‘চারুকলা শিক্ষা বাদ দেওয়া সাম্প্রদায়িক ষড়যন্ত্র’

স্কুল পর্যায়ে চারুকলা শিক্ষা ‘বাদ দেওয়ার চেষ্টাকে’ মুক্তিযুদ্ধের চেতনার বিরুদ্ধে ‘সাম্প্রদায়িক ষড়যন্ত্র’ বলে মনে করছে চারু শিল্পীদের সংগঠন বাংলাদেশ চারুশিল্পী সংসদ।

নিজস্ব প্রতিবেদকবিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকম
Published : 27 May 2017, 07:49 PM
Updated : 27 May 2017, 07:49 PM

চারুকলার পাশাপাশি সঙ্গীত, নাট্যকলা ও আবৃত্তি বিষয়গুলোকে পাঠ্যসূচিতে বাধ্যতামূলক করার দাবি জানিয়ে একটি বিবৃতি দিয়েছে সংগঠনটি।

জাতীয় শিক্ষাক্রম সমন্বয় কমিটির (এনসিসিসি) মার্চ মাসের এক সভায় সিদ্ধান্ত হয়, জেএসসি ও জেডিসি পরীক্ষায় শারীরিক শিক্ষা ও স্বাস্থ্য, চারু ও কারুকলা এবং কর্ম ও জীবনমুখী শিক্ষা বিষয়ে পরীক্ষা কেন্দ্রীয়ভাবে আর নেওয়া হবে না। ধারবাহিক মূল্যায়নের মাধ্যমে শিক্ষার্থীদের মান যাচাই হবে। ধারাবাহিক মূল্যায়নে প্রাপ্ত নম্বর শিক্ষার্থীর গ্রেড নির্ধারণে প্রযোজ্য হবে না।

এই সিদ্ধান্তকে ‘আত্মঘাতী’ দাবি করে বিবৃতিতে বলা হয়, এ সিদ্ধান্ত চারুকলা বিষয়টি দেশের শিক্ষা ব্যবস্থা থেকে তুলে দেওয়া বা এই শিক্ষা ব্যবস্থা বন্ধ করে দেওয়ারই নামান্তর।

“এক দিকে সরকার সৃজনশীল শিক্ষার উপর গুরুত্ব দেওয়ার কথা বলছে, অন্যদিকে জাতীয় শিক্ষাক্রম কমিটি চারুকলার মতো সৃজনশীল বিষয়কে অপসারণের সিদ্ধান্ত নিয়েছে।

“আবার শিক্ষা অধিদপ্তর সব শিক্ষা প্রতিষ্ঠানে মঙ্গল শোভাযাত্রা আয়োজনের নির্দেশ দিয়েছে, অন্যদিকে এই আয়োজনের কুশীলবদের হাত নিস্ক্রিয় করে দেওয়ার সিদ্ধান্ত নিয়েছে।এই সিদ্ধান্তের কারণে প্রতিটি প্রতিষ্ঠানে বন্ধ হবে শিশু চিত্রাঙ্কন, প্রাতিষ্ঠানিকভাবে তারা ছবি আঁকতে পারবে না।”

চারু শিল্পকে বিজ্ঞানসম্মত মনস্তাত্ত্বিক বিষয় উল্লেখ করে বিবৃতিতে আরও বলা হয়, যে শিশু ছবি আঁকে তার মধ্যে পরিমিতি, নান্দনিকতা ও শৃঙ্খলাবোধ জেগে উঠে।

“অন্যান্য বিষয়গুলো যখন শিশুমনে একঘেঁয়েমির জন্ম দেয়, তখন চারুকলার ক্লাস সেই একঘেঁয়েমি থেকে মুক্তি দেয়।”

জাতীয় স্বার্থে সিদ্ধান্ত পরিবর্তন করে চারুকলা শিক্ষাকে আরও ‘ব্যাপকতর’ করার দাবি জানিয়েছে চারুশিল্পী সংসদ।

এছাড়া দেশের বিভিন্ন বিদ্যালয়ে চারুকলা বিষয়ের শূন্য পদগুলোতে পর্যাপ্ত শিক্ষক নিয়োগ করে তাদের এমপিওভুক্তিরও দাবি করেছে সংগঠনটি।

গত নভেম্বরে এক সংবাদ সম্মেলনে শিক্ষামন্ত্রী নুরুল ইসলাম নাহিদ বলেন, পাবলিক পরীক্ষার সময় চাপ কমাতে শিক্ষাবিদরা এক কর্মশালায় বিষয় কমানোর সুপারিশ করেছেন।

এসএসসি পর্যায়ে শারীরিক শিক্ষা, স্বাস্থ‌্য বিজ্ঞান ও খেলাধুলা, চারু ও কারুকলা, এবং ক্যারিয়ার শিক্ষা বিষয়গুলোকে পাবলিক পরীক্ষায় অন্তর্ভুক্ত না করে বিদ্যালয়ে নিচু শ্রেণিতে ধারাবাহিক সেগুলো পড়ানোর সুপারিশ এসেছে ওই কর্মশালায়।

তবে কবে থেকে এসব বিষয় এসএসসি থেকে বাদ যেতে পারে, সে বিষয়ে কিছু জানাননি মন্ত্রী।