বর্তমান সময়ে ইন্টারনেট ও টেলিফোনের মাধ্যমে সৃষ্ট বন্ধুত্ব ও সম্পর্ক বাস্তব জীবনে সংকট তৈরি করছে বলে মন্তব্য করেছেন মনোরোগ বিশেষজ্ঞ ও সাহিত্যিক আনোয়ারা সৈয়দ হক।
Published : 23 Aug 2013, 09:50 PM
শুক্রবার বিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকম আয়োজিত এক আলোচনা অনুষ্ঠানে তিনি বাংলা মাধ্যমের শিক্ষার্থীদের সঙ্গে ইংরেজি মাধ্যমের শিক্ষার্থীদের ‘দূরত্বের’ সমাধানের ওপরও তাগিদ দেন।
তিনি বলেন, “সাহিত্য থেকে বিচ্যুত হলে মানুষের মধ্যে এক ধরনের শূন্যতা সৃষ্টি হয়।সেটা অনেকে পূরণ করছে ফেইসবুক আর ড্রাগস দিয়ে।”
ঐশী মাদকাসক্ত বলে দাবি করছে পুলিশ।
সম্প্রতি রাজধানীতে স্ত্রীসহ এক পুলিশ কর্মকর্তা হত্যার ঘটনায় তাদের কিশোরী মেয়ে ঐশী রহমানকে গ্রেপ্তার করার সময় পুলিশের ভূমিকা এবং তাকে নিয়ে সংবাদ প্রকাশের ক্ষেত্রে সাংবাদিকদের আচরণ প্রশ্নবিদ্ধ হওয়ার প্রেক্ষাপটে ‘সংবাদে ঐশী: পুলিশ ও গণমাধ্যমের আচরণ’ শীর্ষক আলোচনা অনুষ্ঠানের আয়োজন করে বিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকম।
আলোচিত কিশোরী রাজধানীর অক্সফোর্ড ইন্টারন্যাশনাল স্কুলের ‘ও’ লেভেলের শিক্ষার্থী।
নিজের কয়েকজন রোগীর উদাহরণ টেনে আনোয়ারা হক বলেন, “ইংরজি মাধ্যমের শিক্ষার্থীরা দেশীয় সাহিত্য-সংস্কৃতি চর্চা না করায় তাদের বাবা-মার সঙ্গে সাংস্কৃতিক দূরত্ব সৃষ্টি হচ্ছে।”
রাজধানীর ইব্রাহিম মেডিকেল কলেজের অধ্যাপক আনোয়ারা সৈয়দ হক বলেন, “ইংরেজি মাধ্যমের শিক্ষার্থীদের অভিভাবকরা বাড়িতে তাদের সন্তানদের বাংলায় কথা বলতে নিরুৎসাহিত করেন।”
বক্তব্যের এক পর্যায়ে উত্তেজিত কণ্ঠে তিনি বলেন, “ইংরেজি মাধ্যমের ছেলে-মেয়েদের কাছ থেকে দেশ-জাতি কিছু পেতে পারে না। তারা দেশের সংস্কৃতি মানছে না। তাদের কাছ থেকে জাতি কিছু আশা করতে পারছে না।”
“ছুটিতে স্কুলের পক্ষ থেকে অভিভাবকদের সাহিত্যের বই কিনে দেয়ার জন্য বলা হয়। কিন্তু তারা একটি বইও কিনে দেন না।
“ফলে ইংরেজি মাধ্যমের শিক্ষার্থীরা বাংলা বলতে পারে না, বললেও ভুল বলে। বাংলা পরীক্ষায় খারাপ করে।কারণ তারা বাংলা বই পড়ে না।”
ইংরেজি মাধ্যমের শিক্ষার্থীদের সঙ্গে বাংলা মাধ্যমের শিক্ষার্থীদের ব্যবধান রয়েছে মন্তব্য করে সাবেক সহকারী জজ সেবা তাসমিন হক বলেন, “ইতোমধ্যে সমাজে তারা দুটো দলে ভাগ হয়ে গেছে।”
ইংরেজি মাধ্যমের অনেক স্কুলে স্থান স্বল্পতার সমালোচনা করেন সাংসদ ফজিলাতুন্নেছা বাপ্পি।
সাংবাদিক ও শিশু অধিকার বিশেষজ্ঞ আফসান চৌধুরী, সাংসদ বেবী মওদুদ, আইনজীবী ইউএম হাবিবুন নিসা, মনোরোগ পরামর্শক ফরিদা আক্তার, ইউনিসেফের যোগাযোগ বিশেষজ্ঞ এ এম শাকিল ফয়জুল্লা এবং হ্যালো ডট বিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকমের শিশু সাংবাদিক সামিন ইয়াসার প্রিয়মও এই আলোচনায় অংশ নেন।