ফলে গত কয়েকদিন ধরে নিত্য প্রয়োজনীয় ওষুধসহ অন্যান্য চিকিৎসা সামগ্রীর অভাবে ভোগান্তিতে পড়েছে সাধারণ মানুষ।
গত রোববার (১৪ ডিসেম্বর) চিকিৎসা কাজে ব্যাঘাত সৃষ্টির অভিযোগে বিভিন্ন ফার্মাসিউটিক্যালসের ৩২ জন বিক্রয় প্রতিনিধিকে কিশোরগঞ্জ জেলা হাসপাতাল থেকে আটক করে সাজা দেওয়া হয়।
তাদের প্রত্যেককে ১৫ দিনের জেল ও ১০ হাজার টাকা জরিমানা অনাদয়ে আরো ১০ দিনের কারাদণ্ড দেওয়া হয়।
এর প্রতিবাদে ১৪ থেকে ১৬ ডিসেম্বর তিন দিন অনানুষ্ঠানিক কর্মবিরতি করেন তারা।
এরপর সিভিল সার্জন মৃণাল কান্তি পণ্ডিতকে দায়ী করে তার অপসারণের দাবিতে বুধবার (১৭ ডিসেম্বর) থেকে অনির্দিষ্টকালের কর্মবিরতি শুরু করে ওষুধ বিক্রয় প্রতিনিধিদের সংগঠন ‘ফারিয়া’।
বুধবার কিশোরগঞ্জ প্রেসক্লাবে এক সংবাদ সম্মেলনে সংগঠনটি কর্মবিরতি চালিয়ে যাওয়ার ঘোষণা দেয়।
জেল-জরিমানার ঘটনাকে অহেতুক ও নির্যাতনমূলক দাবি করে এর নিন্দা জানিয়ে এর পিছনে মদদদাতা হিসেবে সিভিল সার্জনকে অভিযুক্ত করা হয় সংবাদ সম্মেলনে।
ফারিয়ার প্রধান উপদেষ্টা এ কে এম রুহুল আমীন খান জানান, সিভিল সার্জনকে অপসারণ না করা পর্যন্ত তাদের কর্মসূচি অব্যাহত থাকবে।
জেলা ওষুধ ব্যবসায়ী সমিতির সাধারণ সম্পাদক আখতার হোসেন বিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকমকে বলেন, “ওষুধ সরবরাহ বন্ধ থাকায় দোকানে বেচাকেনাও আগের তুলনায় কমে গেছে। প্রয়োজনীয় ওষুধ ছাড়াই ক্রেতাদেরকে বিদায় করতে হচ্ছে। এ অবস্থায় বিষয়টি দ্রুত সুরাহা না হলে দুয়েকদিনের মধ্যে সংকট আরও চরম আকার ধারণ করবে।”
এ ব্যাপারে সিভিল সার্জন মৃণাল কান্তি বিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকমকে বলেন, হাসপাতালে মোবাইল কোর্টের প্রয়োজন ছিল। কারণ স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়ের নির্দেশে ওষুধ বিক্রয় প্রতিনিধিদের দায়িত্ব পালনের নির্ধারিত সময় ও এলাকা নির্দিষ্ট থাকলেও তার তোয়াক্কা না করে তাদের নিয়ম বহির্ভূত বেপরোয়া কর্মকাণ্ডের কারণে হাসপাতালে চিকিৎসার পরিবেশ ব্যাহত হচ্ছিল।
তার অভিযোগ, ওষুধ বিক্রয় প্রতিনিধিরা হাসপাতালকে ‘প্রাইভেট ক্লিনিক’ মনে করে যা ইচ্ছা তাই করে। হাসপাতালে বিনামূল্যে ওষুধ থাকার পরও তারা চিকিৎসকদের নিজস্ব কোম্পানির ওষুধ লিখতে অন্যায়ভাবে চাপ প্রয়োগ করে থাকে।
“জেলা প্রশাসনের সমন্বয় সভায় এ বিষয়টি নিয়ে একাধিকবার আলোচনাও হয়েছে। তাই উদ্ভূত পরিস্থিতির কারণে স্বাভাবিক প্রশাসনিক প্রক্রিয়ার অংশ হিসেবেই মোবাইল কোর্ট পরিচালিত হয়েছে। এটা আমার একার কোনো বিষয় নয়,” বলেন তিনি।