শিশুদের সামনে প্রকাশ্যে ধূমপান করে সমালোচিত মন্ত্রী সৈয়দ মহসিন আলী সাংবাদিকদের হুমকি দিয়ে বলেছেন, ‘ত্রুটি’ ধরতেই জাতীয় সম্প্রচার নীতিমালা করা হয়েছে।
Published : 09 Aug 2014, 10:30 PM
শনিবার সিলেটে এক অনুষ্ঠানে সাংবাদিকদের হুমকি দিয়ে সমাজকল্যাণমন্ত্রী মহসিন বলেন, “সতর্ক হয়ে যান,বউ নিয়ে ঘরে ঘুমাতে পারবেন না।”
সাংবাদিকদের হুমকি দিয়ে বক্তৃতা করায় অনুষ্ঠান বর্জন করেন স্থানীয় সাংবাদিকরা।
জাতীয় সম্প্রচার নীতিমালা অনুমোদনের আগে গণমাধ্যমের স্বাধীনতার বিরুদ্ধে মন্তব্য করে সমালোচনার মুখে পড়েন এই মন্ত্রী।
নীতিমালাকে ইঙ্গিত করে তখন এক অনুষ্ঠানে তিনি বলেছিলেন, এমন আইন করা হচ্ছে যে সংবাদ মাধ্যমের কোনো স্বাধীনতাই থাকবে না।
সিলেট জেলা পরিষদ মিলনায়তনে সিলেট বিভাগীয় আন্তর্জাতিক আদিবাসী দিবস উদযাপন কমিটি আয়োজিত আলোচনা সভায় প্রধান অতিথির বক্তব্যে মহসিন আলী বলেন, “সাংবাদিকরা আর অন্যায় করতে পারবে না, আগেই বলছিলাম আমি...ত্রুটি ধরতে সম্প্রচার নীতিমালা হয়েছে। ওই দিন আমি কেবিনেটে থাকলে আরো শাস্তির ব্যবস্থা করতাম.. আরো রস বের করে দিতাম।
“এখন থেকে সতর্ক হয়ে যান, যা মনে হয় লিখে দিয়েন না।”
সাংবাদিকদের উদ্দেশ্য করে মন্ত্রী বলেন, “যা মনে হয় লিখে দিয়েন না। নইলে সিলেটের মানুষকে তোমাদের বিরুদ্ধে লেলিয়ে দিতে সময় লাগবে না। নইলে বিয়ে করে বউ নিয়ে ঘুমাতে পারবেন না।”
সাংবাদিকদের ‘খবিস’ গালি দিয়ে তিনি বলেন, “কোমর কিভাবে ভাঙতে হয় আমিও জানি। চরিত্রহীন, তোমরা টাকা খাও অন্যের, আর মহসিন আলীর বিরুদ্ধে লিখো। এটা আর হবে না, খুব সতর্ক থাকবে। ধরলে কিন্তু ছাড়া হবে না।”
মন্ত্রীর বক্তব্যের পর উপস্থিত সাংবাদিকরা অনুষ্ঠান বর্জন করে সেখান থেকে বেরিয়ে আসেন।
সংসদ সদস্য কেয়া চৌধুরী, সিলেট জেলা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক শফিকুর রহমান চৌধুরী, সদর উপজেলা পরিষদের চেয়ারম্যান আশফাক আহমদ এই অনুষ্ঠানে ছিলেন।
সমাজকল্যাণমন্ত্রী সভায় সাংবাদিকদের সমালোচনা করে আরো বলেন, “এখনকার বাচ্চারা সাংবাদিকরা বুঝবে কিতা, কয় ক্লাস পড়ছে, কলেজে দৌড়াদৌড়ি করছে। লিখে দিলা, জাতির কাছে ছোট করে দিলা। এগুলো মহসিন আলী পরোয়া করে না।”
মন্ত্রী হিসেবে শপথ নেয়ার পরপরই সিলেটে একটি স্কুলের অনুষ্ঠানে শিশুদের সামনে মহসিন আলীর ধূমপান করার ছবি প্রকাশের পর ব্যাপক সমালোচনার মুখে তিনি দুঃখ প্রকাশ করে আলোচনায় আসেন।
নিজের বক্তব্যের জন্য প্রধানমন্ত্রীর সাধুবাদ পেয়েছেন দাবি করে মন্ত্রী বলেন, “আমার নেত্রী (শেখ হাসিনা) লন্ডন থেকে এসে বলেছেন, ঠিক করেছেন মহসিন ভাই।
“ইনু হলেন ১৪ দলের নেতা, মহাজোটের নেতা। আর মহসিন আলী হলেন আওয়ামী লীগের তৃণমূলের নেতা। তিনি আওয়ামী লীগকে ডিফেন্ড করবেন না তো কী করবে। সাংবাদিকদের ঠিকই ঠ্যালা দিয়েছেন। তারা নারায়ণগঞ্জের ছবিটা বারবার দেখায় কেন?”