সেলিম ওসমানের জামিন, অভিযোগ গঠন ৪ জুলাই

নারায়ণগঞ্জের শিক্ষক শ্যামল কান্তি ভক্তকে লাঞ্ছনার মামলায় জামিন পেয়েছেন সাংসদ এ কে এম সেলিম ওসমান।

আদালত প্রতিবেদকবিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকম
Published : 23 May 2017, 05:59 AM
Updated : 23 May 2017, 05:59 AM

মঙ্গলবার তার জামিন মঞ্জুর করে এ মামলায় অভিযোগ গঠনের শুনানির জন্য আগামী ৪ জুলাই দিন ঠিক করে দিয়েছেন ঢাকার মুখ্য বিচারিক হাকিম জেসমিন আরা।

নারায়ণগঞ্জের প্রভাবশালী ওসমান পরিবারের সদস্য সেলিম হাই কোর্ট থেকে ১৫ দিনের জামিন পেয়েছিলেন। ওই জামিনের মেয়াদ শেষ হওয়ার আগেই গত ১৪ মে তিনি ঢাকার হাকিম আদালতে আত্মসমর্পণ করে জামিনের আবেদন করেন। 

মুখ্য বিচারিক হাকিম জেসমিন আরা সেদিন জামিন শুনানির জন্য ২৩ মে দিন ঠিক করে দিয়েছিলেন।

এর ধারাবাহিকতায় সেলিম ওসমান মঙ্গলবার আবারও আদালতে আসেন এবং বিচারক তার জামিন মঞ্জুর করেন বলে এ আদালতে রাষ্ট্রপক্ষের কৌসুঁলি আনোয়ারুল কবির বাবুল জানান।

আসামি সেলিমের পক্ষে জামিন শুনানি করেন তার আইনজীবী কাজী নজিবুল্লা হিরু ও সিদ্দিকুর রহমান।

ধর্ম অবমাননার অভিযোগ তুলে গত বছরের ১৩ মে নারায়ণগঞ্জের পিয়ার সাত্তার লতিফ উচ্চ বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক শ্যামল কান্তিকে তারই স্কুলের প্রাঙ্গণে লাঞ্ছিত করা হয়।

ওই ঘটনার ভিডিওতে প্রধান শিক্ষককে কান ধরে উঠ-বসের নির্দেশ দিতে দেখা যায় স্থানীয় সংসদ সদস্য সেলিম ওসমানকে।

বিষয়টি প্রকাশের পর সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে প্রতিবাদের ঝড় ওঠে। কিন্তু ওই ঘটনায় নারায়ণগঞ্জের বন্দর থানায় একটি সাধারণ ডায়েরি হলে ‘লাঞ্ছনার প্রমাণ পাওয়া যায়নি’ বলে আদালতে প্রতিবেদন দেয় পুলিশ।

পুলিশ প্রকৃত দোষীদের চিহ্নিত করতে ব্যর্থ হয়েছে বলে হাই কোর্ট এরপর পুরো ঘটনার বিচারিক তদন্তের নির্দেশ দেয়। ঢাকার মুখ্য মহানগর হাকিম শেখ হাফিজুর রহমানের নেতৃত্বে একটি তদন্ত কমিটি হয় এবং ওই কমিটি গত ১৯ জানুয়ারি হাই কোর্টে তাদের প্রতিবেদন দাখিল করে।

এরপর ২২ জানুয়ারি বিচারপতি মঈনুল ইসলাম চৌধুরী ও বিচারপতি এ জে বি এম হাসানের হাই কোর্ট বেঞ্চ ওই তদন্ত প্রতিবেদন গ্রহণ করে জিডিসহ বিচারিক নথিপত্র অবিলম্বে ঢাকায় পাঠাতে নির্দেশ দেয়।

হাই কোর্টের আদেশে বলা হয়, “আইন-শৃঙ্খলা বাহিনীর দায়িত্ব হচ্ছে দেশের আইন নিরপেক্ষ ও বৈষম্য ছাড়া প্রয়োগ করা। কেউ আইন নিজের হাতে তুলে নিতে পারেন না। কেউ আইনের ঊর্ধ্বে নন, সবাই আইনের অধীন। এটি আইনের শাসনের মর্মবাণী। বিচার বিভাগীয় তদন্ত প্রতিবেদনের ভিত্তিতে আমরা ওই ঘটনার প্রাথমিক সত্যতা পেয়েছি। বিচারের স্বার্থে এটি যথাযথ বলে প্রতীয়মান হয়।”

দোষীদের বিরুদ্ধে নালিশি মামলা করার জন্য জিডিসহ বিচারিক নথিপত্র গত ২৮ ফেব্রুয়ারি বিচারক জেসমিন আরার কাছে পৌঁছালে সেলিম ওসমান ও অপুকে তলব করেন বিচারক।

এ আদালতে রাষ্ট্রপক্ষের কৌসুঁলি আনোয়ারুল কবির বাবুল জানান, এ মামলায় সেলিম ওসমানের বিচার চলবে কি না, সে বিষয়ে আগামী ৪ জুলাই আদালতের সিদ্ধান্ত জানা যাবে।