তার ব্যক্তিগত সচিব মহিউদ্দিন বেলাল বিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকমকে জানান, হাজি সেলিম চিকিৎসা ও আজমির শরীফ জিয়ারতে বুধবার বিকালে ভারতে গেছেন। কবে ফিরবেন তা তিনি বলে যাননি। মনোনয়ন জমা দেওয়া নিয়েও কোনো নির্দেশনা দিয়ে যাননি।
সিটি নির্বাচনে অংশ নিতে হলে রোববারের মধ্যে হাজি সেলিমকে মনোনয়নপত্র জমা দিতে হবে। এবং তার আগে অবশ্যই তাকে সাংসদ পদ ছাড়তে হবে।
আইনজীবীর মাধ্যমে মনোনয়নপত্র জমা দেওয়ার সুযোগ থাকলেও ওই সময়ের মধ্যে হাজি সেলিম দেশে না ফিরলে সাংসদ পদ থেকে তার পদত্যাগের জটিলতা থেকেই যাবে।
২৮ এপ্রিল অনুষ্ঠেয় নির্বাচনে অংশ নিতে মঙ্গলবার মনোনয়নপত্র তোলার পর থেকেই সরব ছিলেন হাজি সেলিম। কিন্তু বুধবার সকাল থেকে হঠাৎ তিনি নিষ্ক্রিয় হয়ে যান এবং সারাদিন নিজের লালবাগের বাসায় অবস্থান নিয়ে থাকেন। তিনি কারও সঙ্গে দেখা করেননি, ফোনও ধরেননি।
আওয়ামী লীগ নেতারা বলছেন, ঢাকা দক্ষিণ সিটি করপোরেশনে মেয়র প্রার্থী হিসেবে সাবেক মেয়র মোহাম্মদ হানিফের ছেলে সাঈদ খোকনকেই জিতিয়ে আনার নির্দেশ দিয়েছেন দলীয় সভানেত্রী শেখ হাসিনা। আর এ জন্য হাজি সেলিমকে সরে দাঁড়াতে বলা হয়েছে বলেও গুঞ্জন রয়েছে।
এ বিষয়ে দৃষ্টি আকর্ষণ করলে মহিউদ্দিন হেলাল বিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকমকে বলেন, “সবই তো বুঝতে পারছেন। উনি কবে ফিরবেন বলা যাচ্ছে না। উনি সবার কাছে দোয়া চেয়েছেন।”
“আমার মেয়র নির্বাচন এর জন্য গত কয়েক দিন শরীরের উপর অনেক নির্যাতন করেছি, ফলে অসুস্থ হয়ে পরেছি, আমার সাথে আমার ঢাকার লক্ষ লক্ষ কর্মী সমর্থক ভক্ত এবং পারা মহল্লার মা ও বোনরা অক্লান্ত পরিশ্রম করেছে, আমি তাদের কাছে ঋণী এবং কৃতজ্ঞ।”
চিকিৎসা শেষে আবার ‘সবার মাঝে’ ফিরে আসার জন্য সবার দোয়া চাওয়া হয়েছে ওই পোস্টে। ওই ফেইসবুক পৃষ্ঠা যে সেলিমেরই, তা নিশ্চিত করেছেন তার ব্যক্তিগত সচিব।
মঙ্গলবার হাজি সেলিমের পাশাপাশি ঢাকা দক্ষিণের মনোনয়নপত্র সংগ্রহ করেন ঢাকা মহানগর আওয়ামী লীগের সাংগঠনিক সম্পাদক সাঈদ খোকন। তিনি আগে থেকেই বলে আসছিলেন দলের পক্ষ থেকে তাকে সমর্থন জানানো হয়েছে।
ওইদিন সন্ধ্যায় জাতীয় সংসদের অধিবেশনে বক্তব্য রাখেন হাজি সেলিম, যিনি দশম জাতীয় সংসদ নির্বাচনে দলীয় প্রার্থী মোস্তফা জালাল মহিউদ্দিনকে হারিয়ে এমপি হয়েছিলেন। ওই বক্তব্যেও তিনি পদ ছাড়ার ইংগিত দেন।
তবে পরদিন মহিউদ্দিন বেলাল দাবি করেন, হাজি সেলিম স্পিকারকে পদত্যাগপত্র দিলেও তা গ্রহণ করা হয়নি। অন্যদিকে সংসদ সচিবালয়ের সংশ্লিষ্ট কর্মকর্তারা বলেন, হাজি সেলিমের নামে কোনো পদত্যাগপত্র তাদের কাছে যায়নি।
গণমাধ্যমের খবর, মঙ্গলবার রাতে সাঈদ খোকন ও হাজি সেলিম দুজনকে গণভবনে ডেকে নেন শেখ হাসিনা। এরপর হাজি সেলিমকে নির্বাচনে অংশ না নিতে বলেন তিনি।
এরপর বুধবার গণভবনে এব বৈঠকের পর ঢাকা মহানগর আওয়ামী লীগের সাংগঠনিক সম্পাদক শাহে আলম মুরাদ সাংবাদিকদের বলেন, সাঈদ খোকনকে দলের পক্ষ থেকে সমর্থন জানিয়ে তাকে জিতিয়ে আনতে শেখ হাসিনা নির্দেশ দিয়েছেন।