৪৪ মাস পর ফতোয়ার রায় প্রকাশ

ধর্মীয় বিষয়ে ফতোয়াকে বৈধতা দিয়ে আপিল বিভাগের রায়ের পূর্ণাঙ্গ অনুলিপি প্রকাশ পেয়েছে।

নিজস্ব প্রতিবেদকবিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকম
Published : 25 Jan 2015, 04:23 PM
Updated : 25 Jan 2015, 04:23 PM

সংক্ষিপ্ত রায় দেওয়ার প্রায় ৪৪ মাস পর রোববার সুপ্রিম কোর্টের ওয়েবসাইটে এই রায় প্রকাশ হয়।

২০১১ সালের ১২ মে তৎকালীন প্রধান বিচারপতি এবিএম খায়রুল হকের নেতৃত্বাধীন আপিল বিভাগের ৬ বিচারকের বেঞ্চ এই রায় ঘোষণা করেন।

আপিল বিভাগ বলেছে, ধর্মীয় বিষয়ে ফতোয়া দেওয়া যেতে পারে, তবে যথাযথ শিক্ষিত ব্যক্তি তা দিতে পারবে। আর ফতোয়া গ্রহণের বিষয়টি হতে হবে স্বতঃস্ফূর্ত। এক্ষেত্রে কোনো ক্ষমতার ব্যবহার বা অন্যায্য প্রভাব ব্যবহার করা যাবে না।

“দেশের প্রচলিত আইনে বিধান আছে, এমন বিষয়ে ফতোয়া দিয়ে কারো অধিকার, খ্যাতি বা সম্মানহানি করা যাবে না। এর মাধ্যমে কোনো ধরনের শারিরীক বা মানসিক শাস্তি দেওয়া যাবে না।”

ফতোয়ার রায়ের বেঞ্চে ছিলেন প্রধান বিচারপতি এবিএম খায়রুল হক, বিচারপতি মো. মোজাম্মেল হোসেন, বিচারপতি এসকে সিনহা, বিচারপতি মো. আব্দুল ওয়াহহাব মিঞা, বিচারপতি সৈয়দ মাহমুদ হোসেন ও বিচারপতি মো. ইমান আলী।

এদের মধ্যে বিচারপতি সৈয়দ মাহমুদ হোসেন মূল রায় লেখেন। তার সঙ্গে বেশ কিছু বিষয়ে দ্বিমত পোষণ করে পৃথক রায় দেন বিচারপতি মো. আব্দুল ওয়াহহাব মিঞা। এই বেঞ্চের অন্য চার বিচারক সৈয়দ মাহমুদ হোসেনের সঙ্গে একমত পোষণ করেন।

তবে একমত পোষণের পরও ১৩৮ পৃষ্ঠার এই রায়ে খায়রুল হক ৩৯ পৃষ্ঠার সংযুক্তি লেখেন।

২০০১ সালের ১ জানুয়ারি বিচারপতি গোলাম রাব্বানী ও বিচারপতি নাজমুন আরা সুলতানার হাইকোর্ট বেঞ্চ এক স্ব-প্রণোদিত আদেশে সব ধরনের ফতোয়াকে অবৈধ ঘোষণা করে রায় দেয়।

ওই রায়ের বিরুদ্ধে একই বছর মুফতি মো. তৈয়ব ও মাওলানা আবুল কালাম আজাদ আপিল করেন। ১০ বছরের বেশি সময় পর এ বছরের ১ মার্চ আপিলের শুনানি শুরু হয়।

শুনানিতে আদালত-বন্ধু (অ্যামিকাস কিউরিয়া) হিসাবে টিএইচ খান, রফিক উল হক, রোকনউদ্দিন মাহমুদ, মাহমুদুল ইসলাম, এম জহির, এবিএম নুরুল ইসলাম, এএফ হাসান আরিফ, তানিয়া আমীর এবং এমআই ফারুকী বক্তব্য শোনে আপিল বিভাগ। এছাড়া পাঁচ জন আলেমের বক্তব্যও শোনে আদালত।

ফতোয়ার মাধ্যমে নির্যাতনের শিকার হওয়ার বেশ কয়েকটি ঘটনা দেশে আলোচিত। ফতোয়ার শিকার অনেক তরুণীর মৃত্যু এবং আত্মহত্যার ঘটনাও রয়েছে।