বর্ষা মৌসুমে আসা পদ্মার পানি সংরক্ষণ করে দক্ষিণ-পশ্চিমাঞ্চলের ১৯ জেলায় সেচ ব্যবস্থা নিশ্চিত করা ও ১৬০ মেগাওয়াট জলবিদ্যুৎ উৎপাদনের লক্ষ্য নিয়ে রাজবাড়ির পাংশায় গঙ্গা ব্যারেজ নির্মাণের স্থান চিহ্নিত করা হয়েছে।
Published : 05 Oct 2010, 09:01 AM
এ লক্ষ্যে গঠিত বিশেষজ্ঞ কমিটি ইতিমধ্যেই সম্ভাব্যতা যাচাইয়ের এক-তৃতীয়াংশ কাজ শেষ করেছে। ২০১২ সালের প্রথমার্ধে এ সমীক্ষা শেষ হবে। সমীক্ষা প্রতিবেদনের ভিত্তিতে একই বছর এপ্রিলের মধ্যে ব্যারেজ নির্মাণের মূল কাজের দরপত্র আহ্বান করা হবে।
২০১২ সালের ডিসেম্বরের মধ্যেই প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা এ নির্মাণ কাজের উদ্বোধন করবেন।
পানিসম্পদ মন্ত্রী রমেশ চন্দ্র সেন সোমবার সচিবালয়ে পানিসম্পদ মন্ত্রণালয়ের সভাকক্ষে অনুষ্ঠিত গঙ্গা ব্যারেজ প্রকল্পের অগ্রগতি পর্যালোচনা সভা শেষে সাংবাদিকদের একথা জানান।
পানিসম্পদ প্রতিমন্ত্রী মাহবুবুর রহমান ও মন্ত্রণালয়ের সচিব শেখ ওয়াহিদ উজ জামানসহ সংশ্লিষ্ট কর্মকর্তারা এ সময় উপস্থিত ছিলেন।
মন্ত্রী রমেশ চন্দ্র সেন জানান, গঙ্গা ব্যারেজ প্রকল্পের সমীক্ষার কাজ আগামী দু'মাসের মধ্যে পঞ্চাশ শতাংশে পৌঁছবে। এ গতিতে কাজ চললে ২০১২ সালের প্রথম দিকেই সমীক্ষা প্রতিবেদন মন্ত্রণালয়ে আসবে। ফলে এপ্রিলের মধ্যেই দরপত্র আহ্বান করা সম্ভব হবে।
প্রকল্প ব্যয় প্রসঙ্গে তিনি জানান, গঙ্গা ব্যারেজ প্রকল্প হবে একটি বহুমুখী প্রকল্প। প্রকল্পটি বাস্তবায়নে প্রাথমিকভাবে সম্ভাব্য ব্যয় ধরা হয়েছে ১২ হাজার কোটি টাকা। পুরো প্রকল্পের কাজ শেষ করতে ১০ বছর সময় লাগবে। তবে মূল ব্যারেজের কাজ শেষ করতে সময় লাগবে মাত্র তিন বছর।
সরকার নিজস্ব অর্থ থেকে এ কাজ শুরু করবে। তবে একইসঙ্গে এ কাজে অর্থায়নের জন্য দাতা সংস্থা বা দেশও খোঁজা হবে। দাতা সংস্থার কাছে থেকে অর্থ সহায়তার কাজটি দ্রুত সম্পন্ন করা সম্ভব হবে বলে তিনি জানান।
রমেশ চন্দ্র সেন বলেন, "দেশের দক্ষিণ পশ্চিমাঞ্চলের মানুষ পদ্মা নদীর পানির ওপর নির্ভরশীল। বর্ষা মৌসুমে আসা পদ্মার পানি এবং বৃষ্টির পানি ধরে রেখে এ অঞ্চলের ১৯ জেলায় সেচ সুবিধা দেওয়া ও মরুকরণ রোধে এ প্রকল্প নেওয়া হয়েছে। এতে এলাকার ১৯ লাখ হেক্টর কৃষি জমিতে সেচ সুবিধা দেওয়া সম্ভব হবে।
মন্ত্রী জানান, এ প্রকল্পের মাধ্যমে বর্ষায় আসা ভূ-উপরিস্থ পানি ধরে রাখা সম্ভব হবে। এতে মাটির তলদেশ থেকে পানি তোলার কারণে সৃষ্ট মরুকরণ প্রক্রিয়া থেকে দেশকে রক্ষা করা যাবে। এছাড়া মৎস্য সম্পদ সংরক্ষণ ও প্রসার, গঙ্গা নির্ভর নদ-নদীর পানি প্রবাহ ও নাব্যতা বৃদ্ধি এবং পরিবেশগত ভারসাম্য উন্নয়ন হবে।
গঙ্গা ব্যারেজ প্রকল্প বাস্তবায়িত হলে ১৬০ মেগাওয়াট জলবিদ্যুৎ উৎপাদন সম্ভব হবে বলে তিনি জানান।