্রিজসহ বিভিন্ন আসবাবপত্র ভাংচুর ও নগদ টাকা লুটপাট করে।

এরপর পাশের লাল মোহন বর্মন, সুনীল চন্দ্র বর্মন, সতীন্দ্র বর্মন, নিরঞ্জন চন্দ্র বর্মনসহ ২০/২৫ টি বাড়ি ও পাঁচটি দোকানে হামলা, ভাংচুর এবং লুটপাট চালায়।

এ সময় তাদের হামলায় অন্তত ছয়জন আহত হন বলে জানান সুনীল চন্দ্র বর্মন।

মাস দুই আগে সুরেন্দ্র চন্দ্রসহ কয়েকটি বাড়িতে ডাকাতির ঘটনায় রফিকুল ইসলামসহ কয়েকজনের বিরুদ্ধে একটি মামলা হয়। সুরেন্দ্র চন্দ্র ওই মামলার বাদী।

আমজাদ হোসেন নামে ওই মামলার এক সাক্ষী অভিযোগ করেন, মামলাটি তুলে নেওয়ার জন্য রফিক একাধিকবার তাকেসহ মামলার বাদীকে হুমকি দিয়েছিল।

ওই ঘটনার জেরে এ হামলার ঘটনা ঘটেছে বলে তার ধারণা করছেন তিনি।

বাংলাদেশ পূজা উদযাপন কমিটির গাজীপুর জেলা শাখার সভাপতি মনীন্দ্র চন্দ্র মণ্ডল এ ঘটনায় জড়িতদের দ্রুত গ্রেপ্তারের দাবি জানিয়েছেন।

এদিকে সোমবার বিকালে পুলিশ সুপার মো. হারুন অর রশীদকে নিয়ে গাজীপুরের জেলা প্রশাসক মো. নূরুল ইসলাম ঘটনাস্থল পরিদর্শন করে ঘটনা তদন্তে তিন সদস্যের একটি কমিটি করেছেন বলে জানান গাজীপুরের নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট সত্যজিত রায় দাশ।

বিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকমকে তিনি বলেন, অতিরিক্ত জেলা ম্যাজিস্ট্রেট মোহাম্মদ হোসেনকে প্রধান করে গঠিত তদন্ত কমিটিকে তিন কার্যদিবসের মধ্যে প্রতিবেদন দিতে বলা হয়েছে।

এছাড়া পরিদর্শনের সময় জেলা প্রশাসক আহতদের চিকিৎসার খরচ বাবদ তাৎক্ষণিকভাবে সাড়ে ১২ হাজার টাকা দিয়ে মন্দির ও প্রতিমা নির্মাণের জন্য যাবতীয় ব্যয়ভার বহনের আশ্বাস দিয়েছেন বলে জানান নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট সত্যজিত।