শীতকালীন অবকাশের আগে শেষ কার্যদিবসে যুদ্ধাপরাধী আব্দুল কাদের মোল্লার ফাঁসির রায় বাস্তবায়নের বাধা কাটবে কি-না তা জানতে সবার নজর এখন সুপ্রিম কোর্টের দিকে।
Published : 12 Dec 2013, 08:57 AM
সর্বোচ্চ আদালতের ফাঁসির রায় পুনর্বিবেচনায় (রিভিউ) কাদের মোল্লার আবেদনের গ্রহণযোগ্যতা প্রশ্নে মুলতবি শুনানির পর বৃহস্পতিবার সকালে মূল আবেদনের শুনানি চলছে আপিল বিভাগের পূর্ণাঙ্গ বেঞ্চে।
সকাল ৯টা ২০ মিনিটে শুনানির শুরুতেই কাদের মোল্লার আইনজীবী ব্যারিস্টার আবদুর রাজ্জাক এই আবেদনের গ্রহণযোগ্যতার বিষয়ে যুক্তি উপস্থাপন শুরু করেন।
পরে প্রধান বিচারপতি মো. মোজাম্মেল হোসেন তাকে মূল আবেদনের শুনানি (অন মেরিট) শুরু করতে বলেন।
এ সময় ব্যারিস্টার রাজ্জাক বলেন, রিভিউয়ের গ্রহণযোগ্যতার (মেনটেইনেবল কি-না) বিষয়ে আদালত এখনো কোনো আদেশ দেয়নি। তার আগেই মূল রিভিউয়ের শুনানি কীভাবে হবে?
এ পর্যায়ে বিচারক বলেন, “রিভিউ মেনটেইনেবল না- এটা আমরা বলছি না। আপনি যদি বলেন এটা ‘মেনটেইনেবল’, সে বিষয়েও কোনো তর্কে যাচ্ছি না। আপনাকে অন মেরিট শুনানির সুযোগ দিচ্ছি। আপনি গ্রাউন্ড বলেন।”
এরপর ফাঁসির রায় পুনর্বিবেচনার (রিভিউ) বিষয়ে যুক্তি দিতে শুরু করেন কাদের মোল্লার আইনজীবী।
অতিরিক্ত অ্যাটর্নি জেনারেল এম কে রহমান বিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকমকে বলেন, “মেনটেইনেবিলিটি নিয়ে শুনানির পর এখন রিভিউয়ের ওপর অন মেরিট শুনানি হচ্ছে।”
বিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকম প্রতিবেদক সুলাইমান নিলয় জানান, সকাল থেকেই সুপ্রিম কোর্ট এলাকায় নেয়া হয়েছে কড়া নিরাপত্তা।
আদালতে প্রবেশের প্রতিটি ফটকেই পুলিশ ও র্যাব সদস্যরা সতর্ক অবস্থান নিয়েছেন। আদালত প্রাঙ্গণের ভেতরেও উল্লেখযোগ্য সংখ্যক পুলিশ ও গোয়েন্দা সদস্যকে দেখা গেছে।
সকাল থেকে সবাইকে তল্লাশি করে আদালত প্রাঙ্গণে ঢুকতে দেয়া হচ্ছে। শুনানির প্রথম দিন বুধবারও নিরাপত্তার এতোটা কড়াকড়ি ছিল না বলে সুপ্রিম কোর্ট প্রতিবেদক নিলয় জানান।
একেবারে শেষ মুহূর্তে চেম্বার জজের আদেশে ফাঁসি কার্যকরের প্রক্রিয়া স্থগিত হয়ে যাওয়ার পর বুধবার কাদের মোল্লার রিভিউ আবেদনের বিষয়ে শুনানি শুরু হয়।
পরবর্তী আদেশ না দেয়া পর্যন্ত কাদের মোল্লার ফাঁসি কার্যকরের ওপর চেম্বার আদালতের দেয়া স্থগিতাদেশ বহাল থাকছে বলেও সুপ্রিম কোর্টের আপিল বিভাগ জানায়।
এদিকে শীতকালীন অবকাশের আগে বৃহস্পতিবারই আপিল বিভাগের শেষ কার্যদিবস। এর মধ্যেই বিষয়টি নিষ্পত্তি না হলে রায় কার্যকরের বিষয়টি আগামী বছর পর্যন্ত ঝুলে যেতে পারে বলে আদালতের কাছে আশঙ্কা প্রকাশ করেন অ্যাটর্নি জেনারেল মাহবুবে আলম।
৫ ফেব্রুয়ারি জামায়াতে ইসলামীর সহকারী সেক্রেটারি জেনারেল কাদের মোল্লাকে আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনাল যাবজ্জীবন কারাদণ্ড দেয়ার পর গত ১৭ সেপ্টেম্বর আপিল বিভাগ সাজা বাড়িয়ে ফাঁসির আদেশ দেয়।
এর আড়াই মাসের মাথায় পূর্ণাঙ্গ রায় প্রকাশ হলে সরকারের পক্ষ থেকে মঙ্গলবার দণ্ড কার্যকরের উদ্যোগ নেয়া হয়। কিন্তু আসামিপক্ষের আবেদনে সুপ্রিম কোর্টের চেম্বার জজ সৈয়দ মাহমুদ হোসেন রাতে এক আকস্মিক আদেশে ফাঁসি কার্যকর বুধবার সকাল সাড়ে ১০টা পর্যন্ত স্থগিত করে দেন।