সাংবাদিক, অধিকারকর্মী ও সাবেক সংসদ সদস্য এ এন মাহফুজা খাতুন বেবী মওদুদকে স্মরণ করে একজন আওয়ামী লীগ নেতা বলেছেন, তিনি বেঁচে থাকলে সমাজকে আরো অনেক কিছু দিতে পারতেন।
Published : 08 Aug 2014, 05:53 PM
বঙ্গবন্ধু একাডেমি শুক্রবার রাজধানীর ডিপ্লোমা ইঞ্জিনিয়ারস ইনস্টিটিউশন মিলনায়তনে এই স্মরণ সভার আয়োজন করে।
সাবেক স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী সাহারা খাতুন বলেন, “তিনি খুব সাদাসিধে জীবন যাপন করতেন। মানুষকে খুব সহজে কাছে টেনে নিতে পারতেন।”
বেশ কিছুদিন ক্যান্সারে ভুগে গত ২৫ জুলাই রাজধানীর একটি হাসপাতালে মারা যান বেবী মওদুদ। তার বয়স হয়েছিল ৬৬ বছর।
তিনি বিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকমের সোশ্যাল অ্যাফেয়ার্স এডিটর হিসাবে দায়িত্ব পালন করে আসছিলেন।
এই আওয়ামী লীগ নেতা বলেন, বেবী মওদুদ কেবল প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার ঘনিষ্ট বন্ধুই ছিলেন না, প্রধানমন্ত্রীর লেখালেখিতেও তিনি সহযোগিতা করতেন।
“প্রধানমন্ত্রীর অনেক কাজেই বেবী মওদুদ সহযোগিতা করেছেন। বঙ্গবন্ধুর অসমাপ্ত আত্মজীবনী সম্পাদনায় ভূমিকার জন্য জাতি বেবী মওদুদকে মনে রাখবে।”
লেখালেখি, রাজনীতি, প্রগতিশীল আন্দোলনসহ নানা ক্ষেত্রে বিচরণ করলেও বেবী মওদুদের কাছে তার প্রথম পরিচয় ছিল- তিনি একজন সাংবাদিক।
১৯৬৭ সাল থেকে সাংবাদিকতা শুরুর পর দৈনিক সংবাদ, বিবিসি, দৈনিক ইত্তেফাক, বাসস ও সাপ্তাহিক বিচিত্রায় দীর্ঘদিন কাজ করেন তিনি। ২০০৯ সালে যোগ দেন বিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকমে।
সাহারা খাতুন বলেন, “বেবী মওদুদ একজন ভালো সাংবাদিক ছিলেন। তিনি বিচিত্রার সম্পাদক থাকার সময় তার অফিসে আমাকে নিয়ে গেছেন।”
তার আত্মার শান্তি কামনা করে আওয়ামী লীগ নেতা সুরঞ্জিত সেনগুপ্ত বলেন, সম্ভ্রান্ত পরিবারে জন্ম নেয়া বেবী মওদুদ ছাত্রজীবন থেকেই প্রগতিশীল রাজনীতিতে জড়িত ছিলেন।
মুক্তিযুদ্ধের আগে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থী থাকার দিনগুলোতেই পূর্ব পাকিস্তান ছাত্র ইউনিয়নের সদস্য হিসেবে ছাত্র রাজনীতিতে যুক্ত হন বেবী মওদুদ।
১৯৭১ সালে বাংলায় স্নাতকোত্তর ডিগ্রি পাওয়ার আগে ১৯৬৭-৬৮ সময়ে রোকেয়া হল ছাত্রী সংসদের সদস্য হিসাবেও দায়িত্ব পালন করেন তিনি।
নব্বইয়ের দশকে যু্দ্ধাপরাধীদের শাস্তির দাবিতে ঘাতক দালাল নির্মূল কমিটির আন্দোলনেও সোচ্চার ছিলেন বেবী মওদুদ।
ঢাকা মহানগর আওয়ামী লীগের সহ-সভাপতি ফয়েজ উদ্দিন মিয়া বলেন, “বেবী মওদুদকে কখনো কারো সঙ্গে ঝগড়া বা উচ্চস্বরে কথা বলতে দেখিনি। তিনি ছিলেন ভদ্র একজন মানুষ।”
বেবী মওদুদ জন্মগ্রহণ করেন ১৯৪৮ সালের ২৩ জুন, কলকাতায়। তার বাবা আবদুল মওদুদ ছিলেন একজন বিচারপতি। আর মায়ের নাম হেদায়েতুন নেসা।
নবম জাতীয় সংসদে তিনি আওয়ামী লীগের মনোনয়নে সংরক্ষিত নারী আসন থেকে সংসদ-সদস্য নির্বাচিত হন। সমাজ কল্যাণ মন্ত্রণালয় সম্পর্কিত সংসদীয় স্থায়ী কমিটি এবং লাইব্রেরি কমিটির সদস্য হিসাবেও তিনি দায়িত্ব পালন করেন।
আনুষ্ঠানিক নাম এ এন মাহফুজা খাতুন হলেও সবাই তাকে চিনতেন বেবী মওদুদ নামে। সাদামাটা পোশাকের স্নেহময়ী এই নারী সহকর্মীদের কাছে ছিলেন বেবী আপা।
অন্যদের মধ্যে ঢাকা মহানগর আওয়ামী লীগের সাবেক সভাপতি মোফাজ্জল হোসেন পল্টু স্মরণসভায় বক্তব্য দেন।