সাভারে ভবন ধসের ২৪ ঘণ্টা পরও ধ্বংসস্তূপের নিচে আটকা পড়ে আছেন অনেক মানুষ, উদ্ধারকর্মীদের কাছে যারা ক্ষীণ কণ্ঠে জানাচ্ছেন উদ্ধারের আকুতি।
Published : 25 Apr 2013, 06:13 AM
উদ্ধার পেতে ধ্বংসস্তূপে চাপা পড়া হাত-পা কেটে ফেলতেও অনুরোধ করছেন কেউ কেউ। এদেরই একজন নারী শ্রমিক পাখিকে (৩০) উদ্ধার করা হয়েছে দুই পা কেটে।
এনাম মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের আইসিইউতে ভর্তি পাখি বিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকমকে জানান, ভবন ধসে পড়ার সময় তিনি ছয় তলায় ছিলেন। একটি দেয়ালের নিচে তার দুই পা চাপা পড়ে। উদ্ধারকর্মীদের দেখতে পেয়ে প্রয়োজন হলে তার দুই পা কেটে হলেও উদ্ধারের জন্য আকুতি জানান তিনি।
ওই ওয়ার্ডের একজন চিকিৎসক জানান, পরে বৃহস্পতিবার বেলা ১২টার দিকে পাখির দুই পা কেটে তাকে হাসপাতালে আনা হয়। হাসপাতালে অপারেশনের পর তাকে আইসিইউতে রাখা হয়েছে।
পাখি জানান, তার স্বামীর নাম জাহাঙ্গির। দুটি সন্তান নিয়ে তারা সাভারের সবুজবাগে থাকেন।
বৃহস্পতিবার ভোর থেকেই নিখোঁজ স্বজনদের খোঁজে সাভার বাসস্ট্যান্ড এলাকায় ধসে পড়া রানা প্লাজার সামনে ভিড় করেছেন বহু মানুষ। কিন্তু পর্যাপ্ত যন্ত্রপাতি না থাকায় উদ্ধার কার্যক্রম চলে ধীরগতিতে। আটকে পড়া অনেকের কাছে পৌঁছতে পারলেও তাদের উদ্ধার করা যাচ্ছে না।
বৃহস্পতিবার ভবনের ধ্বংসস্তূপ থেকে কণ্ঠ শুনতে পেরে হামাগুড়ি দিয়ে কাছাকাছি যান উদ্ধারকর্মী হারুনুর রশীদ। তিনি জানান, ভেতরে একটি বিমের নিচে কোমর পর্যন্ত চাপা পড়ে আছে সুরুজ নামের একজন। ক্ষীণ কণ্ঠে তিনি জানাচ্ছেন।
হারুনুর রশীদ জানান, পাশেই ধসে পড়া ছাদের নিচে চাপা পড়া আলতাফের দেহেও প্রাণ আছে। তাদের পেছনেও আরো কয়েকজনের কণ্ঠ শোনা যাচ্ছে।
উদ্ধার তৎপরতার দ্বিতীয় দিনে ধ্বংসস্তূপ থেকে অনেকের নিথর দেহের অংশবিশেষ বেরিয়ে আসছে। কংক্রিটের বড় টুকরো সরিয়ে লাশগুলো উদ্ধার করতেও গলদঘর্ম হতে হচ্ছে উদ্ধারকর্মীদের।
মঙ্গলবার ফাটল ধরার পর বুধবার সকালে ধসে পড়ে সাভার বাসস্ট্যান্ড এলাকার নয় তলা ‘রানা প্লাজা’, যার বিভিন্ন তলায় পাঁচটি পোশাক কারখানায় প্রায় পাঁচ হাজার শ্রমিক কাজ করছিলেন ঘটনার সময়।
দেশের ইতিহাসে ভয়াবহতম ভবন ধসের ঘটনায় নিহতের সংখ্যা দুইশ' ছাড়িয়েছে।