সোমবার রাত ১০টার পূর্বক্ষণে বাংলাদেশ দলের এই জয়ের পর হাততালি দিয়ে পতাকা হাতে দাঁড়িয়ে যান স্টেডিয়ামে থাকা প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা।
স্টেডিয়ামজুড়ে উল্লাসে মেতে উঠে হাজার হাজার দর্শক। স্টেডিয়ামের উল্লাসের ঢেউ ছড়িয়ে পড়ে রাজধানী ছড়িয়ে সারাদেশে। উল্লসিত অনেকের ফেইসবুকেও তার ছোঁয়া দেখা যায়।
খেলা শেষ হওয়ার পরপরই ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের টিএসসির সামনে জড়ো হয়ে উল্লাস প্রকাশ করে শত শত তরুণ। জাতীয় পতাকা নিয়ে বাংলাদেশ-বাংলাদেশ স্লোগানে আনন্দ উদযাপন করে তারা।
বিশ্ববিদ্যালয়ের হলগুলো থেকেও মিছিল নিয়ে সেখানে উপস্থিত হয় তরুণরা। খেলার সময় ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের হলের টেলিভিশন কক্ষগুলো ছিল কানায় কানায় পূর্ণ।
জয়ের পর মিরপুর স্টেডিয়াম থেকে ‘ভি’ চিহ্নের ছবি দিয়ে মাহমুদুল হক মুন্সী তার ফেইসবুক পাতায় লিখেছেন, “বাংলাদেশ পাকিস্তানকে সিরিজ হারিয়েছে, এর চেয়ে আনন্দের আর কিইবা আছে!”
বিশ্ববিদ্যালয় শিক্ষক অভীনু কিবরিয়া ইসলাম লিখেন, “আমরা বহুবার হেরেছি। জিততে জিততে হেরেছি। প্রতারণার শিকার হয়েছি। এখন জিততে শিখেছি। পাকিস্তানকে এভাবে একতরফাভাবে হারানোতে আনন্দটা ডাবল হয়েছে। অভিনন্দন বাংলাদেশ। তামিমের খারাপ সময় গেছে। ঘুরে দাঁড়িয়েছে সেও। অভিনন্দন তামিম।”
স্টেডিয়ামে খেলা দেখা নাসিম আল মোমিন রূপক বিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকমকে বলেন, “অনুভূতি ভাষায় প্রকাশহীন। একাত্তরে যেমন মুক্তিযোদ্ধারা পাক হানাদার বাহিনীর উপর ঝাঁপিয়ে পড়েছিল, তেমনি আজ বাংলাদেশের দামাল ছেলেরা পাকিস্তানের বিরুদ্ধে ঐক্যবদ্ধ হয়ে বিজয় ছিনিয়ে এনে সিরিজ জিতে নিল। এ এক ঐতিহাসিক মুহূর্ত। এ শুধু ক্রিকেটের বিজয় নয় পাকিস্তানের বিরুদ্ধে বাঙালির বিজয়।”
জয়ের পর একটি বেসরকারি প্রতিষ্ঠানের কর্মকর্তা মাকসুদুর রহমান মামুন ফেইসবুকে লিখেছেন, “খেলায় প্রতিদ্বন্দিতা না হইলে কি মজা থাকে? পাকিস্তান দুইটা খেলার একটাতেও কোনো রকমের প্রতিদ্বন্দিতা গড়ে তুলতে পারেনি। এইরাম একপেশে খেলা দেখে কি মজা পাওয়া যায়??? এইরাম প্রতিদ্বন্দ্বিতাবিহীন পাকিস্তান কি আমরা চেয়েছিলাম???
“হেসে খেলে সিরিজ জেতার জন্য বাংলাদেশ দলকে অভিনন্দন। আতাহার আলী খানের ভাষায় Athar Ali Khan এর ভাষায় #বাংলাওয়াশ এর অপেক্ষায় রইলাম। একদম পিউর বাংলাওয়াশ অপেক্ষা করতেছে পাকিস্তানের জন্য।”
সাংবাদিক জাহিদ নেওয়াজ খান জুয়েল ফেইসবুকে লিখেছেন, “প্রথম থেকে দ্বিতীয় জয়ের মধ্যে আমরা তরুণ থেকে প্রায় মাঝবয়সী হয়ে গেলাম। সেই ১৯৯৯'র মে থেকে ২০১৫'র এপ্রিল, মাঝখানে ১৬ বছর। কিন্তু দ্বিতীয় থেকে তৃতীয় জয় ৪৮ ঘণ্টারও কম সময়ের মধ্যে। টাইগার্স রিয়েলি প্লেইড লাইক রিয়েল টাইগার্স।”
উল্লাসের আলোচনার বড় অংশজুড়ে ছিলেন তামিম ইকবালও।
তাকে নিয়ে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের সাবেক শিক্ষার্থী মাহমুদুল হাসান মাহি ফেইসবুকে লিখেন, “তামিমের কট্টর সাপোর্টার আমি। এজন্য বন্ধুদের গালি আমাকে প্রতিনিয়ত সহ্য করে যেতে হয়েছে। আজ পাকিদের হারিয়ে ইতিহাস সৃষ্টির দিনে অতীতের সকল লাঞ্ছনা, কষ্ট নিমিষেই ভুলে গেলাম।
“আরো ভালো লাগলো যখন সেই সব লাঞ্ছনাকারী বন্ধুরা তামিমের ব্যক টু ব্যাক সেঞ্চুরির অসাধারণ সাফল্যের জন্য আমাকে শুভেচ্ছা-সিক্ত করল!”