কার্যকর সমন্বিত উদ্যোগের মাধ্যমে চট্টগ্রাম নগরীর জলাবদ্ধতার সমস্যা সমাধান সম্ভব বলে মনে করেন চট্টগ্রামের নগর পরিকল্পনাবিদরা।
Published : 07 Apr 2015, 09:41 PM
মঙ্গলবার বিকালে চট্টগ্রাম প্রেস ক্লাবে ফোরাম ফর প্ল্যানড চিটাগাং আয়োজিত ‘চট্টগ্রাম মহানগরের পরিকল্পিত উন্নয়ন ভাবনা’ শীর্ষক মুক্ত আলোচনায় তারা এ মত তুলে ধরেন।
চট্টগ্রাম সিটি করপোরেশন নির্বাচনের আগে নগরীর বিভিন্ন সমস্যা ও তা থেকে উত্তরণের পথ খুঁজতে এ সভার আয়োজন করা হয়।
সভায় ‘চট্টগ্রাম মহানগরের জলাবদ্ধতা ও আমাদের করণীয়’ শীর্ষক প্রবন্ধ উপস্থাপন করেন চট্টগ্রাম ইঞ্জিনিয়ার্স ইন্সটিটিউটের সাবেক সভাপতি প্রকৌশলী দেলোয়ার মজুমদার।
দেলোয়ার মজুমদার বলেন, গত প্রায় তিন দশক ধরে চট্টগ্রাম নগরের পানি নিষ্কাশন ব্যবস্থা ক্রমাবনতিশীল। বন্দর নগরী বাংলাদেশের অর্থনীতির জন্য খুবই গুরুত্বপূরর্ণ। নানা অবহেলার কারণে দেশের উন্নয়নে চট্টগ্রাম পূর্ণাঙ্গ ভূমিকা রাখতে পারছে না।
নগরীর পূর্ব-পশ্চিম ও দক্ষিণে যথাক্রমে হালদা-কর্ণফুলী ও বঙ্গোপসাগর থাকায় যেমন পানি নিষ্কাশনের সুবিধা তেমনি বৃষ্টির সময় জোয়ারের পানি নগরীতে প্রবেশ করা নিষ্কাশনের সংকট বলে বলে দাবি দেলোয়ারের।
প্রকৌশলী দেলোয়ার বলেন, জলাশয় ভরাট, পরিকল্পনাহীন ভাবে নালা নির্মাণ, খাল-নালাকে ডাস্টবিন হিসেবে ব্যবহার প্রবণতা, অপরিকল্পিত পাহাড় কাটা, মহাপরিকল্পনা বাস্তবায়ন না করা, আইন প্রয়োগে ব্যর্থতা এবং দখল জলাবদ্ধতার প্রধান কারণ।
“১৯৯৫ সালে প্রণিত ড্রেনেজ মাস্টার প্ল্যানের মেয়াদ ২০১৫ সালে শেষ হয়ে যাবে। এজন্য পুনঃমূল্যায়ন করে মাস্টার প্ল্যান বাস্তবায়নের মেয়াদ বাড়িয়ে ২০২৪ করতে হবে।”
দেলোয়ার মজুমদার বলেন, জলাবদ্ধতা একটি সমাধানযোগ্য সমস্যা। সমাধানে প্রয়োজন কেবল সমন্বিত কার্যকর উদ্যোগ। পুনঃমূল্যায়ন, প্রকল্প প্রস্তাবনা ও বাস্তবায়ন সমান্তরালে চালাতে হবে।
সভায় নগরীর যাতায়াত ও পরিবহন ব্যবস্থার সংকট ও উত্তরণ প্রক্রিয়া নিয়ে বক্তব্য রাখেন প্রকৌশলী সুভাষ বড়ুয়া।
নগরীর ঐতিহাসিক স্থাপত্যকৃত্তি সংরক্ষণের দাবি জানান ইতিহাসবিদ ড. শামসুল হোসাইন এবং নগরীর বর্জ্য ব্যবস্থাপান বিষয়ে বক্তব্য রাখেন চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়ের অধ্যাপক মনজুরুল কিবরিয়া।
ফোরাম সভাপতি ও ইস্ট ডেল্টা বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য মু. সিকান্দার খানের সভাপতিত্বে সভাটি উৎসর্গ করা হয় প্রয়াত ভৌত বিজ্ঞানী ড. জামাল নজরুল ইসলামকে।
শাহরিয়ার খালেদের সঞ্চালনায় অনুষ্ঠানে বক্তব্য রাখেন জামাল নজরুল ইসলামের সহধর্মিনী ড. সুরাইয়া ইসলাম।
‘চট্টগ্রামের উন্নয়ন ভাবনা’ শিরোনামের আরেকটি প্রস্তাবনা উপস্থাপন করেন স্থপিত জেরিনা হোসাইন।
এতে নগরীকে চলাচলের জন্য নিরাপদ করা, জলাবদ্ধতা নিরসন, অর্থনৈতিক কর্মকাণ্ডের সুযোগ সৃষ্টি, সামাজিক সেবা ও অবকাঠামো উন্নয়ন, অপরিকল্পিত নগরায়ন রোধ, বর্জ্য ব্যবস্থাপনা আধুনিক করাসহ ১২ দফা দাবি জানান।