খুলশী থানার এসআই মো. আমীর বিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকমকে জানান, রোববার ভোরের দিকে লালখানবাজার টাংকির পাহাড় এলাকায় আকবরের কলোনিতে এ ঘটনা ঘটে।
স্থানীয়দের বরাত দিয়ে তিনি জানান, টানা বৃষ্টিতে পাহাড়ের এক পাশের মাটি নরম হয়ে সেহেরির পর ও ভোর ৫টার মধ্যে কোনো এক সময় নিচে ঘরের ওপর ধসে পড়ে। এতে ফাতেমা বেগম (৪২) ও তার মেয়ে কুলসুম আক্তার (১৭) মাটিচাপা পড়েন।
নিহত ফাতেমা নগরীর ফকিরহাট এলাকায় ফোরএস গার্মেন্টে কাজ করতেন।
উদ্ধারকর্মীরা পৌঁছানোর আগেই এলাকাবাসী মাটির স্তূপ থেকে মা ও মেয়েকে উদ্ধার করেন বলে জানান তিনি।
আগ্রাবাদ ফায়ার সার্ভিসের উপ সহকারী পরিচালক জসীম উদ্দিন জানান, আকবরের কলোনির একেবারে শেষ সীমানায় ফাতেমাদের ঘর। এর পাশে পাহাড়ের প্রায় ২০ ফুট উঁচু আরেকটি স্তরে বেলায়েতের কলোনি।
“ভোরে বেলায়েতের কলোনির শেষ সীমায় পাহাড়ের প্রায় ২০ ফুট চওড়া একটি অংশ ধসে ফাতেমাদের ঘরের ওপর পড়ে।”
প্রতিবেশী শাহনাজ বেগম বিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকমকে জানান, ভোরে পাহাড় ধসে পড়ার বিকট শব্দের পরপরই তিনি ফাতেমার চিৎকার শুনেছিলেন। কিন্তু মাটি সরিয়ে বের করার আগেই মা-মেয়ের মৃত্যু হয়।
ঘটনাস্থলে গিয়ে দেখা যায়, ছোট আকারের টিনের চাল দেয়া আধাপাকা ঘরটির পুরোটাই মাটিচাপা পড়েছে। পাশেই খাড়া পাহাড়ের নিচে আরও কয়েকটি ঘর ঝুঁকিপূর্ণ অবস্থায় রয়েছে।
চট্টগ্রাম আবহাওয়া অফিস জানায়, শনিবার রাত ৯টা থেকে রোববার সকাল ৯টা পর্যন্ত মোট ৬৫ দশমিক ৯ মিলিমিটার বৃষ্টি রেকর্ড করা হয়েছে।
চট্টগ্রাম জেলা প্রশাসনের হিসাবে নগরীর ১২টি পাহাড়ে একহাজারের মতো পরিবার ঝুঁকিপূর্ণভাবে বসবাস করছে। এছাড়া পাহাড়গুলোর ঢালে বা আশেপাশে বসবাস করছে আরো ৫০ হাজারের মতো মানুষ।
রেলওয়ে, চট্টগ্রাম সিটি কর্পোরেশন, ওয়াসা ও গণপূর্ত বিভাগের মালিকানাধীন এসব পাহাড়ের আশেপাশে বস্তি বা টিনশেড কলোনিতে এসব পরিবারের বসবাস। বিভিন্ন সময়ে এসব পরিবারকে নিরাপদ স্থানে সরিয়ে নেয়ার উদ্যোগ নেয়া হলেও তাতে সফল হয়নি কর্তৃপক্ষ। ফলে প্রতি বছরই বর্ষায় পাহাড় ধসে হতাহতের ঘটনা ঘটে।
গত বছর ১৭ জুন নগরীর আকবর শাহসহ তিনটি এলাকায় পাহাড় ধসে মারা যায় ২০ জন। ২০১১ সালের ১ জুলাই টাইগারপাস এলাকার বাটালি হিলের রিটেইনিং দেয়াল ধসে ১৭ জনের মৃত্যু হয়। আর ২০০৭ সালের ১১ জুন পাহাড় ধসে ১২৭ জন নিহত হন।