দেশের গুরুত্বপূর্ণ দুই মহানগরী চট্টগ্রাম ও রাজশাহীতে দুটো মেডিকেল বিশ্ববিদ্যালয় চালু করতে আইনের খসড়া অনুমোদন করেছে সরকার।
Published : 23 Mar 2015, 11:52 AM
প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার সভাপতিত্বে সোমবার মন্ত্রিসভার বৈঠকে ‘চট্টগ্রাম মেডিকেল বিশ্ববিদ্যালয় আইন ২০১৫’ এবং ‘রাজশাহী মেডিকেল বিশ্ববিদ্যালয় আইন ২০১৫’ এর খসড়ার নীতিগত অনুমোদন দেওয়া হয়।
এ দুটি বিশ্ববিদ্যালয় স্থাপিত হলে দেশে চিকিৎসা বিষয়ে উচ্চশিক্ষার বিদ্যাপীঠের সংখ্যা হবে তিনটি। ১৯৯৮ সালে ইন্সটিটিউট অফ পোস্ট গ্র্যাজুয়েট মেডিসিন অ্যান্ড রিসার্চ কে (পিজি হাসপাতাল) বাংলাদেশের প্রথম চিকিৎসা বিশ্ববিদ্যালয়ে রূপান্তর করা হয়।
মন্ত্রিসভার বৈঠক শেষে মন্ত্রিপরিষদ সচিব মোশাররাফ হোসাইন ভূইঞা সাংবাদিকদের বলেন, চট্টগ্রাম ও রাজশাহী মেডিকেল কলেজসহ আঞ্চলিক মেডিকেল কলেজগুলো এ দুটি বিশ্ববিদ্যালয়ের অধিভুক্ত হবে।
উন্নত চিকিৎসা সেবা দেওয়ার লক্ষ্যে গত বছর নভেম্বরে এক অনুষ্ঠানে দেশে আরও দুটি মেডিকেল বিশ্ববিদ্যালয় প্রতিষ্ঠার ঘোষণা দেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। এছাড়া সেনাবাহিনীর যেসব হাসপাতালে পাঁচশ শয্যা রয়েছে সেগুলোকে মেডিকেল কলেজ করার কথা বলেন তিনি।
দেশে বর্তমানে ২৩টি সরকারি মেডিকেল কলেজ আছে। আরও পাঁচটি মেডিকেল কলেজ চালুর প্রক্রিয়া চলছে।
মন্ত্রিপরিষদ সচিব বলেন, কেবল বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব মেডিকেল বিশ্ববিদ্যালয় দেশে ক্রমবর্ধমান বিশেষজ্ঞ চিকিৎসক তৈরির চাহিদা মেটাতে পারছে না বলেই এ উদ্যোগ নেওয়া হয়েছে।
“আইন দুটি একই রকম। আইন দুটি নিয়ে মন্ত্রিসভা কিছু অনুশাসন ও নির্দেশনা দিয়েছে। আইন মন্ত্রণালয়ের ভেটিং সাপেক্ষে পরবর্তীতে মন্ত্রিসভায় উপস্থাপনের মাধ্যমে এতে চূড়ান্ত অনুমোদন দেওয়া হবে।”
সাংবাদিকদের প্রশ্নের জবাবে সচিব বলেন, “চট্টগ্রাম ও রাজশাহী মেডিকেল কলেজ তাদের স্বতন্ত্র ধারায় থাকবে। নতুন বিশ্ববিদ্যালয় দুটি হবে আলাদা প্রতিষ্ঠান। কলেজগুলো এসব বিশ্ববিদ্যালয়ের অধিভুক্ত হবে।”
মোশাররাফ হোসাইন ভূইঞা বলেন, মেডিকেল বিশ্ববিদ্যালয়ে স্নাতকোত্তর পর্যায়ের পাঠদান হবে। ব্যাচেলর (এমবিবিএস কোর্স) ডিগ্রি থাকবে কলেজে। তবে নার্সিং এর ব্যচেলর ডিগ্রি দেওয়া হবে বিশ্ববিদ্যালয় থেকে। বঙ্গবন্ধু মেডিকেলেও একই নিয়ম চলছে।
“বর্তমান সরকারের লক্ষ্য হলো বিশেষজ্ঞ চিকিৎসক তৈরির মাধ্যমে স্বাস্থ্যসেবার মানোন্নয়ন। এ জন্য স্বাস্থ্যখাতে উচ্চতর শিক্ষা প্রতিষ্ঠান প্রয়োজন। বিশ্ববিদ্যালয় হলে একদিকে উচ্চতর শিক্ষা দেওয়া সম্ভব হয়, অন্যদিকে গবেষণার সুযোগ তৈরি হয়।”
নতুন দুটি বিশ্ববিদ্যালয়ের সঙ্গে হাসপাতাল থাকবে কিনা জানতে চাইলে মন্ত্রিপরিষদ সচিব বলেন, “আইনে এ বিষয়ে বলা নেই। তবে হাসপাতাল থাকতে হবে। আপাতত হাসপাতাল স্থাপন না করেও চট্টগ্রাম ও রাজশাহী মেডিকেল কলেজ হাসপাতাল ব্যবহার করে বিশ্ববিদ্যালয়ের কার্যক্রম শুরু করা যাবে। পরে বিশ্ববিদ্যালয়ের নিজস্ব হাসপাতাল হবে।”
মন্ত্রিপরিষদ সচিব জানান, প্রস্তাবিত আইনের খসড়ায় ৫৭টি ধারা আছে। পরিমার্জনের পর তা কম-বেশি হতে পারে। বিশ্ববিদ্যালয় গঠনের লক্ষ্য, ক্ষমতা, কর্তৃপক্ষ গঠনের ক্ষমতা, বিশ্ববিদ্যালয় মঞ্জুরি কমিশনের এখতিয়ার, কীভাবে পাঠদান হবে, সংবিধি, বিধিমালা ও প্রবিধানের বিষয়ে আইনে বিস্তারিত থাকবে।
বিশ্ববিদ্যালয়ের আচার্য হবেন রাষ্ট্রপতি। উপাচার্যের মেয়াদ হবে চার বছর। একজন পরপর দুই মেয়াদে উপাচার্য থাকতে পারবেন।
বিশ্ববিদ্যালয়ে উপ উপাচার্য থাকবেন দুইজন। এছাড়া পরিচালনার জন্য অন্যান্য বিশ্ববিদ্যালয়ের মতোই সিন্ডিকেট, অ্যাকাডেমিক কাউন্সিল, ডিনস কমিটি, কারিকুলাম কমিটি- ইত্যাদি কর্তৃপক্ষ থাকবে।