শার্শায় প্লাবন, আমন ক্ষেত নিমজ্জিত

উজানের ঢলে যশোরের শার্শা উপজেলার নিম্নাঞ্চলের বিস্তীর্ণ এলাকায় আমন ধানের জমি তলিয়ে গেছে।

আসাদুজ্জামান আসাদ, বেনাপোল প্রতিনিধিবিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকম
Published : 27 August 2014, 12:56 PM
Updated : 27 August 2014, 02:01 PM

শার্শার গোগা ও বেনাপোলের ধান্যখোলার সীমান্তবর্তী কোদলা, বেতনা ও ভারতের ইছামতি নদীর সংযোগ খালগুলোতে বিভিন্ন স্থানে মাছ চাষের জন্য বাঁধ দেয়ায় জলাবদ্ধতা ব্যাপক আকার ধারণ করেছে।

প্লাবিত এলাকাগুলোর মধ্যে রয়েছে বাহাদুরপুর, ডিহি, গোগা, পুটখালী ও কায়বা ইউনিয়ন।

বাহাদুরপুর ইউপি চেয়ারম্যান মিজানুর রহমান ও ডিহি ইউপি চেয়ারম্যান আব্দুল মান্নান বিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকমকে জানান, বাঁধ দিয়ে মাছ চাষের কারণে ভারতীয় পানি নিষ্কাশনের ব্যবস্থা থাকছে না। প্রতিদিন পানিতে তলিয়ে যাচ্ছে নিম্নাঞ্চল।

ভারতের সুটিয়া স্লুইস গেট দিয়ে পানি বাংলাদেশে প্রবেশ করার পর ধান্যখোলার ধর্মদাহ খাল দিয়ে বাহাদুরপুর বাওড় হয়ে সোনামুখীর বিলে পড়ছে। বিলের সরকারি জমিতে জবরদখল করে নির্মিত বেড়ি বাঁধ পানিপ্রবাহ বন্ধ করে দিয়েছে।

এছাড়া পশ্চিমবঙ্গের মেহেরানী সীমান্ত দিয়ে বাংলাদেশের শৈলগাড়ী ও দুবলার বিল হয়ে পাকশি ব্রিজের মাধ্যমে বনমান্ধার বিলে পানি প্রবেশ করে। কিন্তু ব্রিজের পশ্চিম পাশে একাধিক বাঁধ দেওয়ায় স্বাভাবিক প্রবাহ বন্ধ হয়ে গেছে।

শার্শার গোগা ইউপি চেয়ারম্যান আব্দুর রশিদ, পুটখালী ইউপি চেয়ারম্যান আব্দুল গফফার সরদার ও কায়বা ইউপি চেয়ারম্যান আব্দুল কুদ্দুস বলেন, ভারত-বাংলাদেশ সীমান্ত সংলগ্ন ইছামতি নদীর সংযোগ খালগুলোতে বাঁধ দেওয়ায় মাখলার বিল, হেলনার বিল, বল্লির বিলের শত শত হেক্টর আমন ধান যেকোনো সময় তলিয়ে যেতে পারে।

আমন চাষিদের আশঙ্কা বেনাপোলের বাহাদুরপুর, পুটখালী, শার্শা উপজেলার ডিহি, লক্ষণপুর শার্শা, নিজামপুর, গোগা, কায়বা ইউনিয়নের আমন ধানও তলিয়ে যেতে পারে।

এ ব্যাপারে ধান্যখোলা উত্তরপাড়ার আমন চাষি গোলম হোসেন, আয়নাল হক, ইয়ারব, জিল্লুর রহমান জানান, বেতনা, কোদলা ও ইছামতি নদীর প্রত্যেকটি সংযোগ খালে অবৈধ বাঁধ দিয়ে মাছ চাষ করার কারণে পানি নিষ্কাশন হচ্ছে না।

এছাড়া সোনামুখী, বনমান্দা ও মাখলার বিলে অপরিকল্পিতভাবে মাছের ঘের নির্মাণ করায় পানি নিষ্কাশনের পথ বন্ধ হয়ে গেছে।

এসব অবৈধ বাঁধ অপসারণ না হলে আমন ধান তলিয়ে যাবে বলে মনে করেন তারা।

শার্শা উপজেলা কৃষি সম্প্রসারণ কর্মকর্তা হিরক কুমার সরকার বিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকমকে জানান, এবার শার্শায় ১৯ হাজার ২৬০ হেক্টর জমিতে আমন চাষ করা হয়।

“ভারতীয় পানি বাংলাদেশের অভ্যন্তরে প্রবেশ করায় ফসল উৎপাদনের লক্ষ্যমাত্রায় ব্যাপক ক্ষতি হতে পারে। ধান্যখোলা ব্রিজ সংলগ্ন এলাকায় ১০/১২ বিঘা জমি তলিয়ে গেছে। তবে অন্যান্য এলাকায় পানি প্রবেশ করলেও সম্পূর্ণ জলমগ্ন হয়নি,” বলেন তিনি।

শার্শা উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা এটিএম শরিফুল ইসলাম জানান, “ভারতীয় পানির প্রভাবে আমন ফসল নষ্ট হচ্ছে শুনেছি। সীমান্তের বিভিন্ন পয়েন্ট দিয়ে ভারতীয় পানি প্রবেশ করছে। তবে আমন ধান জলমগ্নের কোনো খবর পাইনি।”

উন্মুক্ত বেতনা নদী, খাল-বিল ও কোদলা নদীতে বাঁধ দেয়ার ব্যাপারে তিনি বলেন, জরুরি ভিত্তিতে বাঁধ অপসারণের বিষয়টি জেলা প্রশাসককে জানানো হয়েছে।