গাজীপুরের শ্রীপুর উপজেলায় গ্রাম্য সালিশে তিরস্কার ও কান ধরে উঠবস করানোর পর এক স্কুলছাত্রী আত্মহত্যা করেছে।
Published : 21 Dec 2014, 03:59 PM
প্রহ্লাদপুর ইউনিয়নের কদমা গ্রামে শনিবার এ ঘটনার পর থেকে সালিশে নেতৃত্বদানকারী ইউপি সদস্য সামসুল হক, গ্রাম্য বিচারক আব্দুস ছাত্তারসহ কয়েকজন পলাতক রয়েছেন।
শ্রীপুর মডেল থানার এসআই হাফিজুর রহমান জানান, রোববার সকালের দিকে মৌসুমী আক্তারের লাশ ময়নাতদন্ত শেষে স্বজনদের কাছে হস্তান্তর করেছে পুলিশ।
এ ঘটনায় আত্মহত্যার প্ররোচনার অভিযোগে রোববার দুপুরে একটি মামলা করেছেন মৌসুমীর মা নিলুফার ইয়াসমিন।
মৌসুমী পোতাবাড়ী আদর্শ নিম্ন মাধ্যমিক বিদ্যালয়ের নবম শ্রেণি থেকে এ বছর বার্ষিক পরীক্ষায় অংশগ্রহণ করেছিল। তার বাবা মোজাফফর হোসেন দুবাইয়ে থাকেন।
এসআই হাফিজুর জানান, পার্শ্ববর্তী ভিটিপাড়া গ্রামের আশ্রাব আলীর ছেলে সুজনের (২২) সঙ্গে মৌসুমীর প্রেমেরে সম্পর্ক ছিল। সুজন কদমা গ্রামে তার নানার বাড়ি থাকে।
সুজনের নানা বাড়ি আর মৌসুমীদের বাড়ি পাশাপাশি।
নিলুফার ইয়াসমিনের বরাত দিয়ে এসআই হাফিজুর বিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকমকে জানান, তিন বছর ধরে সুজন ও মৌসুমীর সঙ্গে প্রেমের সম্পর্ক চলছিল। গত ১৪ ডিসেম্বর মৌসুমী বার্ষিক পরীক্ষা শেষ করে কাউকে কিছু না জানিয়ে সুজনের সঙ্গে চলে যায়। পরে ১৮ ডিসেম্বর তারা আবার ফিরে আসে।
এ নিয়ে শনিবার (২০ ডিসেম্বর) মৌসুমীদের বাড়িতে সালিশে বসেন গ্রাম্য মাতবররা।
ওই সালিশে উপস্থিত স্থানীয় ইউপি সদস্য সামসুল, গ্রাম্য বিচারক ছাত্তার মৌসুমীকে সবার সামনে তিরস্কার ও অশ্লীল ভাষায় গালাগাল দেন।
“প্রেম করার অপরাধের শাস্তি হিসেবে দুজনকেই সবার সামনে কান ধরে উঠবস করানো হয়।”
নিলুফার জানান, সালিশ চলার মধ্যেই তার মেয়ে দৌড়ে ঘরে ঢুকে দরজা আটকে দেয়। কিছুক্ষণ পরে সিলিং ফ্যানে ঝুলন্ত অবস্থায় মৌসুমীকে পাওয়া যায়। উদ্ধার করে হাসপাতালে নেওয়া হলে চিকিৎসক মৌসুমীকে মৃত ঘোষণা করেন।
প্রহলাদপুর ইউপি চেয়ারম্যান আবু সাঈদ জানান, মৌসুমীর মৃত্যুর খবর আসার পর সুজনসহ সালিশকারীরা পালিয়ে গেছেন।
রোববার সকালের দিকে লাশ ময়নাতদন্ত শেষে স্বজনদের কাছে হস্তান্তর করেছে পুলিশ।