উৎপাদন খরচ কম, কিন্তু বিক্রমূল্য বেশি লাভ হওয়ায় অনেকেই ঝুঁকছেন এখন এই জাতের টমেটো চাষে। তাই দিন দিন বৃদ্ধি পাচ্ছে গ্রীস্মকালীন এই টমেটো চাষ।
উদ্যোগী যুবকরা বেসরকারি সংস্থার সহযোগিতা পেলেও সরকারের কৃষি বিভাগের কোনো ধরনের সহায়তা চেয়েও পাননি বলে অভিযোগ করেছেন।
উদ্যোগী যুবকদের মধ্যে রয়েছেন সদর উপজেলার আলিয়াবাদ ইউনিয়নের বিলমামুদপুর গ্রামের বদরুজ্জামান বাচ্চু মোল্যা ও হায়দার আলী।
বদরুজ্জামান বাচ্চু মোল্যা বিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকমকে জানান, এসএসসি পাশের পর দারিদ্র্যের কারণে আর পড়া হয়নি তার। অনেকদিন বেকার থাকার পর টেলিভিশনে একটি প্রতিবেদন দেখে তিনি গ্রীষ্মকালীন টমেটো চাষে উৎসাহী হন।
নিজের ৭ শতক জমির উপর ৮ শত চারা রোপনের মধ্য দিয়ে তিনি চাষ শুরু করেন। ভাইরাসজনিত রোগে এরমধ্যে একশ’ চারা মারা গেলেও ৭ শত চারায় ফলন হয়েছে। মৌসুমের প্রথম ফলন সংগ্রহ করে বাচ্চু পেয়েছেন প্রায় ৭শ’ কেজি টমেটো। ওই টমেটোর প্রতি কেজির বাজার মূল্য একশ থেকে দেড়শ টাকা। চয় মাস পর্যন্ত এই চারা থেকে ফলন পাওয়া যাবে।
৭ শতক জমিতে টমেটো আবাদে তার খরচ হয়েছে ২১ হাজার টাকা।
এ বছর তিনি দেড় থেকে ২ লাখ টাকা আয় করতে পারবেন বলে তিনি আশা করেন।
বাচ্চুর টমেটো চাষ দেখে এলাকার অনেকেই এখন গ্রীস্মকালীন টমেটো চাষ করছেন।
বাচ্চু জানান, তিনি টমেটো চাষের প্রস্তুতি নেয়ার সময় তার পাশে এসে দাঁড়ান ইউএসএআইডি কর্মকর্তা মোস্তাফিজুর রহমান।
তিনি তাকে টমেটো চাষের জন্য ১৩ হাজার ৪ শত টাকা দেন। এছাড়া কীভাবে গাছে বেশি ফলন হবে, কীভাবে খেত ভালো এসব বিষয়ে পরামর্শ দেন।
কৃষি সম্প্রসারণ বিভাগের অসহযোগিতার অভিযোগ করে তিনি বলেন, “আমার গাছে ভাইরাস রোগে আক্রান্ত হলে কয়েকবার কৃষি সম্প্রসারণ বিভাগের কর্মকর্তাদের সহযোগিতা চেয়েছি।
“কিন্তু একদিনের জন্যও তার কেউ আমার ক্ষেত দেখতে আসেনি। তাদের সহযোগিতা পেলে আমি আরো ভালো ফল পেতাম।”
বাচ্চু মোল্যার সাফল্য দেখে প্রতিবেশী বেকার যুবক হায়দার আলীও গ্রীস্মকালীন টমেটো চাষ শুরু করেন।
তিনি টমেটোর চারা রোপনের পর গাছগুলো ভালোই ছিল। কিন্তু কিছু গাছের পাতা কুঁকড়ে নষ্ট হয়ে গেছে।
তিনিও এ ব্যাপারে কৃষি বিভাগের সহায়তা চেয়ে পাননি বলে অভিযোগ করেন।
এ ব্যাপারে প্রশ্ন করা হলে উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা হারুন-অর-রশীদ বিষয়টি এড়িয়ে যান।
তিনি বলেন, হাইব্রিড প্রজাতির গ্রীস্মকালীন টমোটে চাষে বেশি লাভবান হওয়া যায়। এ অঞ্চলে এখন অনেকেই গ্রীস্মকালীন টমেটো চাষ শুরু করেছে।
তারা চাষিদের বিভিন্ন পরামর্শ দিয়ে থাকেন বলে দাবি করেন।