ভিআইপিদের নামে ভুয়া ফেইসবুক পেইজ বন্ধ হচ্ছে ‘শিগগিরই’

দেশের অতি গুরুত্বপূর্ণ ব্যক্তি (ভিআইপি) এবং সংসদ সদস্যদের নামে খোলা ভুয়া ‘ফেইসবুক পেইজগুলো’ শিগগিরই বন্ধ করে দেওয়া হবে বলে জানিয়েছেন ডাক ও টেলিযোগাযোগ প্রতিমন্ত্রী তারানা হালিম।

তিনি জানিয়েছেন, গত ৩০ মার্চ সিঙ্গাপুরে ফেইসবুক কর্মকর্তাদের সঙ্গে তার যে বৈঠক হয়েছিল, তারপর ডাক ও টেলিযোগাযোগ মন্ত্রণালয় এ বিষয়ে কাজ শুরু করেছে।

সোমবার ডাক ও টেলিযোগাযোগ বিভাগে এক সংবাদ সম্মেলনে প্রতিমন্ত্রী বলেন, “জাতীয় সংসদের সব সদস্যের ফেইসবুক পেইজ ‘ভেরিফায়েড’ করে দেবে বলে জানিয়েছে ফেইসবুক। স্পিকারকে চিঠি লিখছি, সংসদ সদস্যদের যে পেইজটি ‘ভেরিফায়েড’ করা হবে তার ইউআরএল পাঠিয়ে দিতে।”

সংসদ সদস্য ও ভিআইপিদের পেইজগুলো ‘ভেরিফায়েড’ হয়ে গেলে তাদের নামে থাকা অন্য পেইজগুলো ‘ভুয়া হিসেবে’ চিহ্নিত হবে বলে মন্তব্য করেন তারানা।

তিনি বলেন, “সাধারণভাবে ভুয়া আইডির বিষয়ে অভিযোগ করা হলে ফেইসবুক আসল আইডির তথ্য চায়, পাসপোর্ট বা পরিচয়পত্র যাচাই করে আসলটি চিহ্নিত করে ।

“ভিআইপিদের নামে অনেক ফেইসবুক পেইজ রয়েছে, যা ফেইক। এগুলোর ইউআরএল পাঠানোর সঙ্গে সঙ্গে বন্ধ করে দেবে ফেইসবুক। আমরা এটি প্রস্তুতও করেছি এবং শিগগিরই তা পাঠাব।”

তিনি বলেন, সমালোচনা ও ব্যাঙ্গাত্মক লেখাকে ফেইসবুক ‘মত প্রকাশের স্বাধীনতা’ বলে মনে করলেও ‘বুলিং’ বা মানহানিকর বিষয়ে দ্রুত সাড়া দেওয়ার জন্য বাংলাদেশের পক্ষ থেকে অনুরোধ করা হয়েছে।

“কারণ এগুলো এক সময় এমন ‘ভাইরাল’ হয়ে যায় যে ব্যক্তির মর্যাদা মারাত্মকভাবে ক্ষুণ্ন হয়। তারা বলেছে ইতিবাচক সাড়া দেবে। নারীর প্রতি বিভিন্ন ভিডিও বা পোস্টের মাধ্যমে যে সহিংসতা হয়, সে বিষয়েও ফেইসবুক দৃশ্যমান কর্মসূচি নেবে।”

কোনো নির্দিষ্ট কনটেন্টে আপত্তি জানাতে ফেসবুক পেইজে যে ছক রয়েছে সেখানে নতুন একটি ‘অপশন’ বা সুবিধা যোগ করতে প্রতিষ্ঠানটির কর্মকর্তাদের অনুরোধ জানানো হয়েছে বলে জানান তারানা হালিম।

“আমাদের একটি প্রস্তাব ছিল, কোনো বিষয়ে আপত্তি দেওয়ার সময় ফেইসবুকে একটি ঘর থাকে। সেখানে বলা হয় যে এটি মানহানিকর কিনা বা হেইট স্পিচ কিনা ইত্যাদি।

“এ ঘরের মধ্যে আমরা চাই একটি ছক যুক্ত হবে, ভিকটিমকে বলা হবে তার মানসিক অবস্থা কী, কারণ এ ঘরটি থাকলে ফেইসবুক কর্তৃপক্ষের বুঝতে সুবিধা হবে ওই পোস্টটির কারণে তার মানসিক অবস্থা কী রকম। সেটি যদি এমন হয় আমার আত্মহত্যা করতে ইচ্ছা করছে, তাহলে দ্রুততম সময়ে সেটিতে সাড়া দিয়ে পোস্টটি রিমুভ করবে।”

এর আগে বাংলাদেশ থেকে পাঠানো অভিযোগের ৬৩ থেকে ৬৫ শতাংশ ক্ষেত্রে ফেইসবুক সাড়া দিয়েছে বলে জানান তারানা।

প্রয়োজনের সময় ফেইসবুক কর্তৃপক্ষের সঙ্গে যোগাযোগের জন্য পুলিশ সদরদপ্তর, র‌্যাব, ঢাকা মহানগর পুলিশ (ডিএমপি), পুলিশের বিশেষ শাখা এবং স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয় থেকে একজন করে ‘ফোকাল পয়েন্ট’ (যোগাযোগ সমন্বয়ের জন্য নির্দিষ্ট ব্যক্তি) ঠিক করার বিষয়েও আলোচনা হয়েছে।

ওই ‘ফোকাল পয়েন্টদের’ নাম ঠিক করার পর তা এখন ফেইসবুক কর্তৃপক্ষকে পাঠানোর কাজ চলছে বলে জানান প্রতিমন্ত্রী।

সাংবাদিকদের এক প্রশ্নে তারানা বলেন, “আমরা আশা করি, সমন্বিতভাবে হলে সবাই উপকৃত হবে। আইসিটি বিভাগকে আমরা বিভিন্ন সময়ে বলেছি, এ উদ্যোগগুলো সমন্বিতভাবে করার জন্য। এ নিয়ে অচিরেই আইসিটি প্রতিমন্ত্রীর সঙ্গে কথা বলব।”

অন্যদের মধ্যে টেলিযোগাযোগ সচিব শ্যাম সুন্দর সিকদারসহ মন্ত্রণালয়ের ঊধ্বর্তন কর্মকর্তারা সংবাদ সম্মেলনে উপস্থিত ছিলেন।