হরতালের শুরুতেই বগুড়া শহরে পুলিশ ফাঁড়িতে হামলা চালিয়ে রেল স্টেশনে আগুন দিয়ে ব্যাপক তাণ্ডব শুরু করেছে জামায়াত জামায়াত-শিবির কর্মীরা।
Published : 03 Mar 2013, 01:29 AM
সদর থানার এস আই লুৎফর রহমান জানান, ভোর ৫টার পর জামায়াত-শিবির কর্মীদের কয়েকটি দল শহরের নারুলি, ফুলবাড়ী, স্টেডিয়াম ও মোকামতলা ফাঁড়িতে হামলা চালিয়ে ভাংচুর শুরু করে।
ব্যাপক হামলার মুখে এসব ফাঁড়ির দায়িত্বরত পুলিশ সদস্যরা সরে যেতে বাধ্য হন।
এর পরপরই শিবগঞ্জ, শাহজাহানপুর,বগুড়া জিরোপয়েন্ট সাত মাথাসহ বিভিন্ন এলাকায় আইন শৃঙ্খলা বাহিনীর সঙ্গে জামায়াত-শিবির কর্মীদের বিক্ষিপ্ত সংঘর্ষ শুরু হয়।
উদ্ভূত পরিস্থিতিতে পৌর এলাকায় সকাল ৬টা থেকে অনির্দিষ্টকালের জন্য ১৪৪ ধারা জারি করা হয়েছে। শহরে মাইকিং করে ১৪৪ ধারা জারি এবং সব ধরনের জমায়েত নিষিদ্ধ থাকার বিষয়টি জানানো হচ্ছে বলে আমাদের বগুড়া প্রতিনিধি জানান।
১৪৪ ধারার মধ্যেই সাড়ে ৬টার দিকে শহরের কলিতলা এলাকায় জেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি মমতাজউদ্দিনের বাড়িতে হামলা চালিয়ে আগ্নিসংযোগ করে হরতালকারীরা।
জেলা আওয়ামী লীগের আইন বিষয়ক সম্পাদক অ্যাডভোকেট আমান উল্লাহ বিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকমকে জানান, জামায়াত শিবিরের কয়েকশ কর্মী স্লোগান দিতে দিতে এসে একতলা ওই বাড়িতে চড়াও হয়্ তারা প্রথমে ভাংচুরের চেষ্টা করে এবং তারপর আগুন দিয়ে সরে যায়।
তবে আশেপাশের এলাকার লোকজন দ্রুত এগিয়ে এসে আগুন নিভিয়ে ফেলেন।
সকাল ৮টার দিকে হামলা হয় বগুড়া রেলওয়ে স্টেশনে।
স্টেশন মাস্টার বেলাল হোসেন জানান, কয়েক শ’ লোক লাঠিসোটা নিয়ে স্টেশনে চড়াও হয় এবং ভাংচুর শুরু করে। তারা অফিসের কাগজপত্র পুড়িয়ে দেয় এবং প্ল্যাটফর্মে আগুন দেয়।
বগুড়া স্টেশন হয়ে ট্রেন চলাচল বন্ধ রাখা হয়েছে বলে স্টেশন মাস্টার জানান।
শহরের ঠনঠনিয়ায় বগুড়া ফায়ার সার্ভিসের স্টেশন অফিসার সোহেল রানা বিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকমকে বলেন, “আমরা রেলওয়ে স্টেশনসহ বিভিন্ন স্থানে আগুন দেয়ার খবর পেয়েছি। কিন্তু হরতালকারীরা রাস্তায় বড় বড় গাছের গুঁড়ি ফেলে ব্যারিকেড দিয়ে রেখেছে। আমাদের গাড়িগুলোতে যেতে দেয়া হচ্ছে না। আমাদের নানাভাবে হুমকিও দেয়া হচ্ছে।”
সদর থানার উপ পরিদর্শক লুৎফর রহমান বলেন, “পুলিশের পাশাপাশি বিজিবি সদস্যরাও মাঠে আছেন। আমরা আইন-শৃঙ্খলা পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণের যথাসাধ্য চেষ্টা করছি।”
যুদ্ধাপরাধের দায়ে জামায়াতের নায়েবে আমির দেলাওয়ার হোসাইন সাঈদীর ফাঁসির রায় আসার পর গত বৃহস্পতিবার সারা দেশে ব্যাপক তাণ্ডব চালায় জামায়াত শিবির কর্মীরা। রায় প্রত্যাখ্যান করে রবি ও সোমবার সারা দেশে ৪৮ ঘণ্টার এই হরতাল ডাকা হয়।
বৃহস্পতিবার জামায়াতের সহিংসতার সময় গুলিতে হতাহতের ঘটনায় মঙ্গলবারও সারা দেশে সকাল-সন্ধ্যা হরতাল ডেকেছে জামায়াতের প্রধান শরিক বিএনপি।