দুর্বল হয়ে পড়া ঘূর্ণিঝড় ‘মহাসেন’ তেমন কোনো ক্ষয়ক্ষতি ছাড়াই চট্টগ্রাম উপকূল অতিক্রম করায় উদ্বেগ কেটেছে চট্টগ্রামবাসীর।
Published : 16 May 2013, 01:19 PM
আশ্রয়কেন্দ্র থেকে ঘরে ফিরতে শুরু করেছে চট্টগ্রাম জেলার উপকূলীয় অঞ্চলের লোকজন।
আবহাওয়া অধিদপ্তর জানিয়েছে, বৃষ্টি ঝরিয়ে দুর্বল মহাসেন স্থল নিম্নচাপে পরিণত হয়েছে, যা বর্তমানে অবস্থান করছে পার্বত্য চট্টগ্রাম ও সংলগ্ন এলাকায়।
ঝুঁকি কমে আসায় দেশের সমুদ্রবন্দরগুলোকে বিপদ সংকেত নামিয়ে তিন নম্বর সতর্কতা সংকেত দেখিয়ে যেতে বলেছে আবহাওয়া অধিদপ্তর।
চট্টগ্রামের শাহ আমানত বিমানবন্দরে শুক্রবার থেকে বিমান চলাচল শুরু হবে বলে কর্তৃপক্ষ জানিয়েছে।
চট্টগ্রাম বন্দর এরই মধ্যে পণ্য পরিবহন শুরু হয়েছে। শুক্রবার থেকে জাহাজ জেটিতে ভিড়বে বলে বন্দর কর্তৃপক্ষ জানিয়েছে।
চট্টগ্রামে ঘূর্ণিঝড় প্রস্তুতি কমিটির আহবায়ক ও জেলার অতিরিক্ত প্রশাসক (সার্বিক) এস এম আবদুল কাদের বিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকমকে বলেন, চট্টগ্রাম ঝুঁকিমুক্ত হওয়ার পর নগরীসহ উপজেলার বিভিন্ন আশ্রয়কেন্দ্র ছাড়তে শুরু করেছে লোকজন।
তবে ঘূর্ণিঝড় পরবর্তী সময়ে চট্টগ্রামে ভারি বৃষ্টিপাত এবং ভূমি ধসের শংকা রয়েছে আবহাওয়ার পূর্বাভাসে।
এছাড়া উপকূলীয় এলাকায় থেমে থেমে মাঝারি ধরণের বাতাস বইছে, হালকা বৃষ্টিও হচ্ছে।
সন্দ্বীপ উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা নূর-ই খাজা আলামীন বিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকমকে বলেন, উপজেলার উড়ির চরে ঘূর্নিঝড় আঘাত হানলেও অন্যান্য স্থানে কোনো ক্ষতি হয়নি।
উড়ির চরে কয়েকটি বাড়িঘর জোয়ারের পানিতে ধসে গেছে উল্লেখ করে তিনি বলেন, "আমরা অনেকটাই বিপদমুক্ত বলে মনে করছি।"
তিনি জানান, সন্দ্বীপের উড়ির চরসহ বেশকয়েকটি স্থানে সাতশ'র মতো কাঁচা ঘর ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে। সন্দীপের ঝড়ের আঘাতে প্রায় পাঁচ হাজার পরিবার ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে বলে তিনি জানান। তবে তাৎক্ষনিকভাবে তিনি ক্ষয়ক্ষতির বিবরণ জানাতে পারেন নি।
উপকূলীয় উপজেলা বাঁশখালীর ইউএনও সাব্বির কামাল বলেন, খানখানাবাদ ও ছনুয়া ইউনিয়নের কয়েকটি স্থানে পানি ঢুকলেও তেমন কোন ক্ষয়ক্ষতির খবর পাওয়া যায়নি। লোকজনও আশ্রয়কেন্দ্র ছাড়তে শুরু করেছে।
বাঁশখালীর কুতুকখালীতে অবস্থিত একটি সাইক্লোন সেন্টারে বৃহস্পতিবার দুপুরে আশ্রয় নেয়া ৪৫ বছর বয়েসী এক মহিলা অসুস্থ হয়ে মারা যান বলে ইউএনও জানান।
আনোয়ারা উপজেলায় জোয়ারের সময় পানি কয়েক ফুট উঁচু হলেও কোথাও তেমন ক্ষতি হয়নি বলে ইউএনও ফারুক হোসেন জানিয়েছেন।
সীতাকুণ্ড উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা শাহীন ইমরুল বলেন, ঝুঁকি কমে যাওয়ায় লোকজন আশ্রয়কেন্দ্র ছেড়ে নিজেদের বাড়িঘরে যেতে শুরু করেছে।
এছাড়া নগরীর পতেঙ্গা, হালিশহর, কাট্টলীসহ বিভিন্ন উপকূলীয় এলাকার সাইক্লোন সেন্টারে আশ্রয় নেয়া লোকজন বিকেল থেকেই বাড়ির উদ্দেশ্যে যেতে শুরু করেছে।
সন্ধ্যা ছয়টা থেকে চট্টগ্রাম সিটি করপেরেশনের উদ্যোগে তাদের স্ব স্ব স্থানে পাঠানোর ব্যবস্থা করা হয়েছে বলে জানান করপোরেশনের জনসংযোগ কর্মকর্তা সাইফুদ্দিন আহমেদ।