আওয়ামী লীগ নেতা একেএম এনামুল হক শামীম হত্যাচেষ্টা মামলায় স্ট্যামফোর্ড ইউনিভার্সিটির ট্রাস্টি বোর্ডের প্রেসিডেন্ট অধ্যাপক এম এ হান্নান ফিরোজকে গ্রেপ্তারের পর ৬ দিনের রিমান্ডে পাঠিয়েছে আদালত।
Published : 16 Jul 2014, 03:16 PM
ঢাকা মহানগর পুলিশের উপ কমিশনার (মিডিয়া) মাসুদুর রহমান জানান, বুধবার ভোর রাতে ধানমন্ডির বাসা থেকে হান্নান ফিরোজকে গ্রেপ্তার করা হয়।
এরপর দুপুরে তাকে আদালতে হাজির করে দশ দিনের রিমান্ডে নিয়ে জিজ্ঞাসাবদের আবেদন করেন এ মামলার তদন্ত কর্মকর্তা গোয়েন্দা পুলিশের পরিদর্শক শামসুদ্দিন সালেহ আহমেদ চৌধুরী।
অন্যদিকে হান্নানের পক্ষে জামিন চেয়ে আবেদন করেন ব্যারিস্টার রফিক-উল হক ও মোশাররফ হোসেন কাজল।
শুনানি শেষে ঢাকার মহানগর হাকিম হাসিবুল হক জামিন নাকচ করে ছয় দিনের রিমান্ড মঞ্জুর করেন।
রিমান্ড আবেদনে বলা হয়, এ মামলায় গ্রেপ্তার আসামি রানা হাওলাদর মঙ্গলবার আদালতে ১৬৪ ধারায় জবানবন্দি দেন। তিনি বলেছেন, শামীমকে হত্যাচেষ্টার প্রধান নির্দেশদাতা ও অর্থের যোগানদাতা হলেন স্ট্যামফোর্ড ইউনিভার্সিটির সাবেক উপাচার্য হান্নান ফিরোজ। এ কারণে তাকে হেফাজতে নিয়ে জিজ্ঞাসাবাদ করা জরুরি।
অন্যদিকে হান্নানের আইনজীবী বলেন, শামীম ও হান্নানের মধ্যে কী ‘দ্বন্দ্ব’ ছিল, তা না খুঁজে ‘অনির্ভরযোগ্য’ একটি সূত্র ধরে তাকে গ্রেপ্তর করা অন্যায় ও মানবতাবিরোধী।
ব্যারিস্টার রফিক-উল হক বলেন, “হান্নান ফিরোজ হার্ভার্ডে পড়াশুনা করা শিক্ষিত লোক।স্ট্যামফোর্ডের ১০ হাজার ছাত্রের অভিভবাবক। তার গ্রেপ্তারে এই নামী বিশ্ববিদ্যালয়টি অচল হয়ে পড়বে। তাছাড়া হান্নান ফিরোজের বয়স পুলিশ হেফাজতের অনুকূল নয়।”
৫৮ বছর বয়সী হান্নান ফিরোজ দীর্ঘদিন যুক্তরাজ্য ও যুক্তরাষ্ট্রে থাকার পর দেশে ফিরে স্ট্যামফোর্ড বিশ্ববিদ্যালয় প্রতিষ্ঠায় যুক্ত হন। তিনি ২০০২ থেকে ২০০৮ সাল পর্যন্ত এ বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্যের দায়িত্ব পালন করেন।
আওয়ামী লীগের কেন্দ্রীয় কার্যনির্বাহী সংসদের সদস্য ও ছাত্রলীগের সাবেক সভাপতি শামীমও স্ট্যামফোর্ড ইউনিভার্সিটির স্ট্রাস্টি বোর্ডের একজন সদস্য। গত ১৯ জুন সকালে অফিসে যাওয়ার সময় ধানমণ্ডি ইবনের সিনা হাসপাতালের পাশে তিনি হামলার শিকার হন।
হামলাকারীরা তার গাড়ি লক্ষ্য করে গুলি করলে বাঁ হাতে গুলিবিদ্ধ হন শামীম। তাকে প্রথমে বাংলাদেশ মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে এবং সেখান থেকে ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে পাঠানো হয়।
ঘটনার পরদিন ২০ জুন তার চাচা নাসির উদ্দিন বাদি হয়ে ধানমণ্ডি থানায় মামলা করেন। এরপর পুলিশ ও র্যাব গত ৭ ও ৮ জুলাই পৃথক অভিযানে সাতজনকে গ্রেপ্তার করে, যাদের মধ্যে রানা হাওলাদার মঙ্গলবার আদালতে ১৬৪ ধারায় স্বীকারোক্তিমূলক জবানবন্দি দেন।