রেজিস্ট্রার্ড গ্র্যাজুয়েট প্রতিনিধি নির্ধারণ না করে উপাচার্য প্যানেল নির্বাচনের জন্য ডাকা ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় সিনেটের সভা স্থগিত করেছে আদালত।
Published : 24 Jul 2017, 05:43 PM
আগামী ২৯ জুলাই ডাকা ওই সভা কেন আইনগত কর্তৃত্ব বহির্ভূত এবং সভা আহ্বান করে দেওয়া নোটিস কেন বেআইনি ঘোষণা করা হবে না, তা জানতে চেয়ে রুলও দিয়েছে হাই কোর্ট।
১৫ জন রেজিস্ট্রার্ড গ্র্যাজুয়েটের করা একটি আবেদনে সোমবার বিচারপতি তারিক-উল হাকিম ও বিচারপতি মোহাম্মদ ফারুকের বেঞ্চ রুলসহ এ স্থগিতাদেশ দেয়।
উপাচার্য নির্বাচনের সভা ডেকে গত ১৬ জুলাই সিনেট সদস্যদের চিঠি দিয়েছিলেন বিশ্ববিদ্যালয়ের নিবন্ধক।
১৯৭৩ এর বিশ্ববিদ্যালয় অধ্যাদেশ অনুযায়ী পরিচালিত ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ে সিনেট সদস্যরা ভোট দিয়ে তিনজনের একটি উপাচার্য প্যানেল ঠিক করেন, তার মধ্য থেকে একজনকে উপাচার্য পদে নিয়োগ দেন বিশ্ববিদ্যালয়ের আচার্য বা রাষ্ট্রপতি।
সিনেটে ছাত্র-শিক্ষকসহ বিভিন্ন অংশের প্রতিনিধিত্ব থাকে। বিশ্ববিদ্যালয়ের গ্র্যাজুয়েটদের মধ্য থেকেও ২৫ জন প্রতিনিধি এই সিনেটে থাকেন।
রেজিস্ট্রার্ড গ্র্যাজুয়েট প্রতিনিধি নির্ধারণ বা নির্বাচন না করেই সিনেট সভা ডাকায় তাতে আপত্তি জানিয়ে আদালতে রিট আবেদনটি হয়েছিল।
সভায় স্থগিতাদেশ এবং রুলের পাশাপাশি হাই কোর্ট বিশ্ববিদ্যালয় অধ্যাদেশের ২০ (১) ধারা অনুযায়ী সিনেট গঠনের নির্দেশও দিয়েছে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসনকে।
উপাচার্য অধ্যাপক আ আ ম স আরেফিন সিদ্দিক, প্রো ভিসি (শিক্ষা), প্রো ভিসি (প্রশাসন), রেজিস্ট্রার ও শিক্ষা সচিবকে রুলের জবাব দিতে হবে।
রেজিস্ট্রারের চিঠিতে বলা হয়েছিল, বিশ্ববিদ্যালয় অধ্যাদেশে অর্পিত ক্ষমতাবলে উপাচার্য ২৯ জুলাই বিকেল ৪টায় সিনেটের বিশেষ সভা আহ্বান করেছেন।
“ভাইস চ্যান্সেলরের প্যানেলে যাদের নাম অন্তর্ভুক্ত করার জন্য প্রস্তাব করা হবে, নাম প্রস্তাবকালে তাদের লিখিত সম্মতি সিনেট চেয়ারম্যানের নিকট পেশ করতে হবে। উক্ত সভায় উপস্থিত থাকবার জন্য অনুরোধ করছি।”
ওই চিঠি চ্যালেঞ্জ করে আদালতে যান বিশ্ববিদ্যালয়ের অধ্যাপক মো. আব্দুস সামাদ, অধ্যাপক সাদেকা হালিম, অধ্যাপক একেএম গোলাম রব্বানী, অধ্যাপক হারুনুর রশীদ খান, অধ্যাপক সিতেশ চন্দ্র বাচার, অধ্যাপক সৈয়দ মোহাম্মদ শামসুদ্দিন, অধ্যাপক হুমায়ুন আক্তার, অধ্যাপক মো. আসাদুজ্জামান, অধ্যাপক এমরান কবীর চৌধুরী, অধ্যাপক কে এম সাইফুল আলম খান, সহযোগী অধ্যাপক মো. হুমায়ন কবির, সহকারী অধ্যাপক মো. আব্দুর রহিম, রেজিস্ট্রার্ড গ্র্যাজুয়েট ঢাকার এ কে এম আতিকুর রহমান, ফরিদপুরের আব্দুল জব্বার মিয়া ও বরিশালের আনোয়ার হোসেন।
আদালতে বিশ্ববিদ্যালয়ের পক্ষে শুনানি করেন আইনজীবী এ এস এম মেজবাহ উদ্দিন আহমেদ। আবেদনকারীদের পক্ষে শুনানি করেন ব্যারিস্টার রোকনউদ্দিন মাহমুদ ও মোস্তাফিজুর রহমান। রাষ্ট্রপক্ষে ছিলেন ডেপুটি অ্যাটর্নি জেনারেল আমাতুল করিম।
ডেপুটি অ্যাটর্নি জেনারেল আমাতুল করিম বিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকমকে বলেন, “আবেদনকারীদের দাবি নিবন্ধিত গ্র্যাজুয়েটদের অনেক পদ খালি। তাই এ নির্বাচন না দিয়ে, সিনেট ডেকে উপাচার্য প্যানেল মনোনয়ন করা ঠিক নয়। এ কারণে ওই চিঠির বৈধতা চ্যালেঞ্জ করে ১৫ জন হাই কোর্টে রিট করেন।”