সরকারের শীর্ষ নেতৃত্বের ইশারায় কেন্দ্রীয় শহীদ মিনারে প্রয়াত পিয়াস করিমকে শ্রদ্ধা নিবেদনে বাধা দেয়া হচ্ছে বলে অভিযোগ করেছে বিএনপি।
Published : 15 Oct 2014, 05:07 PM
বিএনপির যুগ্ম মহাসচিব রুহুল কবির রিজভী বুধবার এক সংবাদ ব্রিফিংয়ে বলেন, পিয়াস করিমের বক্তব্যে সরকার বিব্রত বোধ করতো। আর তা থেকেই তার মরদেহ শহীদ মিনারে নিয়ে শ্রদ্ধা নিবেদনের ঘোষণার পর আওয়ামী লীগ নেতৃত্বাধীন মহাজোটের শরিকদের কয়েকটি সংগঠন তাতে বাধা দেয়ার হুমকি দিয়েছে।
“আমরা মনে করি, সরকারের শীর্ষ নেতৃত্বের ইশারায় এটি হচ্ছে।”
ব্র্যাক বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষক পিয়াস করিম সোমবার মারা যান, যিনি টেলিভিশন অনুষ্ঠানে আলোচক হিসেবেই বেশি পরিচিত ছিলেন। গণজাগরণ আন্দোলন এবং যুদ্ধাপরাধীদের বিচার প্রক্রিয়া নিয়ে বিভিন্ন অনুষ্ঠানে তার বক্তব্য বিতর্কের জন্ম দেয়।
এ কারণে পরিবারের পক্ষ থেকে পিয়াস করিমের লাশ বুধবার শহীদ মিনারে রাখার কথা বলা হলে সামাজিক যোগাযোগের ওয়েবসাইটগুলোতে প্রতিবাদের ঝড় ওঠে; বিভিন্ন ছাত্র ও সাংস্কৃতিক সংগঠন তা প্রতিরোধের ঘোষণা দেয়।
পরে পিয়াসের প্রবাসী স্বজনদের দেশে ফিরতে বিলম্বের কারণে দাফন পিছিয়ে গেলে পরিবারের পক্ষ থেকে নতুন করে আবেদন করা হয়, যাতে শ্রদ্ধা নিবেদনের জন্য শুক্রবার তার মরদেহ শহীদ মিনারে রাখার অনুমতি চাওয়া হয়।
তবে অন্য একটি সংগঠন ওই দিন শহীদ মিনার ব্যবহারের অনুমতি চেয়ে আগে আবেদন করায় পিয়াস করিমের পরিবারের চাওয়ায় সাড়া দেয়া যায়নি বলে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষ জানিয়েছে।
পিয়াস করিমের প্রতি শ্রদ্ধা জানাতে শুক্রবার দিনব্যাপী শোক দিবসের কর্মসূচি দিয়েছে বিএনপি। দলের এক সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে সেদিন সকাল সাড়ে ১০টায় কেন্দ্রীয় শহীদ মিনারে পিয়াস করিমের প্রতি ‘শেষ শ্রদ্ধা’ জানানোর বিষয়টিও রয়েছে।
নয়া পল্টনে বিএনপির কেন্দ্রীয় কার্যালয়ে দুপুরে এই সংবাদ ব্রিফিংয়ে রিজভী বলেন, “সরকার পিয়াস করিমের অস্তিত্ব কখনোই তার জীবদ্দশায় যেমন সহ্য করতে পারেনি, তেমনি মৃত্যুর পরেও সহ্য করতে পারছে না। সেজন্য তারা (সরকার) কেন্দ্রীয় শহীদ মিনারকে নিজেদের পৈত্রিক সম্পত্তি মনে করে দখলে রাখার চক্রান্ত করছে।”
প্রয়াত পিয়াসের প্রতি এ আচরণের প্রতিবাদে দুর্বার আন্দোলন গড়ে তোলারও হুঁশিয়ারি দেন তিনি।
সরকারের বিরুদ্ধে বিএনপি নেতাকর্মীদের ওপর নির্যাতনের অভিযোগ করে রিজভী বলেন, “বিরোধী নেতা-কর্মীদের কুপিয়ে হত্যা করা হচ্ছে। প্রতিনিয়তই এমন ঘটনা ঘটছে। গতকাল নাটোরের সিংড়া উপজেলায় জাতীয়তাবাদী যুবদলের নেতা কামাল উদ্দিনকে প্রকাশ্য দিবালোকে কুপিয়ে হত্যা করেছে।
“অন্যদিকে ক্ষমতাসীন যুবলীগের নেতা-কর্মীরা ডাকাতি করতে গিয়ে ধরা পড়লে তাদের পুলিশ ছেড়ে দেয়। এভাবে তাদের ক্ষুধা পরিতৃপ্ত করার জন্য সত্যিকারের আইনের শাসনকে মাটিচাপা দিয়ে লুটতরাজ, খুন-জখমের এমন এক কুৎসিত সংস্কৃতির জন্ম দেয়ার জন্য তাদের অবৈধ অস্ত্র, পেশী প্রদর্শন, উগ্রচণ্ড ও সমাজবিরোধীদের ওপর নির্ভর করতে হচ্ছে।”
সংবাদ ব্রিফিংয়ে অন্যদের মধ্যে বিএনপির কেন্দ্রীয় নেতা আবদুস সালাম আজাদ, মুনির হোসেন, মীর সরফত আলী সপু, এ বি এম মোশাররফ হোসেন প্রমুখ উপস্থিত ছিলেন।