হাজি সেলিমকে নিয়ে গুঞ্জন

সাংসদ পদ ছেড়ে ঢাকা দক্ষিণের মেয়র হতে মনোনয়নপত্র নেওয়া হাজি সেলিমের ‘হঠাৎ নিস্ক্রিয়তায়’ শুরু হয়েছে নানা গুঞ্জন।

কাজী মোবারক হোসেনবিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকম
Published : 25 March 2015, 09:50 AM
Updated : 26 March 2015, 01:13 PM

গত কয়েক দিন সিটি নির্বাচন নিয়ে সরব থাকলেও ঢাকা মহানগর আওয়ামী লীগের এই যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক বুধবার সকাল থেকে নিজের লালবাগের বাসায় অবস্থান নিয়ে আছেন। তিনি কারও সঙ্গে দেখা করছেন না, ফোনও ধরছেন না।  

সকাল থেকে জনা ত্রিশেক কর্মী-সমর্থক ওই বাসার নিচতলায় হাজি সেলিমের অফিসে অপেক্ষায় থাকলেও কর্মচারী বলছেন- ‘স্যার ঘুমাচ্ছেন। এখন কথা বলবেন না।’

এই পরিস্থিতিতে কর্মীদের মধ্যেও কানাঘুষা শুরু হয়েছে। বলা হচ্ছে স্বতন্ত্র এই সংসদ সদস্য সিটি নির্বাচন থেকে সরে আসছেন।

কয়েকটি অনলাইন সংবাদ মাধ্যমে এ ধরনের ইংগিত দিয়ে প্রতিবেদন প্রকাশিত হলেও হাজি সেলিমের ঘনিষ্টজনরা স্পষ্ট কিছু বলছেন না।  

হাজী সেলিমের ব্যক্তিগত সচিব মহিউদ্দিন বেলাল বিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকমকে বলেন, “উনার পক্ষ থেকে গতকাল স্পিকারকে পদত্যাগপত্র দেওয়া হয়েছিল। কিন্তু তা গ্রহণ করা হয়নি। তবে সময় আছে। আমরা এখনো আশাবাদী।”

অন্যদিকে সংসদ সচিবালয়ের সংশ্লিষ্ট কর্মকর্তারা বলছেন, হাজি সেলিমের নামে কোনো পদত্যাগপত্র তাদের কাছেই যায়নি।

সিটি নির্বাচনে অংশ নিতে হলে নিয়ম অনুযায়ী হাজি সেলিমকে সাংসদ পদ ছাড়তে হবে এবং তা করতে হবে ২৯ মার্চ মনোনয়নপত্র জমা দেওয়ার আগেই।

তার বাসার সামনে অবস্থানকারী এক কর্মী নাম প্রকাশ না করার শর্তে বিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকমকে বলেন, “ভাই প্রধানমন্ত্রীর সঙ্গে দেখা করবেন। তার আগে সাংবাদিকদের সঙ্গে কথা বলবেন না।”

মঙ্গলবার সন্ধ্যায় জাতীয় সংসদের অধিবেশনেও বক্তব্য রাখেন হাজি সেলিম, যিনি দশম জাতীয় সংসদ নির্বাচনে দলীয় প্রার্থী মোস্তফা জালাল মহিউদ্দিনকে হারিয়ে এমপি হয়েছিলেন। ওই বক্তব্যেও তিনি পদ ছাড়ার ইংগিত দিয়েছিলেন।

ঢাকা দক্ষিণ থেকে নির্বাচন করতে ইতোমধ্যে মনোয়নপত্র সংগ্রহ করেছেন ঢাকা মহানগর আওয়ামী লীগের সাংগঠনিক সম্পাদক সাঈদ খোকন, যার বাবা মোহাম্মদ হানিফও এক সময় ঢাকার মেয়র ছিলেন। 

বলা হচ্ছে,  সাঈদ খোকনকেই এ নির্বাচনে সমর্থন দিচ্ছে আওয়ামী লীগ। আর এ জন্য হাজি সেলিমকে সরে দাঁড়াতে বলা হয়েছে বলেও গুঞ্জন রয়েছে।

এ বিষয়ে দৃষ্টি আকর্ষণ করলে সাঈদ খোকন বুধবার বিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকমকে বলেন, হাজি সেলিম নির্বাচনে যাচ্ছেন না বলে তিনি শুনেছেন। তবে দলের ঊর্ধ্বতন কেউ এ ব্যাপারে তাকে নিশ্চিত করেননি।

২৮ এপ্রিল অনুষ্ঠেয় নির্বাচনে অংশ নিতে মঙ্গলবার সাঈদ খোকনের পাশাপাশি হাজি সেলিমও মনোনয়নপত্র কেনেন। খোকন দলের সমর্থন পাওয়ার কথা জানালেও হাজি সেলিম সাংবাদিকদের বলেন, তার বিশ্বাস যে শেষ পর্যন্ত দলের সমর্থন তিনিই পাবেন।  

স্বাধীনতা দিবসের কর্মসূচি ঠিক করতে মঙ্গলবার ঢাকা মহানগর আওয়ামী লীগের বর্ধিত সভায় কমিটির দুই শীর্ষ নেতা মোফাজ্জল হোসেন চৌধুরী মায়া ও কামরুল ইসলাম সাংবাদিকদের বলেন,প্রার্থিতার বিষয়ে দলীয় সিদ্ধান্ত এখনও চূড়ান্ত হয়নি।

মায়া বলেন, “২৯ মার্চ মনোনয়ন ফরম জমা দেওয়ার পর নেত্রী চূড়ান্ত সিদ্ধান্ত দেবেন। নেত্রী যাকে সমর্থন দেবেন, তার পক্ষেই ঢাকা মহানগর আওয়ামী লীগ সর্বশক্তি নিয়ে মাঠে নামবে।”

আর কামরুল বলেন, “প্রার্থী এখনও চূড়ান্ত নয়। এ বিষয়ে নেত্রী চূড়ান্ত সিদ্ধান্ত দেবেন মনোনয়নপত্র দাখিলের পর। আমরা সে অনুযায়ী কাজ করব।”

[প্রতিবেদনটি তৈরিতে সহায়তা করেছেন মঈনুল হক চৌধুরী ও সাজিদুল হক।]