যুদ্ধাপরাধী আজহার-কায়সারের আপিল কার্যতালিকায়

যুদ্ধাপরাধের মামলায় দণ্ডিত জামায়াতে ইসলামীর সহকারী সেক্রেটারি জেনারেল এ টি এম আজহারুল ইসলাম এবং সাবেক প্রতিমন্ত্রী সৈয়দ মোহাম্মদ কায়সারের আপিল গ্রহণ হবে কি না, রোববার সে আদেশ আসবে।

নিজস্ব প্রতিবেদকবিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকম
Published : 12 August 2017, 08:46 AM
Updated : 12 August 2017, 12:48 PM

প্রধান বিচারপতির নেতৃত্বাধীন আপিল বেঞ্চের রোববারের কার্যতালিকায় মামলা দুটি ২ ও ৩ নম্বর ক্রমিকে রয়েছে। এই বেঞ্চের অন্য দুই বিচারক হলেন বিচারপতি মো. সৈয়দ মাহমুদ হোসেন ও বিচারপতি মির্জা হোসেইন হায়দার।

আপিল বিভাগে গত বছরের ৮ মার্চ মীর কাসেম আলীর আপিলের রায় হয়েছিল। ১৬ মাস পর আরও দুটি আপিল একই সঙ্গে একই দিনে তালিকায় উঠল।

তবে এর মধ্যে চলতি বছরের ১৫ মে জামায়াত নেতা দেলাওয়ার হোসাইন সাঈদীর রিভিউ নিষ্পত্তি করেছে আপিল বিভাগ।

যুদ্ধাপরাধ মামলায় এখন পর্যন্ত সাতটি আপিলের রায় ঘোষণা হয়েছে আপিল বিভাগে। 

প্রায় তিন বছর আগে ২০১৪ সালের ৩০ ডিসেম্বর আন্তর্জাতিক অপরধ ট্রাইব্যুনাল-১ একাত্তরে রংপুর জেলা আলবদর বাহিনীর কমান্ডার আজহারকে ফাঁসিতে ঝুলিয়ে মৃত্যুদণ্ডাদেশের পাশাপাশি ৩০ বছরের কারাদণ্ডাদেশ দিয়েছিল।

একাত্তরে মুক্তিুদ্ধ চলাকালে রংপুর অঞ্চলে ১ হাজার ২৫৬ জনকে গণহত্যা-হত্যা, ১৭ জনকে অপহরণ, একজনকে ধর্ষণ, ১৩ জনকে আটক, নির্যাতন ও গুরুতর জখম এবং শত শত বাড়ি-ঘরে লুণ্ঠন ও অগ্নিসংযোগের মতো ৯ ধরনের ৬টি মানবতাবিরোধী অপরাধের মধ্যে পাঁচটি এবং পরিকল্পনা-ষড়যন্ত্রের মাধ্যমে সুপিরিয়র রেসপনসিবিলিটি (উর্ধ্বতন নেতৃত্বের দায়) প্রমাণিত হয় তার বিরুদ্ধে।

ট্রাইব্যুনালের এ রায়ের বিরুদ্ধে ২০১৫ সালের ২৮ জানুয়ারি খালাস চেয়ে আপিল করেন এই জামায়াত নেতা।

মুক্তিযুদ্ধের সময় ব্রাহ্মণবাড়িয়া ও হবিগঞ্জে হত্যা, গণহত্যা, ধর্ষণের মতো যুদ্ধাপরাধের দায়ে সৈয়দ কায়সারকে ২০১৫ সলের ২৩ ডিসেম্বর মৃত্যুদণ্ড দেয় আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনাল-২।

১৯৭১ সালে দখলদার পাকিস্তানি সেনাবাহিনীর সহযোগিতায় ‘কায়সার বাহিনী’ গঠন করে ওই দুই জেলায় যুদ্ধাপরাধে নেতৃত্ব দেন এই মুসলিম লীগ নেতা। জিয়াউর রহমানের আমলে তিনি হয়ে যান বিএনপির লোক, হুসেইন মুহাম্মদ এরশাদের সময় জাতীয় পার্টির।

৪৮৪ পৃষ্ঠার রায়ের সংক্ষিপ্তসার পড়ে বিচারক বলেন, সৈয়দ কায়সারের বিরুদ্ধে প্রসিকিউশনের আনা ১৬টি অভিযোগের মধ্যে ১৪টি সন্দেহাতীতভাবে প্রমাণিত হয়।

তাকে প্রাণদণ্ড দেওয়া হয় ৩, ৫, ৬, ৮, ১০, ১২ ও ১৬ নম্বর অভিযোগে, যার মধ্যে দুই নারীকে ধর্ষণের ঘটনা রয়েছে।  এই দুই বীরাঙ্গনার মধ্যে একজন এবং তার গর্ভে জন্ম নেওয়া এক যুদ্ধশিশু এ মামলায় সাক্ষ্যও দিয়েছেন।

২০১৫ সালের ১৯ জানুয়ারি আপিল করেন সৈয়দ কায়সার।