গুলশান হামলায় প্রত্যক্ষ-পরোক্ষ সংশ্লিষ্টতার বিষয়ে নব্য জেএমবির অন্যতম শীর্ষ নেতা সোহেল মাহফুজ জিজ্ঞাসাবাদে ‘অনেক তথ্য দিয়েছে’ জানিয়ে ঢাকার পুলিশ কমিশনার আছাদুজ্জামান মিয়া বলেছেন, শিগগিরই তারা আদালতে এ মামলার অভিযোগপত্র দেবেন।
Published : 19 Jul 2017, 02:45 PM
বুধবার নিজের কার্যালয়ে তিনি সাংবাদিকদের বলেন, “আমাদের কাছে ময়নাতদন্ত প্রতিবেদন ছিল না এতদিন। ফরেনসিক রিপোর্ট ছিল না। আমরা সম্প্রতি ফরেনসিক রিপোর্ট পেয়েছি। এখন মামলা চূড়ান্ত পর্যায়ে।
২০১৬ সালের ১ জুলাই রাতে কূটনীতিক পাড়া গুলিশানের হলি আর্টিজান বেকারিতে হামলা চালিয়ে ১৭ বিদেশিসহ ২০ জনকে হত্যা করে জঙ্গিরা। তাদের ঠেকাতে গিয়ে দুই পুলিশ কর্মকর্তাও নিহত হন।
ওই ঘটনায় গুলশান থানায় সন্ত্রাসবিরোধী আইন, হত্যাকাণ্ড ও তথ্য গোপনের অভিযোগে তিনটি মামলা করে পুলিশ।
এরপর গত এক বছরে আদালতের কাছ থেকে আটবার সময় নিয়েও পুলিশ তদন্ত প্রতিবেদন দিতে পারেনি।
ওই হামলার বর্ষপূর্তির সময় তদন্তকারীরা বলেছিলেন, কয়েকজন সন্দেহভাজন জঙ্গি গ্রেপ্তার না হওয়ায় সন্ত্রাসবিরোধী আইনের মামলার তদন্ত আটকে আছে।
এরপর গত ৮ জুলাই চাঁপাইনবাবগঞ্জ থেকে সোহেল মাহফুজকে গ্রেপ্তারের পর কাউন্টার টেররিজম ইউনিটের কর্মকর্তারা বলেন, সোহেলই গুলশান হামলার গ্রেনেড সরবরাহ করেছিলেন।
পুলিশ কমিশনার আছাদুজ্জামান মিয়া বলেন, সোহেল মাহফুজকে রিমান্ডে নিয়ে জিজ্ঞাসাবাদ করে গুলশান হামলায় তার সংশ্লিষ্টতা ও দায়বদ্ধতার বিষয়গুলো নিয়ে বেশ কিছু তথ্য পাওয়া গেছে।
“পূর্বেও আমি বলেছি, আজকেও বলি, দ্রুতই আমরা এই হলি আর্টিজান যে হত্যাকাণ্ড, সেটির চার্জশিট বিজ্ঞ আদালতে দিয়ে দিব প্রকৃত অপরাধীদের বিরুদ্ধে।”
“জিজ্ঞাসাবাদ করে আমরা সঠিক তথ্যই পাচ্ছি।… সন্ত্রাস ও জঙ্গি কার্যক্রম বন্ধ করার জন্য সোহেল মাহফুজের কাছ থেকে পাওয়া তথ্যগুলো অনেক কাজে আসবে।”
সোহেল মাহফুজকে জিজ্ঞাসাবাদের জন্য ভারতের এনআইএ-র একটি দল আসার খবর এসেছে কিছু গণমাধ্যমে। তবে তেমন কোন দল এখনও বাংলাদেশে আসেনি বলে জানিয়েছেন ডিএমপি কমিশনার।
তিনি বলেন, “বর্ধমানে একটি বোমা বিস্ফোরণের ঘটনা ঘটেছিল। সেই ঘটনায় যদি অন্য কোন সংস্থা তাকে জিজ্ঞাসাবাদ করতে চায়, তাতে আদালতের অনুমতি লাগবে। আদালতের অনুমতি ছাড়া এ ধরনের জিজ্ঞাসাবাদের সুযোগ নেই। আমার জানামতে এনআইএ-র কোনো প্রতিনিধি আসেনি বা জিজ্ঞাসাবাদও করেনি।”
ঢাকা মহানগর পুলিশের জন্য ডাচ-বাংলা ব্যাংকের দেওয়া দুটি গাড়ি হস্তান্তর অনুষ্ঠান শেষে সাংবাদিকদের সঙ্গে গুলশান হামলার তদন্ত নিয়ে কথা বলেন ডিএমপি কমিশনার।
এক প্রশ্নের জবাবে তিনি জানান, উল্টোপথে গাড়ি নেওয়াকে কেন্দ্র করে ট্রাফিক সার্জেন্টকে মারধরের ঘটনায় জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীদের বিরুদ্ধে করা নিয়মিত মামলা চলবে।