নিরীক্ষা আপত্তির টাকা অনাদায়, অসন্তোষ সংসদীয় কমিটির

সরকারের নিরীক্ষা বিভাগের (অডিট বিভাগ) নির্দেশনা থাকার পরও দায়ী ব্যক্তিদের কাছ থেকে টাকা আদায় না করায় অর্থমন্ত্রণালয় ও স্থানীয় সরকার বিভাগের ওপর অসন্তোষ প্রকাশ করেছে সংসদীয় কমিটি।

নিজস্ব প্রতিবেদকবিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকম
Published : 27 August 2014, 05:18 PM
Updated : 27 August 2014, 05:18 PM

বুধবার সংসদ ভবনে ‍অনুষ্ঠিত সরকারি হিসাব সম্পর্কিত সংসদীয় কমিটির বৈঠকে দায়ী ব্যক্তিদের কাছ থেকে এ টাকা আদায় করে আগামী এক মাসের মধ্যে তা কমিটিকে জানাতে বলেছে।

নিরীক্ষা প্রতিবেদনের তথ্য অনুযায়ী, দুটি মন্ত্রণালয়ে নিরীক্ষা আপত্তির অনাদায়ী টাকার পরিমাণ প্রায় ৬৫ কোটি টাকা। অব্যবস্থাপনা, আত্মসাত ও অপচয়ের মাধ্যমে সরকারের এ রাজস্ব ক্ষতি হয়েছে।

বৈঠক শেষে কমিটির সদস্য রুস্তম আলী ফরাজী সাংবাদিকদের বলেন, “নিরীক্ষা বিভাগ আপত্তি জানাচ্ছে। কিন্তু মন্ত্রণালয় যথাযথ ব্যবস্থা নিচ্ছে না। এভাবে চলতে থাকলে দুর্নীতি উৎসাহিত হবে। সে জন্য সংসদীয় কমিটি দ্রুত আপত্তির টাকা আদায় করতে বলেছে।”

বৈঠকের কার্যপত্র থেকে জানা গেছে, সরকারের রাজস্ব ক্ষতির সঙ্গে জড়িত প্রতিষ্ঠানগুলো হলো- অর্থ মন্ত্রণালয়ের অভ্যন্তরীণ সম্পদ বিভাগের কাস্টমস এক্সাইজ ও ভ্যাট সার্কেল, ঢাকা ও চট্টগ্রাম কাস্টমস হাউজ ও কোম্পানি সার্কেল এবং স্থানীয় সরকার বিভাগের ঢাকা সিটি করপোরেশন।

নিরীক্ষা বিভাগ বলেছে, মন্ত্রণালয় টাকা আদায়ে ব্যবস্থা নেবে বললেও বাস্তবে বেশির ভাগ ক্ষেত্রে তারা তা করেনি।

কার্যপত্রে বলা হয়েছে, অর্থমন্ত্রণালয়ের সঙ্গে নিরীক্ষা আপত্তির জড়িত টাকার পরিমাণ ৫০ কোটি টাকার বেশি। এরমধ্যে কাস্টমস এক্সাইজ ও ভ্যাট সার্কেল ২০০৭-০৮ সালে ৮৭টি প্রতিষ্ঠানকে বিধিবহির্ভূত রেয়াত দেওয়ায় সরকারের ১৫ কোটি ৯৫ লাখ টাকার রাজস্ব ক্ষতি হয়েছে।

১০টি প্রতিষ্ঠানের প্রকৃত উৎপাদনের চেয়ে কম উৎপাদন দেখানোয় সরকারের ১৬ কোটি টাকা রাজস্ব ক্ষতি হয়েছে। ২০টি প্রতিষ্ঠানের পণ্য অনুমোদিত মূল্য অপেক্ষা কম দেখানোয় রাজস্ব ক্ষতি হয়েছে ৭ কোটি ৮২ লাখ টাকার।

২০০৬-০৭ অর্থবছরে ১৩টি কোম্পানির আয় সঠিকভাবে নিরূপণ না করায় সরকারের ১০ কোটি ৪৫ লাখ টাকার রাজস্ব ক্ষতি হয়েছে।

নিরীক্ষা প্রতিবেদন অনুযায়ী, ঢাকা সিটির বিভিন্ন প্রতিষ্ঠানে সরকারের রাজস্ব ক্ষতি হয়েছে প্রায় ১৫ কোটি টাকার মতো।

এরমধ্যে বিলবোর্ড স্থাপনকারী প্রতিষ্ঠানের কাছ থেকে বিজ্ঞাপনের উপর মূল্য সংযোজন কর (মুসক) বাবদ ৪২ লাখ টাকা আদায় না করায়, পশুরহাটের খাস আদায় হতে মুসক ও আয়কর বাবদ ৪০ লাখ টাকা সরকারি কোষাগারে জমা না হওয়ায় এবং  অস্থায়ী কোরবানী পশুরহাটের ইজারা মূল্য বাবদ ১ কোটি ৩০ লাখ জমা না হওয়ায় সরকারের রাজস্ব ক্ষতি হয়েছে।

সংসদীয় কমিটি গণদাবি আইন-১৯১৩ প্রয়োগ করে এ টাকা আদায় করতে বলেছে।

সভাপতি মহীউদ্দীন খান আলমগীরের সভাপতিত্বে অনুষ্ঠিত বৈঠকে কমিটির সদস্য আবদুস শহীদ, এ কে এম মাঈদুল ইসলাম, মোহাম্মদ আমান উল্লাহ, ইসহাক হোসেন তালুকদার, আ ফ ম রুহুল হক, আফছারুল আমীন, গোলাম দস্তগীর গাজী, মঈন উদ্দীন খান বাদল রুস্তম আলী ফরাজী অংশ নেন।