এই লং মার্চ ক্ষমতার জন্য নয়: ফখরুল

তিস্তামুখে লং মার্চ ক্ষমতার পরিবর্তনের জন্য নয় জানিয়ে একে সেভাবে দেখতে ক্ষমতাসীন দলের প্রতি আহ্বান জানিয়েছেন বিএনপির ভারপ্রাপ্ত মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর।

নিজস্ব প্রতিবেদকবিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকম
Published : 20 April 2014, 03:10 PM
Updated : 20 April 2014, 07:02 PM

তিস্তা লং মার্চ নিয়ে ক্ষমতাসীনদের বিভিন্ন বক্তব্যের প্রতিক্রিয়ায় তিনি বলেছেন, “সরকারের অনেক মন্ত্রী আক্রমণাত্মক বক্তব্য রাখছেন।

“আমরা স্পষ্টভাষায় বলে দিতে চাই, বিএনপির লং মার্চ ক্ষমতায় যাওয়ার জন্য নয়, জনকল্যাণে নেয়া হয়েছে।”

তিস্তার পানির ন্যায্য হিস্যা ভারতের কাছ থেকে আদায়ের দাবিতে আগামী ২২ এপ্রিল ঢাকা থেকে দুদিনের লং মার্চ শুরু করবে বিএনপি। পরদিন নীলফামারীতে তিস্তা ব্যারেজে সমাবেশ করে তা শেষ হবে।

লং মার্চ শুরুর আগে রোববার জাতীয় প্রেসক্লাবে ‘তিস্তা নদীর পানি বণ্টন : প্রেক্ষিত বাংলাদেশ’ শীর্ষক গোল টেবিল বৈঠক করে বিএনপি।

ওই গোলটেবিলে বক্তব্যে ফখরুল তিস্তার পানি কমে যাওয়ার জন্য সরকারের পররাষ্ট্র নীতির ব্যর্থতাকে দায়ী করেন।  

অভিন্ন নদী তিস্তার পানি প্রত্যাহার করে ভারত উত্তর-পশ্চিমের রাজ্যগুলোতে নিয়ে যাচ্ছে বলেও অভিযোগ করেন তিনি।

ফখরুল বলেন, “অতি প্রেমের কারণেই তারা (সরকার) নিজের দেশের স্বার্থ বিকিয়ে দিয়ে সব ছেড়ে দিচ্ছে। আমাদের ছিটমহল সমস্যা, সীমান্তে বাংলাদেশি হত্যা বন্ধ হয়নি। তিস্তার পানি বণ্টন চুক্তিও করতে পারেনি সরকার।

“অথচ ভারতকে ট্রানজিট, চট্টগ্রাম বন্দর ব্যবহার, রামপালে কয়লাভিত্তিক ভারতীয় প্রকল্প, আসাম থেকে বাংলাদেশের ওপর দিয়ে ভারতের উত্তরাঞ্চলে বিদ্যুৎ গ্রিড নেয়াসহ নানা সুবিধা দিয়েছে আওয়ামী লীগ সরকার।”

“এ থেকে উত্তরণে একটি নির্দলীয় সরকারের অধীনে নির্বাচন দিতে এই সরকারকে বাধ্য করতে হবে। একই সঙ্গে আমাদের পানি সমস্যার বিষয়টি আন্তর্জাতিক ফোরামে তুলে ধরতে হবে,” বলেন বিএনপির মুখপাত্র।

ভারতের চলমান নির্বাচন নিয়ে ভাবিত নন জানিয়ে তিনি বলেন, “ভারতে নির্বাচনের দিকে চেয়ে আমাদের কোনো লাভ নেই। কারণ ভারতের সব সরকারই বাংলাদেশকে এক চোখে দেখে।  নিজেদের ছাড়া অন্য কারো কথা তারা চিন্তাই করে না।”

গোলটেবিলে সাবেক পানিসম্পদমন্ত্রী, বিএনপির ভাইস চেয়ারম্যান হাফিজ উদ্দিন আহমেদ বলেন, “এক তিস্তা নদীর পানি নিয়ে আমরা ২০ বছর পড়ে আছি। এখনো পানির সমাধান হয়নি। এটা আমাদের জীবন-মরণ সমস্যা। এই ইস্যুতে বিএনপিকে নেতৃত্ব দিতে হবে।”

তিস্তা অভিমুখে লং মার্চে সিপিবি নেতা মনজুরুল আহসান খানের বক্তব্যের প্রতিবাদ জানিয়ে তিনি বলেন, “তিনি বলেছেন, অতীতের সব সরকারের নতজানু নীতির কারণে পানির ন্যায্য হিস্যা থেকে আমরা বঞ্চিত হচ্ছি। ওই বক্তব্য বিএনপির জন্য প্রযোজ্য নয়।

“প্রেসিডেন্ট জিয়াউর রহমানই পদ্মা নদীর পানি প্রবাহের বিষয়টি প্রথম জাতিসংঘের তুলেছিলেন। এজন্য ১৯৭৭ সালে পদ্মা নদীর পানি চুক্তিতে গ্যারেন্টি ক্লজ সংযুক্ত করা হয়েছিল। আমি পানিসম্পদমন্ত্রী হিসেবে তিস্তা নদীর পানি সমস্যা সমাধানের উদ্যোগ নিয়েছিলাম।”

গোলটেবিল আলোচনায় মূল প্রবন্ধ পাঠ করেন প্রকৌশলী আ ন হ আখতার হোসেন ও প্রকৌশল বিশ্ববিদ্যালয়ের অধ্যাপক সাব্বির মোস্তফা খান।

বক্তব্য রাখেন বিএনপি নেতা ইকবাল হাসান মাহমুদ টুকু, রুহুল কবির রিজভী, পানি বিশেষজ্ঞ এস আই খান, মাহফুজ উল্লাহ, মোস্তফা কামাল মজুমদার, সাবেক রাষ্ট্রদূত মাসুদ আজিজ, ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের আইন বিভাগের অধ্যাপক আসিফ নজরুল প্রমুখ।