পশ্চিমবঙ্গের বর্ধমানে বোমা বিস্ফোরণের তদন্তে থাকা ভারতের গোয়েন্দা সংস্থা এনআইএ’র একটি দল আগামী সপ্তাহে বাংলাদেশে আসার প্রস্তুতি নিয়েছে।
Published : 06 Nov 2014, 05:05 PM
গত মাসে বর্ধমানের খাগড়াগড়ে জঙ্গি আস্তানায় ওই বিস্ফোরণের পর বাংলাদেশে নিষিদ্ধ সংগঠন জেএমবির সম্পৃক্ততার তথ্য পাওয়ার কথা বলে আসছিল ভারতের গোয়েন্দারা।
সেই তদন্তের অংশ হিসেবে আগামী সপ্তাহে আসতে যাচ্ছে ভারতের জাতীয় গোয়েন্দা সংস্থার সদস্যরা। তারা ৯ অক্টোবর রাজশাহী ও সাতক্ষীরা জেলায় যেতে পারেন বলে গোয়েন্দা সূত্র জানিয়েছে।
বর্তমানে দলটি এ বিষয়ে ভারতের বিদেশ মন্ত্রণালয়ের ছাড়পত্রের অপেক্ষায় রয়েছে। বিদেশ মন্ত্রণালয় আবার সফরের বিষয়ে বাংলাদেশের পক্ষ থেকে ইঙ্গিত পাওয়ার আশায় রয়েছে।
গোয়েন্দা সূত্র জানায়, ভারতের এ জাতীয় তদন্ত সংস্থার সর্বাধিক গুরুত্বের তালিকায় ১২ জন জঙ্গির নাম থাকলেও এ সফরে সাজিদ, ইউসুফ শেখ, কাউসার শেখ, নাসিরুল্লাহ ও তালহা শেখ নামে পাঁচ জঙ্গির বিষয়ে সর্বোচ্চ গুরুত্ব দিয়ে তদন্ত করবে দলটি।
এদের মধ্যে কাউসার শেখ ভারত থেকে বাংলাদেশে বোমা ও বিস্ফোরক দ্রব্য পাঠানোর দায়িত্বে ছিলেন বলে ভারতের গোয়েন্দাদের দাবি। নাসিরুল্লাহ তদারকি করতেন জঙ্গিদের মাদ্রাসা নেটওয়ার্ক। পশ্চিমবঙ্গের বীরভূম জেলার কিরনাহার ও নদীয়ার দেবগ্রামে জঙ্গি কার্যক্রম চালাতেন তালহা শেখ।
এছাড়া সম্প্রতি আসিফ আদনান (২৬) ও ফজলে এলাহী তানজিল (২৪) নামে ঢাকার সেগুনবাগিচা থেকে গ্রেপ্তার দুই জঙ্গির ব্যাপারেও বাংলাদেশের কাছ থেকে বিস্তারিত তথ্য খুঁজছে ভারত।
তদন্ত সংস্থার কর্মকর্তারা জানান, কর্তৃপক্ষের অনুমতি মিললে বাংলাদেশে গ্রেপ্তার কয়েকজন জেএমবি জঙ্গির সঙ্গে কথা বলার পরিকল্পনাও তাদের রয়েছে।
এনআইএর একজন ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তা জানান, জঙ্গি কার্যক্রমের জন্য ২০০৭ সালে মৃত্যুদণ্ড হওয়া সিদ্দিকুর রহমান ওরফে বাংলা ভাইয়ের কয়েকজন ঘনিষ্ঠ সহযোগীর সঙ্গে তারা কথা বলার চেষ্টা করবেন।
তবে আলোচনার বিষয় পশ্চিমবঙ্গকে জঙ্গি কার্যক্রমের ঘাঁটি হিসেবে ব্যবহার এবং এ সংক্রান্ত ধারণা নিয়ে অমীমাংসিত প্রশ্নের উত্তরের মধ্যে সীমাবদ্ধ থাকবে।
চলতি বছরে এনআইএর তালিকায় থাকা ইউসুফ শেখ পশ্চিমবঙ্গের বেশ কিছু জেলায় বাজার মূল্যের চেয়ে প্রায় দ্বিগুণ দামে ৫৪ বিঘা জমি কিনেছেন।
হাকিম শেখ নামে মুর্শিদাবাদ জেলার লাংগোলা এলাকার এক ব্যক্তি তাকে এইসব জমি কেনার টাকা জোগাতে সহায়তা করেছে। বর্ধমান বিস্ফোরণের পর থেকেই যার কোনও হদিস পাওয়া যাচ্ছে না।
ভারতের কেন্দ্রীয় তদন্ত সংস্থার তথ্য অনুসারে, এই হাকিম শেখই পশ্চিমবঙ্গের গুরুত্বপূর্ণ জেলাগুলোর বাইরে কাজ করা কিছু এনজিওর সঙ্গে জঙ্গিদের যোগাযোগে কাজ করেন।
খারিজি মাদ্রাসার তহবিল জোগানোর নাম করে সাধারণ লোক থেকে শুরু করে বহুজাতিক কোম্পানির বিভিন্ন জনের কাছ থেকে টাকা সংগ্রহ করা হয়েছে গোয়েন্দা তথ্য রয়েছে। হাকিম এসব টাকা জঙ্গি প্রশিক্ষণে ব্যবহার করেছেন।