ঢাকার বানানীতে জন্মদিনের কথা বলে বাসায় নিয়ে এক অভিনেত্রীকে ধর্ষণের মামলার একমাত্র আসামি বাহাউদ্দিন ইভানের জামিন নাকচ করে দিয়েছে ঢাকার একটি আদালত।
Published : 13 Jul 2017, 05:48 PM
বৃহস্পতিবার জামিন আবেদনের ওপর আসামি ও রাষ্ট্রপক্ষের বক্তব্য শুনে ঢাকা মহানগর হাকিম সুব্রত ঘোষ শুভ আবেদন নাকচ করে দেন।
ইভানের পক্ষে শুনানি করেন আইনজীবী মোহাম্মদ ফারুক। রাষ্ট্রপক্ষে জামিনের বিরোধিতা করেন আদালত পুলিশের সাধারণ নিবন্ধন কর্মকর্তা এসআই আব্দুল মান্নান।
শুনানিতে ইভানের আইনজীবী মোহাম্মদ ফারুক বলেন, “ইভানের সঙ্গে বাদীর ১১ মাস আগে ফেইসবুকে পরিচয়। আর তাদের চার মাসের প্রেম। বাদী বিবাহিত। রাত সাড়ে ১০টার সময় তিনি আসামির বাসায় এলেন কেন?”
তিসি আরো বলেন, “বাদী বলেছেন, ইতিপূর্বে বিয়ের প্রলোভন দেখিয়ে তাকে ধর্ষণ করেছেন ইভান। আগে ধর্ষণ করলে নেশা জাতীয় দ্রব্য সেবন করিয়ে ধর্ষণ করবেন কেন? এটি সাজানো মামলা। তাকে ফাঁসানো হয়েছে। আমরা তার জামিন মঞ্জুরের প্রার্থনা করছি।”
জামিনের বিরোধিতা করে আব্দুল মান্নান বলেন, “অভিযোগ সুনির্দিষ্ট। দোষ স্বীকারোক্তির বিচারিক জবানবন্দি রয়েছে। মামলা তদন্তাধীন।এ মূহূর্তে তাকে জামিন দেওয়া ঠিক হবে না।”
গত ৬ জুলাই বিকেলে র্যাব-১ ও ১১ এর যৌথ অভিযানে নারায়ণগঞ্জ থেকে ইভানকে গ্রেপ্তার করা হয়। এর পরদিন তার ৪ দিনের রিমান্ড মঞ্জুর করেন আদালত। ৪ দিনের রিমান্ড শেষে বৃহস্পতিবার ইভান আদালতে স্বীকারোক্তিমূলক জবানবন্দি দিয়েছেন।
আপন জুয়েলার্সের মালিকের ছেলের বিরুদ্ধে একই ধরনের অভিযোগ নিয়ে তোলাপাড়ের দুই মাসের মধ্যে গত বুধবার এক তরুণী বনানী থানায় মামলা করার পর ইভানের খোঁজে নামে আইনশৃঙ্খলা বাহিনী।
পরদিন বৃহস্পতিবার নারায়ণঞ্জের মাসদাইরের পূর্ব দেওভোগ এলাকা থেকে তাকে গ্রেপ্তার করে র্যাব।
ইভান ব্যবসায়ী বোরহানউদ্দিনের ছেলে। বনানীতে এই ব্যবসায়ীর একটি বিপণি বিতান রয়েছে।
গত মঙ্গলবার রাতে ইভান বনানী ২ নম্বর সড়কে নিজের বাসায় ডেকে নিয়ে পূর্ব পরিচিত ওই তরুণীকে ধর্ষণ করেন বলে মামলায় অভিযোগ করা হয়েছে।
মামলার এজহারে ওই তরুণী বলেন, ফেইসবুকের সূত্র ধরে ইভানের সঙ্গে তার পরিচয় এবং গত চার মাস ধরে তাদের প্রেমের সম্পর্ক গড়ে উঠেছিল।
গত মঙ্গলবার (৪ জুলাই) রাত ৯টায় ইভান ফোন করে তার জন্মদিনের কথা বলে বাসায় ডেকে নিয়েছিল বলে ওই তরুণী জানান। ফোনে ইভান তার মা পরিচয় দিয়ে একজনের সঙ্গে কথাও বলিয়ে দিয়েছিলেন।
ওই তরুণী বলেন, রাত সাড়ে ১০টায় রিকশায় করে ইভানের বাসায় গিয়ে কাউকে দেখতে পাননি তিনি। তখন ইভান তাকে বলছিলেন, ‘বাবা-মা অসুস্থ ঘুমিয়ে গেছে, চেঁচামেচি করা যাবে না’।
ওই তরুণী বলেছেন, ইভানের বাসায় যাওয়ার পর জন্মদিনের অনুষ্ঠানের কোনো নমুনা তিনি দেখতে পাননি।
পরে ইভান তাকে জোর করে নেশাজাতীয় পানীয় পান করানোর পর ধর্ষণ করেন। এরপর তিনি চিৎকার করলে ইভান তার ব্যাগ রেখে তাকে বাসা থেকে বের করে দেন রাত সাড়ে ৩টার দিকে।
এজাহারে তরুণী আরও দাবি করেছেন, বিয়ের প্রলোভন দেখিয়ে ইভান তাকে এর আগেও ধর্ষণ করেছিল এবং তার ভিডিও করে তা ইন্টারনেটে ছড়িয়ে দেওয়ার হুমকিও দিয়েছিল।