রোববার বেলা পৌনে ১১টা থেকে ১১টার মধ্যে সচিবালয়ের পশ্চিম পাশে গণপূর্ত বিভাগের স্টোররুমের কাছে খোলা জায়গায় এবং সচিবালয় লাগোয়া বিদ্যুৎ ভবনের পঞ্চম তলায় দুটি হাতবোমা বিস্ফোরিত হয় বলে জানিয়েছে পুলিশ।
এতে বিদ্যুৎ ভবনের পঞ্চম তলায় একটি কক্ষের কাচ ভেঙে যায়; তবে কেউ হতাহত হননি।
এ ঘটনায় জিজ্ঞাসাবাদের জন্য বিদ্যুৎ বিভাগের উপ সহকারী প্রকৌশলী আইয়ুব আলী, ওই ভবনের সিসিটিভি অপারেটর ও একজন নিরাপত্তারক্ষীকে জিজ্ঞাসাবাদের জন্য থানায় নিয়ে গেছে শাহবাগ থানা পুলিশ।
ঘটনাস্থলে উপস্থিত কর্মীরা জানান, ১০টা ৫০ এর দিকে সচিবালয়ের ভেতরে গণপূর্ত বিভাগের স্টোর রুমের পাশে একটি গাছের কাছে হঠাৎ একটি হাতবোমা বিস্ফোরিত হয়। এর পরপরই বিস্ফোরণ ঘটে বিদ্যুৎ ভবনের পঞ্চম তলায়। সেখান থেকে কাচ ভেঙে নিচেও পড়ে।
রমনা পুলিশের জ্যেষ্ঠ সহকারী উপ কমিশনার শিবলী নোমান বিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকমকে বলেন, “সব দিক দেখে মনে হচ্ছে পাঁচ তলা থেকেই প্রথম ককটেলটি নিচে ফেলা হয়। দ্বিতীয়টি ফেলতে গিয়ে কাচে লেগে বিস্ফোরিত হয়েছে।”
পঞ্চম তলায় যে প্যাসেজে এই বিস্ফোরণ ঘটে তার সামনেই উপ সহকারী প্রকৌশলী আইয়ুব আলীর কার্যালয়। বিস্ফোরণে তার কক্ষের কাচও ভেঙে গেছে।
আইয়ুব আলী পুলিশকে বলেছেন, ঘটনার সময় তিনি নিজের কক্ষে পত্রিকা পড়ছিলেন। ওই কক্ষে তখন একজন ঠিকাদারও ছিলেন, যার নাম নজরুল ইসলাম।
শিবলী নোমান জানান, নজরুল ইসলাম নামের ওই ঠিকাদার মিরপুরে মেসার্স নাজ এন্টারপ্রাইজ নামে একটি প্রতিষ্ঠান চালান। ঘটনার পর থেকে তাকে পাওয়া যাচ্ছে না।
“আমরা সিসিটিভি পরীক্ষা করতে গিয়ে দেখি সেখানে কোনো রেকর্ড নেই। বিষয়টি সন্দেহজনক হওয়ায় সিসিটিভির যন্ত্রপাতি পরীক্ষার জন্য থানায় নেওয়া হয়েছে।”
সেই সঙ্গে আইয়ুব আলী, সিসিটিভি অপারেটর ও ভবনের একজন নিরাপত্তারক্ষীকে জিজ্ঞাসাবাদের জন্য আটক করা হয়েছে বলে জানান তিনি।
ওই ফ্লোরের চতুর্থ শ্রেণির কর্মচারী উম্মে কুলসুম জানান, যখন বিস্ফেরণ ঘটে তখন তিনি প্যাসেজের উল্টো দিকে ছিলেন। শব্দ শুনে এসে কেবল ধোঁয়া দেখতে পান। তবে কাউকে সেখানে দেখেননি বলে জানিয়েছেন তিনি।
খবর পেয়ে বিদ্যুৎ সচিব মনোয়ার হোসেনসহ কর্মকর্তারা ঘটনাস্থল ঘুরে দেখেন।
বিএনপি নেতৃত্বাধীন জোট গত ৫ জানুয়ারি থেকে অবরোধ এবং এরই মধ্যে মাঝেমাঝে হরতাল করছে। এসব কর্মসূচিতে প্রতিদিনই বিভিন্ন স্থানে বোমাবাজি ও নাশকতার ঘটনা ঘটছে।
এর আগে উচ্চ আদালতের এক বিচারকের গ্রামের বাড়িতে আগুন দেওয়া হয়, আরেক বিচারকের ঢাকার বাসা এবং আইনমন্ত্রীর বাসা লক্ষ্য করে ফাটানো হয় হাতবোমা। এমনকি সুপ্রিম কোর্টের বিচারকক্ষেও বইয়ের ভেতর কৌশলে লুকানো বোমা পাওয়া যায়।