শনিবার সন্ধ্যায় এই সংঘর্ষের সময় গুলিবর্ষণের ঘটনা ঘটে বলে প্রত্যক্ষদর্শীরা জানিয়েছেন। পুড়িয়ে দেওয়া হয়েছে কয়েকটি মটরসাইকেল।
সংঘর্ষের পর মধ্যরাত পর্যন্ত কলেজের ছাত্রাবাসগুলোতে তল্লাশি চালিয়ে বেশ কিছু লাঠি ও রাম দা উদ্ধার করা হয় বলে পুলিশের রমনা বিভাগের উপ-কমিশনার মারুফ হোসেন সরদার জানান।
তিনি বিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকমকে বলেন, “সংঘর্ষের ঘটনায় জিজ্ঞাসাবাদের জন্য ১০ থেকে ১২ জনকে আটক করে থানায় আনা হয়েছে।”
প্রত্যক্ষদর্শী ও ছাত্রলীগ নেতারা জানান, আধিপত্য বিস্তারের জন্য কলেজ ছাত্রলীগের আহ্বায়ক নূরে আলম ভূঁইয়া রাজুর অনুসারীরা সন্ধ্যায় একযোগে কলেজের পাঁচটি ছাত্রাবাসে হামলা চালায়।
এ সময় গুলির শব্দে শিক্ষার্থীদের মধ্যে আতঙ্ক ছড়িয়ে পড়ে বলে নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক ঢাকা কলেজের এক শিক্ষার্থী জানান।
তিনি বিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকমকে বলেন, “সংঘর্ষের সময় বেশ কয়েকটি মটরসাইকেলে আগুন দেওয়া হয়। অনেকেই তাৎক্ষণিকভাবে হল ছেড়ে চলে গেছেন।”
হামলাকারীরা উত্তর ছাত্রাবাসে ঘুমন্ত অবস্থায় কলেজ ছাত্রলীগের যুগ্ম আহ্বায়ক শেখ রাসেলকে পিটিয়ে ও ধারালো অস্ত্র দিয়ে কুপিয়ে আহত করে বলে অভিযোগ করেন কমিটির আরেক যুগ্ম আহ্বায়ক মো. হিরন ভূঁইয়া।
তিনি বিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকমকে বলেন, ছাত্রলীগের পুনর্মিলনী উপলক্ষে কলেজ শাখার অপর দুই যুগ্ম আহ্বায়ক রাসেল মাহমুদ ও হুমায়ূন কবির রানাসহ তিনি সন্ধ্যার দিকে কেন্দ্রীয় সভাপতি ও সাধারণ সম্পাদকের সঙ্গে দেখা করতে যান।
“তখন জানতে পারি কলেজ ছাত্রলীগের আহ্বায়ক নূরে আলম ভূঁইয়া রাজু বহিরাগত ২০ থেকে ২৫ জনকে নিয়ে পাঁচটি হলে আক্রমণ করেছে।”
এ বিষয়ে জানতে চাইলে কলেজ ছাত্রলীগ আহ্বায়ক রাজু বিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকমকে বলেন, “ঘটনার সময় আমি কলেজেই ছিলাম না। সাধারণ কিছু ছাত্রের মধ্যে ঝামেলা হয়েছে।
“আমি প্রশাসনের সঙ্গে কথা বলে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণের চেষ্টা করছি।”
নাম প্রকাশ না করার শর্তে ছাত্রলীগের এক নেতা বিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকমকে বলেন, কয়েকদিন আগে নূরে আলম ভূঁইয়া রাজুকে আহ্বায়ক এবং ৩৫ জনকে যুগ্ম আহ্বায়ক করে ঢাকা কলেজ ছাত্রলীগের কমিটি হয়।
“কলেজের পাঁচটি ছাত্রাবাসের নিয়ন্ত্রণ ছয়জন যুগ্ম আহ্বায়কের হাতে থাকায় রাজু অনেকটাই কোণঠাসা ছিলেন।”
ওই ছয় যুগ্ম আহ্বায়ক হলেন- হিরন ভূঁইয়া, রাসেল মাহমুদ, হুমায়ূন কবির রানা, শেখ রাসেল, সুলতান মাহমুদ ও ইমরুল হাসান লেনিন।
পুলিশের তল্লাশির সময় ছয় যুগ্ম আহ্বায়কই হলের বাইরে অবস্থান করছিলেন।
“কেন্দ্রীয় ছাত্রলীগের নেতারা পুলিশের সহায়তা নিয়ে আমাদের হলে উঠতে বলেছেন। হলে এখন পুলিশের তল্লাশি চলছে। আমরা হলে ওঠার জন্য অপেক্ষায় আছি,” সে সময় বলেছিলেন হিরন।
এ বিষয়ে ছাত্রলীগের কেন্দ্রীয় সভাপতি সাইফুর রহমান সোহাগ বিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকমকে বলেন, “শুনেছি বহিরাগত কিছু সন্ত্রাসী কলেজে প্রবেশ করে সাধারণ শিক্ষার্থী ও ছাত্রলীগের নেতাকর্মীদের উপর হামলা করেছে।”
ঘটনাটি খতিয়ে দেখতে তাৎক্ষণিকভাবে কেন্দ্রীয় ছাত্রলীগের সহ-সভাপতি কাজী এনায়েত হোসেনকে ঘটনাস্থলে পাঠানো হয় বলে জানান তিনি।
“সংঘর্ষে ছাত্রলীগের কেউ জড়িত থাকলে কঠোর ব্যবস্থা নেওয়া হবে,” বলেন ছাত্রলীগ সভাপতি।