অভিজিৎ হত্যাকাণ্ডের প্রতিবাদে ঢাবিতে ধর্মঘট আহ্বান

লেখক অভিজিৎ রায়ের খুনিদের গ্রেপ্তার ও বিচারের দাবিতে আগামী সোমবার ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ে ছাত্র ধর্মঘট ডেকেছে প্রগতিশীল ছাত্র জোট।

রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয় প্রতিনিধিঢাকা ওবিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকম
Published : 28 Feb 2015, 10:53 AM
Updated : 28 Feb 2015, 11:34 AM

ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ে এই হত্যাকাণ্ডের দুদিন পর শনিবার মধুর ক্যান্টিনে এক সংবাদ সম্মেলনে ধর্মঘট ছাড়াও বিভিন্ন কর্মসূচির ঘোষণা দেয় বামপন্থি ছাত্র সংগঠনের এই মোর্চা।  

সংবাদ সম্মেলনে জোটের পক্ষে ছাত্র ইউনিয়নের সভাপতি হাসান তারেক জানান, রোববার ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ে ছাত্র-শিক্ষক কর্মচারীরা কালোব্যাজ ধারণ করবে এবং দুপুর ১২টায় মানববন্ধন ও বিক্ষোভ মিছিল হবে।

সংবাদ সম্মেলনের আগে অভিজিৎ রায়ের হত্যাকারীদের গ্রেপ্তার ও বিচারের দাবিতে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ে বিক্ষোভ মিছিল করে প্রগতিশীল ছাত্রজোট।

যুক্তরাষ্ট্র প্রবাসী মুক্তমনা ব্লগের প্রতিষ্ঠাতা সাম্প্রদায়িকতা ও মৌলবাদবিরোধী লেখালেখিতে সক্রিয় অভিজিৎকে গত বৃহস্পতিবার বইমেলা থেকে বের হওয়ার পথে টিএসসি এলাকায় কুপিয়ে হত্যা করে দুর্বৃত্তরা।

প্রকৌশলী অভিজিৎ ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের পদার্থ বিজ্ঞান বিভাগের অধ্যাপক অজয় রায়ের ছেলে। লেখালেখির জন্য তাকে বাংলাদেশের জঙ্গি গোষ্ঠী হুমকি দিয়ে আসছিল।

হাসান তারেক বলেন, “অভিজিৎ রায়ের ওপর হামলা মুক্ত চিন্তা ও মুক্ত বুদ্ধির ওপর হামলা। তার এই হত্যা আমাদের চোখে আঙুল দিয়ে দেখিয়ে দেয়, আমরা কেউ নিরাপদ নই।

“এই হত্যাকাণ্ডের বিচার না হলে আগামী দিনে এই ক্যাম্পাসে ৪০হাজার শিক্ষার্থীদের কারও নিরাপত্তা নিশ্চিত করা যাবে না।”

সংবাদ সম্মেলন থেকে ধর্মভিত্তিক রাজনীতির নিষিদ্ধ করার দাবিও সরকারকে জানিয়েছে প্রগতিশীল ছাত্রজোট।

ছাত্র ফেডারেশনের সভাপতি সৈকত মল্লিক বলেন, “এইসব হত্যাকাণ্ডের সমাধান করতে হলে রাষ্ট্রকে অসাম্প্রদায়িক ও গণতান্ত্রিক হতে হবে। সেই সঙ্গে এই মৌলবাদী রাজনীতি নিষিদ্ধ করতে হবে।”

সংবাদ সম্মেলনে বিপ্লবী ছাত্রমৈত্রীর সাধারণ সম্পাদক সাদিকুর রহমান, সমাজতান্ত্রিক ছাত্র ফ্রন্টের কেন্ত্রীয় দপ্তর সম্পাদক নাসির উদ্দিন প্রিন্সও ছিলেন।

রাবি শিক্ষক সমাজের প্রতিবাদ

অভিজিৎ রায় হত্যাকাণ্ডের নিন্দা ও প্রতিবাদ জানিয়েছে রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ের মুক্তিযুদ্ধের চেতনা ও মূল্যবোধে বিশ্বাসী প্রগতিশীল শিক্ষক সমাজ।

শনিবার সংগঠনের আহ্বায়ক অধ্যাপক জাহিদুল হাসান স্বাক্ষরিত এক সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে হত্যাকাণ্ডের দ্রুত বিচার দাবি করে মৌলবাদী শক্তির বিরুদ্ধে সবাইকে ঐক্যবদ্ধ হওয়ার আহ্বান জানানো হয়।

বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়, “অভিজিৎ রায়ের ওপর যারা হামলা চালিয়েছে, তারা এদেশের প্রগতি ও মুক্তচিন্তা-বিরোধী অপশক্তি। কার্যত এটি মুক্ত ও ভিন্নচিন্তার নিঃশেষের একপ্রকার পাঁয়তারা। অবশ্যই এরা এদেশের মুক্তিযুদ্ধের চেতনাবিরোধী সাম্প্রদায়িক শক্তি।”

রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষক মোহাম্মদ ইউনুস ও শফিউল ইসলামের হত্যাকাণ্ড এবং অভিজিৎ হত্যাকাণ্ডের যোগসূত্র রয়েছে বলে তাদের ধারণা।

“এর আগে তারা ব্লগার রাজীবকেও হত্যা করেছিল। স্বাধীনতাবিরোধী অপশক্তির এ ধারাবাহিক বর্বরতা প্রকারান্তে এদেশের প্রগতিপন্থি ও মুক্তচিন্তা শক্তির উপর মর্মান্তিক আঘাত।”