জাহাঙ্গীরনগরে ১৬ শিক্ষার্থী বহিষ্কার

আধিপত্য বিস্তারকে কেন্দ্র করে জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়ের একটি হলে ছাত্রলীগের দুই পক্ষের সংঘর্ষ ও ভাংচুরের ঘটনায় সংগঠনের ১৬ কর্মীকে বিশ্ববিদ্যালয় থেকে সাময়িক বহিষ্কার করেছে কর্তৃপক্ষ।

জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয় প্রতিনিধিবিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকম
Published : 22 August 2014, 10:01 AM
Updated : 22 August 2014, 01:57 PM

বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রক্টর অধ্যাপক তপন কুমার সাহা জানান, বৃহস্পতিবার গভীর রাতে সিন্ডিকেটের জরুরি সভায় এ সিদ্ধান্ত হয়।

এছাড়া সংঘর্ষ ও ভাংচুরের ঘটনা খতিয়ে দেখতে নৃবিজ্ঞান বিভাগের অধ্যাপক রাশেদা আখতারকে প্রধান করে ৫ সদস্যের একটি তদন্ত কমিটি করেছে সিন্ডিকেট।

এই কমিটিকে সাত কর্মদিবসের মধ্যে প্রতিবেদন দিতে বলা হয়েছে বলে জানান প্রক্টর।

তিনি বলেন, তদন্ত কমিটির প্রতিবেদনের ভিত্তিতে সাময়িক বহিষ্কৃত ১৬ ছাত্রের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেয়া হবে।

বৃহস্পতিবার ভোর সাড়ে ৪টার দিকে বিশ্ববিদ্যালয়ের মওলানা ভাসানী হলে এ সংঘর্ষের ঘটনায় বিশ্ববিদ্যালয় শাখা ছাত্রলীগের কেন্দ্রীয় নেতা হুমায়ুন কবির, মওলানা ভাসানী হল শাখা সভাপতি শাকিল আহমেদ, সদস্য রকনুজ্জামান সবুজ, কর্মী আকিব, সুজন, জহির, মারুফ, আরিফসহ অন্তত ১০ জন আহত হন।

বহিষ্কৃত শিক্ষার্থীরা হলেন- বিশ্ববিদ্যালয় ছাত্রলীগের সাংগঠনিক সম্পাদক কে এম নূর নবী (বায়োটেকনোলজি বিভাগ, ৪০তম ব্যাচ), মওলানা ভাসানী হল শাখার সাধারণ সম্পাদক অনিন্দ্য বাড়ৈ (নৃবিজ্ঞান বিভাগ, ৩৮তম ব্যাচ), কর্মী মো. এ কে খায়রুজ্জামান ওরফে সঞ্চয় (ইতিহাস ৪১তম ব্যাচ), খন্দকার নাইম-উল ইসলাম ওরফে নইম (মার্কেটিং, ৪১তম ব্যাচ), কিশোর দাশ (পদার্থ বিজ্ঞান, ৪১তম ব্যাচ), সাদ্দাম হোসেন (উদ্ভিদ বিজ্ঞান, ৪১তম ব্যাচ), এম মাঈনুল হোসাইন ওরফে রাজন (নৃবিজ্ঞান, ৪১তম ব্যাচ), শান্ত কুমার নাথ (পরিবেশ বিজ্ঞান, ৪১তম ব্যাচ), শিহাব খন্দকার ওরফে শিহাব (পরিবেশ বিজ্ঞান), রাজ প্রসাদ ওরফে রাজ (পরিবেশ বিজ্ঞান, ৪২তম), তানভীর সজিব (মার্কেটিং, ৪২তম ব্যাচ), মো. আদেল আল নোমান (মার্কেটিং, ৪২তম ব্যাচ), রায়হান হাবীব (মার্কেটিং, ৪২তম ব্যাচ), মো. নিশাত রহমান (ফিন্যান্স এন্ড ব্যাংকিং, ৪২তম ব্যাচ), শাকিল উজ জামান ওরফে শাকিল (উদ্ভিদ বিজ্ঞান, ৪২তম ব্যাচ) ও ইশতিয়াক আহমেদ ওরফে বিজয় (রাসয়ন, ৩৯তম ব্যাচ)।

বহিষ্কৃতদের মধ্যে সঞ্চয় বিশ্ববিদ্যালয়ের মীর মশাররফ হোসেন হলের ছাত্র। বাকিরা মওলানা ভাসানী হলের আবাসিক শিক্ষার্থী।

ছাত্রলীগের ভাসানী হল শাখার দপ্তর সম্পাদক দিদার হোসেন অভিযোগ করেন, নূর নবী ও অনিন্দ্যের নেতৃত্বে তাদের সমর্থকরা ভোর সাড়ে ৪টার দিকে লোহার পাইপ ও ধারালো অস্ত্র নিয়ে সভাপতি শাকিলের সমর্থকদের কক্ষগুলোতে হামলা চালায়।

এ সময় তারা ২৫টি কক্ষ ভাঙচুর করে এবং হুমায়ুন, শাকিল ও রকনুজ্জামান সবুজকে কুপিয়ে জখম করে।

দিদার বলেন, “সামনে হলের নতুন কমিটি হওয়ার কথা। এ কারণে অনিন্দ্যর সমর্থকরা আমাদের হল থেকে বের করে দেয়ার চেষ্টা করে।”

অন্যদিকে নূর নবী বৃহস্পতিবার বিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকমকে বলেন, “শাকিলের সমর্থকরাই আগে হামলা করে। তারা অনিন্দ্যকে বের করে দেয়ার চেষ্টা করে।” 

এদিকে শুক্রবার ভোর রাতে পুলিশ দ্বিতীয় দফা ভাসানী হলে তল্লাশি চালায়।

এ সময় অনিন্দ্যের সমর্থকরা হলের পেছনের দেয়াল টপকে পালিয়ে যায়। পরে বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসনের উপস্থিতিতে অপর পক্ষের ছাত্রলীগ কর্মীরা হলে প্রবেশ করে বলে শিক্ষার্থীরা জানান।