নিউ ইয়র্কে শেখ হাসিনা ও নরেন্দ্র মোদীর ৪৫ মিনিটের প্রথম বৈঠক ‘অত্যন্ত সফল’ বলে মন্তব্য করেছেন শীর্ষ একজন বিজেপি নেতা, যিনি ভারতীয় প্রধানমন্ত্রীর ঘনিষ্টজন হিসাবে পরিচিত।
Published : 29 Sep 2014, 01:18 PM
ভারতের প্রধানমন্ত্রী হিসাবে যুক্তরাষ্ট্রে প্রথম সফরে মোদীর সফরসঙ্গীদের মধ্যে ওই বিজেপি নেতাও রয়েছেন।
গত শনিবার নিউ ইয়র্কে ওই বৈঠকে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা যতো দ্রুত সম্ভব ভারত-বাংলাদেশ স্থল সীমান্ত চুক্তি বাস্তবায়ন এবং তিস্তার পানি বণ্টন চুক্তি করার ওপর গুরুত্ব দেন।
ভারতের প্রধানমন্ত্রী মোদী জবাবে হিন্দিতে বলেন: “ম্যায় রাস্তা নিকাল রাহা হুঁ, থোড়া ভরসা রাখিয়ে” (আমি সমাধানের পথ খুঁজে বের করছি। আমার ওপর ভরসা রাখুন)।
এ সময় শেখ হাসিনাও সরল হিন্দিতে জবাব দেন: “ভরসা তো হ্যায়, পার থোড়া জলদি হো তো আচ্ছা হোগা” (আপনার ওপর আমাদের ভরসা আছে। কিন্তু যতো দ্রুত হয় ততোই ভাল।”
মোদী তাকে বলেন, এ দুটি চুক্তি ছিল বাংলাদেশের মানুষের প্রতি ভারতের সরকারের ‘অঙ্গীকার’। এর বাস্তবায়ন ‘হতেই হবে’।
“কিন্তু দেশে ঐকমত্য সৃষ্টির জন্য আমাদের কিছুটা সময় দরকার।”
দুই নেতার ৪৫ মিনিট বৈঠকের মধ্যে ৫ মিনিট ছিল একান্ত বৈঠক।
ইংরেজির চেয়ে হিন্দিতে বেশি স্বচ্ছন্দ মোদী বৈঠকে হাসিনাকে বলেন, “আগার ম্যায় হিন্দি মে বাত করু তো কেয়া আপকো তকলিফ হোগি?” (আমি যদি হিন্দিতে কথা বলি তাহলে কি আপনার সমস্যা হবে?)
জবাবে হাসিনা বলেন, “না, একদম না।… আমি হিন্দি বুঝি, অল্পস্বল্প বলতেও পারি।”
হিন্দিতে প্রায় পাঁচ মিনিট আলাপ চালানোর পর মোদী তার সঙ্গীদের বলেন, “হাসিনা জি বহুত আচ্ছা হিন্দি বলতি হ্যায়, ম্যায় তো আশ্চারিয়া হো গেয়া” (উনার হিন্দি তো খুব ভাল। আমি তো আশ্চর্য হয়ে গেছি।)
বৈঠক শেষে বিদায়ের সময় মোদীও বাংলায় বলেন, “আবার দেখা হবে।”
শেখ হাসিনাকে মোদী জানান, তিনি শিগগিরই বাংলাদেশ সফরে আসতে চান। সেই সঙ্গে বলেন, “খালি হাতে আসব না।”
বৈঠক শেষে দুই প্রধানমন্ত্রীর সঙ্গীরাই বলেছেন, দুই নেতার সাক্ষাৎ ছিল অত্যন্ত সৌহার্দ্যপূর্ণ।
শেখ হাসিনার গণমাধ্যম বিষয়ক উপদেষ্টা ইকবাল সোবহান চৌধুরী কলকাতার আনন্দবাজার পত্রিকাকে বলেন, “দুই নেতাকে দেখে মনেই হয়নি এটা ছিল তাদের প্রথম সাক্ষাৎ।”
মোদী সবসময় বাংলাদেশ ও হাসিনা সরকারের পাশে থাকার বিষয়ে আবারো আশ্বস্ত করেন।
ভারতীয় প্রধানমন্ত্রীকে উদ্ধৃত করে তার সফরসঙ্গী সেই বিজেপি নেতা বলেন, “হাসিনা সরকার ভারতের জন্য অনেক করেছেন, বিশেষ করে নিরাপত্তা বিষয়ে। আমরা তাকে বা বাংলাদেশকে হতাশ করব না।”
শেখ হাসিনা বৈঠকে মোদীর কাছে একটি ফাইল হস্তান্তর করেন, যাতে পশ্চিমবঙ্গের তৃণমূল এমপি আহমেদ হাসান ইমরানের সঙ্গে বাংলাদেশে জামায়াতে ইসলামীর যোগাযোগ এবং তার অনুরোধে জামায়াতকে দেয়া ভারতের সারদা গ্রুপের অর্থের বিষয়ে বিস্তারিত তথ্য রয়েছে।
মোদী হাসিনাকে বলেন, “ভারতের ভূখণ্ড ব্যবহার করে বাংলাদেশ বা বাংলাদেশের মানুষের বিরুদ্ধে কর্মকাণ্ড চালানোর কোনো সুযোগ আমরা দেব না।”
ভারতীয় প্রধানমন্ত্রী জামায়াতের সন্ত্রাসে সারদার মদদের বিষয়টি তদন্তের পাশাপাশি এর সঙ্গে জড়িতদের বিচারের প্রতিশ্রুতি দেন বলে ওই বিজেপি নেতা জানান।