ব্যবস্থাপনা সম্পাদক নিয়োগ: আন্দোলনে বাসসকর্মীরা

জ্যেষ্ঠতা ও বিধি লঙ্ঘন করে ব্যবস্থাপনা সম্পাদক নিয়োগের অভিযোগে আন্দোলনে নেমেছে রাষ্ট্রায়ত্ত সংবাদ সংস্থা বাসসের কর্মকর্তা-কর্মচারীরা।

নিজস্ব প্রতিবেদকবিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকম
Published : 2 Sept 2014, 10:49 AM
Updated : 2 Sept 2014, 02:49 PM

বাসস অ্যাপ্লয়িজ ইউনিয়নের সদস্যরা মঙ্গলবার দুপুর ২টা ২০ মিনিট থেকে ব্যবস্থাপনা সম্পাদকের কক্ষের সামনে অবস্থান নিয়ে বিক্ষোভ শুরু করেন।

এ সময় আন্দোলনকারীরা কয়েকজন সাংবাদিককে অবরুদ্ধ করে রাখে বলে অভিযোগ উঠলেও আন্দোলনকারীরা তা অস্বীকার করেছেন।

ইউনিয়নের সাংগঠনিক সম্পাদক মোহাম্মদ আলী খান দুপুরে বিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকমকে বলেন, “ব্যবস্থাপনা সম্পাদক পদে জ্যেষ্ঠতা লঙ্ঘন করে মনোজ কান্তি রায়কে নিয়োগ দেয়া হয়েছে। আমরা এর প্রতিবাদে অবস্থান ধর্মঘট করছি।”

ইউনিয়নের সভাপতি কামাল উদ্দিন নিয়োগ বিধির বরাত দিয়ে বিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকমকে বলেন, বাসসের ব্যবস্থাপনা পরিচালক পদে নিয়োগ পেতে হলে সাংবাদিকতা পেশায় কাজ করার অন্তত ১৫ বছরের অভিজ্ঞতা থাকতে হবে।

“এ পদে সদ্য নিয়োগ পাওয়া মনোজ কান্তি রায়ের সে যোগ্যতা নাই। তাছাড়া উনি ১৯৯৭ সালে এখানে যোগ দেয়ার পর থেকেই কর্মচারীদের বিভিন্ন দাবির বিরুদ্ধে অবস্থান নিয়ে আসছেন। তার পরিবর্তে যে কাউকে এ পদে দিলে আমরা প্রতিবাদ কর্মসূচি প্রত্যাহার করব।”

দাবি আদায় না হওয়া পর্যন্ত ‘শান্তিপূর্ণ কর্মসূচি’ চলবে বলেও জানান কামাল।

বাসসের প্রধান সম্পাদক ও ব্যবস্থাপনা পরিচালক আবুল কালাম আজাদ মঙ্গলবার সকালে সংস্থার বিশেষ প্রতিনিধি মনোজ কান্তি রায়কে ব্যবস্থাপনা সম্পাদক নিয়োগ দেন।

ওই নিয়োগের আদেশ নোটিস আকারে প্রকাশের পরপরই সংস্থার জেনারেল (প্রশাসন, বিপণন, অর্থ ও আইটি ) শাখার কর্মীরা কার্যালয়ের বিদ্যুৎ ও পানি সংযোগ বিচ্ছিন্ন করে দিয়ে বিক্ষোভ শুরু করেন।

এক পর্যায়ে তারা প্রধান সম্পাদকের কক্ষও ঘেরাও করেন। তবে ওই সময়ে প্রধান সম্পাদক তার কক্ষে ছিলেন না।

বাসস কর্মীরা জানান,  দুপুরে ধর্মঘট শুরুর পর কয়েক ঘণ্টা সংবাদ সংস্থা হিসাবে বাসসের সেবাও বন্ধ থাকে।  

বাসসের বাংলা ওয়েবসাইটে দেখা যায়, বুধবার সন্ধ্যা সাড়ে ৭টা পর্যন্ত মাত্র তিনটি সংবাদ প্রকাশ করা হয়েছে। এর মধ্যে সর্বশেষ সংবাদটি প্রকাশের সময় দেখানো হয় বেলা ১২টা ৩৪ মিনিট। তবে সাড়ে ৭টার পর আবার স্বাভাবিক গতিতে সংবাদ প্রকাশ হতে থাকে। 

এ বিষয়ে দৃষ্টি আকর্ষণ করলে কামাল উদ্দিন বলেন, “কাজ বন্ধ রেখে প্রতিবাদ করার অভিযোগ সত্য নয়। যারা এগুলো বলে তারা মিথ্যুক।”

অবশ্য মোহাম্মদ আলী খান বলেন, বেলা ২টার পর থেকে সাড়ে ৩টা পর্যন্ত বিদ্যুৎ না থাকায় সেবা বন্ধ থাকে।

সন্ধ্যায় বাসস কার্যালয় ঘুরে দেখা যায়, আন্দোলনরত কর্মকর্তা-কর্মচারীরা ব্যবস্থাপনা সম্পাদকের কক্ষের সামনে বসে আছেন । মাঝে মাঝে তারা ‘মানি না, মানব না’ বলে শ্লোগান দিচ্ছেন।পাশেই নিজেদের দায়িত্ব পালন করছেন প্রতিষ্ঠানটির প্রধান প্রতিবেদকসহ সংবাদকর্মীরা।

প্রধান প্রতিবেদক মধুসূদন মণ্ডল জানান, বাসসের ব্যবস্থাপনা সম্পাদক পদটি দীর্ঘ নয় মাস শূন্য ছিল। ওই পদে নিয়োগ দেয়ার খবরে দুপুরে শুরু হয় আন্দোলন।

“এই ঘটনায় প্রতিষ্ঠানের সুনাম ও কাজ দুটোই ব্যহত হচ্ছে। বিক্ষোভের কারণে বাসসের সাংবাদিক এনামুল হক বাবুল, খায়রুজ্জামান কামাল, আলী সানোয়ার, মজিবুল জিতু, শহীদুল হকসহ ব্যাস্থাপনা সম্পাদক পদে সদ্য নিয়োগ পাওয়া মনোজ কান্তি রায় অবরুদ্ধ হয়ে আছেন। তাদের অন্তত তিনজন ডায়বেটিসের রোগী। অবরুদ্ধ থাকায় তারা দুপুরে খেতেও পারেননি।”

মধুসূদন মণ্ডল বলেন, “আমরা সবাই আসলে শান্তিপূর্ণ সমাধান চাই। আন্দোলনকারীরা নিজেদের ভুল বুঝলে সেটি সম্ভব হবে।”