রাঙ্গামাটির লংগদু উপজেলায় পাহাড়িদের বাড়িঘরে আগুন দেওয়ার ঘটনায় বিচার বিভাগীয় তদন্তের দাবি করেছেন স্থানীয় সংসদ সদস্য ঊষাতন তালুকদার।
Published : 05 Jun 2017, 11:03 PM
লংগদু সদর ইউনিয়ন যুবলীগের এক নেতার লাশ উদ্ধারের পর আয়োজিত এক বিক্ষোভ মিছিল থেকে গত ২ জুন উপজেলা সদরের কয়েকটি এলাকার পাহাড়িদের দুই শতাধিক বাড়িঘরে আগুন দেওয়ার অভিযোগ রয়েছে।
ঘটনার দুইদিন পর সোমবার সংসদে পয়েন্ট অফ অর্ডারে পাহাড়িদের নিরাপত্তাহীনতা দূর করতে ওই এলাকায় সংসদীয় দলের সফরের কথা বলেন সাংসদ ঊষাতন তালুকদার।
তিনি বলেন, “লংগদুদের নিহতের ঘটনার সেন্টিমেন্টকে পুজি করে দুর্বৃত্তরা মিছিলের মাঝে ঘাপটি মেরে থেকে পূর্বপরিকল্পিতভাবে পাহাড়িদের গ্রামে আগুন ধরিয়ে দিয়েছে। ২২০টির বেশি ঘরবাড়িতে আগুন ধরিয়ে দিয়েছে। দোকানে আগুন দেওয়া হয়েছে। এখনো লোকজন আশ্বস্ত হতে পারছে না। তারা চরম নিরাপত্তাহীনতার মধ্যে বৃষ্টি বাদলের দিনে বনে বাদাড়ে অবস্থান করছে।
“এরা (দুর্বৃত্তরা) যাতে কোনো অবস্থাতে সন্ত্রাসী কর্মকাণ্ড করে অস্থিতিশীল পরিস্থিতি সৃষ্টি করে সরকারের ভাবমূর্তি ক্ষুন্ন করতে না পারে তার জন্য বিচার বিভাগীয় তদন্ত দাবি করছি।”
গত ১ জুন খাগড়াছড়ি-দীঘিনালা সড়কের চার মাইল এলাকা থেকে ভাড়ায় মোটর সাইকেল চালানোর কাজ করা যুবলীগের লংগদু সদর ইউনিয়ন শাখার সাংগঠনিক সম্পাদক নূরুল ইসলাম নয়নের লাশ উদ্ধার করা হয়।
পরের দিন শুক্রবার সকালে লাশ নিয়ে লংগদু সদরে বিক্ষোভ-মিছিল বের হয়। মিছিল থেকে পাহাড়িদের বাড়িঘরে ইট-পাটকেল নিক্ষেপের পর এক পর্যায়ে স্থানীয় তিনটিলা পাড়া, বাত্যাপাড়া, মানিকজুড়, বড়দম এলাকার পাহাড়িদের ঘরবাড়ি-দোকানপাটে আগুন দেওয়া হয়।
এতে ক্ষতিগ্রস্তদের যথাযথ পুনর্বাসন ও তাদের মাঝে খাদ্য সরবরাহের দাবি জানিয়ে স্থানীয় সংসদ সদস্য ঊষাতন তালুকদার বলেন, “বার বার এ ধরনের ঘটনা ঘটার মূল কারণ হল পার্বত্য চুক্তি পুরোপুরি বাস্তবায়ন না হওয়া।
“আইনশৃঙ্খলা ও সাধারণ প্রশাসন জেলা পরিষদের হাতে হস্তান্তরসহ চুক্তি অচিরেই পুরোপুরি বাস্তবায়ন করতে হবে। এগুলো করা হলে ওই এলাকায় স্থায়ী শান্তি ফিরে আসবে।”
দুর্বৃত্তরা সরকারের ভাবমূর্তি ক্ষুণ্ন ও এলাকায় অস্থিতিশীলতা সৃষ্টির জন্য এসব ঘটনা ঘটিয়েছে মন্তব্য করে এই সংসদ সদস্য বলেন, “যারা সন্ত্রাসী কর্মকাণ্ড চালিয়ে দেশকে অস্থিতিশীল করতে চায় এদের বিরুদ্ধে জিরো টলারেন্স দেখাতে হবে। এদের প্রতিহত করতে হবে।”
ঊষাতন তালুকদারের সঙ্গে একমত পোষণ করে বিএনএফের আবুল কালাম আজাদ বলেন, “বেশ কিছুদিন ধরে পার্বত্য চট্টগ্রাম চুক্তি ও ভূমি আইন নিয়ে পাহাড়ে অসন্তোষ বিরাজ করছে। সেখানে বাঙালি ও পাহাড়িদের মধ্যে বৈষম্য দেখা যায়। বিভিন্ন সংগঠনের মধ্যে বিরোধ রয়েছে। এগুলো নিরসনের জন্য সংসদীয় তদন্ত কমিটি হওয়া দরকার।”